মানবাধিকার দিবস আজ
১০ ডিসেম্বর ২০১৮ ০৮:৪৪
।। সারাবাংলা ডেস্ক ।।
আজ ১০ ডিসেম্বর বিশ্ব মানবাধিকার দিবস। সারাবিশ্বের মতো বাংলাদেশেও বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে দিবসটি পালন করা হবে।
দিবসটি উপলক্ষে দেশের বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলো। রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ উপলক্ষে আলাদা বাণী দিয়েছেন।
বাণীতে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ নারী, শিশু ও পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীসহ সব নাগরিকের মানবাধিকার রক্ষায় সরকারি-বেসরকারি সংস্থার পাশাপাশি সর্বস্তরের জনগণকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন।
রাষ্ট্রপতি বলেন, মানবাধিকার রক্ষা ও উন্নয়নের লক্ষ্যে ১৯৪৮ সালের ১০ ডিসেম্বর জাতিসংঘ কর্তৃক মানবাধিকারের সর্বজনীন ঘোষণাপত্র গৃহীত হওয়ার পর থেকে প্রতিবছর এইদিন ‘বিশ্ব মানবাধিকার দিবস’ হিসেবে পালিত হয়ে আসছে। বাংলাদেশের সংবিধানে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত সকল মানবাধিকারের নিশ্চয়তা দেওয়া হয়েছে। সরকার মানবাধিকার সুরক্ষা ও উন্নয়নের লক্ষ্যে ২০০৯ সালে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন প্রতিষ্ঠা করেছে। একটি স্বাধীন ও নিরপেক্ষ প্রতিষ্ঠান হিসেবে এ কমিশন মানবাধিকার সুরক্ষায় সক্রিয় ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে। এ বছর বাংলাদেশ তিন বছরের জন্য জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিলের সদস্য নির্বাচিত হয়েছে, যা মানবাধিকার সুরক্ষায় বাংলাদেশের প্রচেষ্টার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি।
রাষ্ট্রপতি বলেন, রাষ্ট্রের পাশাপাশি মানবাধিকারের প্রতি সম্মান প্রদর্শন ও মানবাধিকার সমুন্নত রাখা সকলের দায়িত্ব। আমি আশা করি, মানবাধিকার বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনায় ভুক্তভোগীদের প্রতিকার পাওয়ার পথ সুগম করতে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনসহ সংশ্লিষ্ট সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর আন্তরিক প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার বাণীতে বলেন, সরকারের পাশাপাশি মানবাধিকার সুরক্ষার কাজে নিয়োজিত বেসরকারি ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সংস্থা, উন্নয়ন সহযোগী, গবেষণা প্রতিষ্ঠান, সিভিল সোসাইটি, গণমাধ্যম, মালিক ও শ্রমিক সংগঠনসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে আরও কার্যকর ভূমিকা রাখতে হবে।
পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীসহ সকল মানুষের মানবাধিকার সুরক্ষা, সমানাধিকার, অর্থনৈতিক ক্ষমতা নিশ্চিত করতে সরকার বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প ও কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছেন উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মানবাধিকার উন্নয়ন ও সুরক্ষার অঙ্গীকারের প্রতিফলনস্বরূপ আমরা ২০০৯ সালে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন আইন প্রণয়ন করি। আমাদের সরকার এরই মধ্যে কমিশনকে ৪৮ জন জনবল প্রদান করেছে এবং আরও ৪০ জন জনবল প্রদানের বিষয়টি চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। কমিশনকে আরও শক্তিশালী করতে বাজেটে বরাদ্দ বাড়ানো হয়েছে।
শেখ হাসিনা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আজীবন বঞ্চিত মানুষের অধিকার আদায়ে এবং মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় কাজ করে গেছেন। তিনি শোষণ-বঞ্চনামুক্ত বাংলাদেশ গড়তে চেয়েছিলেন; যেখানে প্রতিটি মানুষ তার মানবিক মর্যাদা, সাম্য ও ন্যায়বিচারের নিশ্চয়তা লাভ করবে। তার নেতৃত্বে ১৯৭২ সালে প্রণীত বাংলাদেশের সংবিধানে গণতন্ত্র ও মানবাধিকারকে রাষ্ট্র পরিচালনার অন্যতম মূলনীতি হিসেবে গ্রহণ করা হয়।
রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী বিশ্ব মানবাধিকার দিবস পালন উপলক্ষে বাংলাদেশসহ বিশ্বের সব মানুষকে আন্তরিক শুভেচ্ছা এবং দিবসটির সার্বিক সাফল্য কামনা করেন।
উল্লেখ্য, ১৯৪৮ সালে ১০ ডিসেম্বর জাতিসংঘের উদ্যোগে ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে সংস্থার সদস্য রাষ্ট্রগুলোর সর্বসম্মতিক্রমে সার্বজনীন মানবাধিকার সনদ গৃহীত হয়। এরপর থেকে বিশ্বব্যাপী জাতিসংঘ সদস্য রাষ্ট্রগুলো যথাযথ মর্যাদায় বিশ্ব মানবাধিকার দিবস পালন করে আসছে। চলতি বছর ৭০তম বিশ্ব মানবাধিকার দিবস পালিত হতে যাচ্ছে।
বিশ্ব মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ মানবাধিকার ফেডারেশন (বিএইচআরএফ) রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে সকাল ১০টায় এক মানববন্ধন কর্মসূচির আয়োজন করেছে। বাসস।
সারাবাংলা/টিআর
১০ ডিসেম্বর বিশ্ব মানবাধিকার দিবস রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর বাণী