Sunday 08 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

১/১১ এর ১১ বছর


১১ জানুয়ারি ২০১৮ ০৯:১৬

সারাবাংলা ডেস্ক রিপোর্ট

ঢাকা :  আজ বৃহস্পতিবার, ১১ জানুয়ারি। পূর্ণ হলো বাংলাদেশের রাজনীতির ইতিহাসে আরেকটি কালো অধ্যায়ের ১১ বছর। ২০০৭ সালের ১১ জানুয়ারি, সেই দিনটিও ছিল বৃহস্পতিবার। যেদিন রাজনৈতিক অসচেতনার ফাঁক গলে ক্ষমতায় উঠে আসে সেনা-সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার।

বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠা লগ্ন থেকে ৭৫’র ১৫ আগস্ট, ৩ নভেম্বর, ৭ নভেম্বর, ১৯৭৭-৮০, ১৯৮১’র ৩০ মে, ১৯৮২ সালের ২৫ মার্চের মতো আনুষ্ঠানিক সেনা অভ্যুত্থান না হলেও ২০০৭ সালের ১১ জানুয়ারি ছিল স্মরণীয় দিন।

নির্বাচনী রূপরেখার অংশ হিসেবে ক্ষমতাসীন চার দলীয় ঐক্য জোট প্রশাসনে বিরাট রদবদল করে। দীর্ঘ মেয়াদে সেনা আইনের ১৮ অধ্যায়ের ১২(১) ধারা এবং সেনা প্রবিধানের ২৬১ ধারা ব্যবহার করে ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত সেনাবাহিনী থেকে ১১৬ জন কর্মকর্তাকে বরখাস্ত ও বাধ্যতামূলক অবসর দেওয়া হয়। পদচ্যুত হন নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনীর অর্ধশতাধিক কর্মকর্তা।

জাতীয় সংসদ নির্বাচন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ও নির্বাচন কমিশন গঠনের দাবিতে তখন রাজনীতির মাঠ সরগরম। এই সময় দেশি এবং বিদেশি মহলের ষড়যন্ত্রিরা ঘোলা পানিতে মাছ শিকারে নামে। ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর বিএনপি-জামায়াত জোটের সঙ্গে রাজনৈতিক সংঘর্ষে কয়েকজন নিহত হয়। আওয়ামী লীগ এবং জাতীয় পার্টি নির্বাচন বর্জন করে। শুধু তাই নয়, নির্বাচন বন্ধ করতে বঙ্গভবন ঘেরাও, হরতাল-অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। জেলায় জেলায় শুরু হয় চোরাগোপ্তা হামলা।

এদিকে বিএনপি-জামায়াত জোট তাদের অবস্থানে অনড় থাকে। ‘দেশ গৃহযুদ্ধের দিকে চলে যাচ্ছে’- অজুহাত দেখিয়ে ২০০৭ সালের ১১ জানুয়ারি নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ১১ দিন আগে তৎকালীন সেনাপ্রধান মঈন ইউ আহমেদ রাষ্ট্রক্ষমতায় বসেন। ঘোষণা করা হয় জরুরি অবস্থা। রাষ্ট্রপতির সঙ্গে পদত্যাগ করেন সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের নয় সদস্য। নতুন উপদেষ্টা হন ড. ফখরুদ্দীন। তাকে শপথ পাঠ করান রাষ্ট্রপতি অধ্যাপক ইয়াজউদ্দিন আহম্মেদ। কিন্তু জরুরি অবস্থা জারি থাকে টানা দুই বছর।

মাইনাস টু ফর্মুলা বাস্তবায়ন করতে দুর্নীতি দমনের ধোঁয়া উড়ায় মঈন-ফখরুদ্দীন সরকার। সেনা কর্মকর্তাদের নিয়ে গঠন করে টাস্কফোর্স। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ছাড়াও ৭৭ জন নেতাকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের নামে দায়ের করা হয় দুর্নীতির মামলা।

নেতৃত্ব সংকটই তাদের পতন ডেকে আনে। বাজার নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ, উন্নয়ন কর্মকাণ্ড বন্ধ এবং বিনিয়োগে ধস নামলে জনপ্রতিরোধ তৈরি হয়। সাধারণ মানুষের সঙ্গে আন্দোলন শুরু করে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল।

যদিও মঈন ইউ আহমেদ এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তার লেখা শান্তির স্বপ্নে বইতে তিনি লিখেছেন, রাজনীতিতে কোনোভাবেই সেনাবাহিনীকে জড়াতে চাননি। অধঃস্তন কর্মকর্তারা দেশের জন্য কিছু করার তাগিদ দিলে তিনি তাদের বোঝাতেন- রাষ্ট্র পরিচালনায় সেনাবাহিনীর অংশগ্রহণ করার কোনো সুযোগ নেই। আমরা লাইনচ্যুত ট্রেনকে, লাইনে উঠিয়ে তার প্রকৃত চালক রাজনীতিবিদদের হাতে দেশকে তুলে দিতে সহায়তা করেছি। আমাদের সর্বাত্মক এই প্রচেষ্টা ব্যর্থ হতো যদি জনগণ এবং রাজনৈতিক দলগুলো এগিয়ে এসে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ না করতো।

সারাবাংলা/এটি/একে


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর