ইশতেহারে যক্ষ্মা নির্মূলের এজেন্ডা অন্তর্ভুক্তির আহ্বান
১০ ডিসেম্বর ২০১৮ ১৮:৫১
।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ।।
ঢাকা: একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাজনৈতিক দলগুলোর ইশতেহারে যক্ষ্মা নির্মূলের এজেন্ডা অন্তর্ভুক্ত করার আহ্বান জানিয়েছেন গণমাধ্যমকর্মী এবং স্বাস্থ্যখাত সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা।
বক্তারা বলেন, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জন করতে হলে ২০৩০ সাল নাগাদ যক্ষ্মারোগে মৃত্যুর হার ৯০ শতাংশ এবং নতুনভাবে শনাক্ত যক্ষ্মারোগীর সংখ্যা ৮০ শতাংশ কমিয়ে আনতে হবে। আর তা করতে হলে যক্ষ্মারোগ শনাক্তকরণ ও রোগ প্রতিরোধকে গুরুত্ব দেওয়ার পাশাপাশি যক্ষ্মারোগ নির্মূলে রাজনৈতিক অঙ্গীকারের বিষয়টি নির্বাচনি ইশতেহারে অন্তর্ভুক্ত করা উচিৎ।
সোমবার (১০ই ডিসেম্বর) রাজধানীর ব্র্যাক সেন্টারে আয়োজিত ‘সক্রিয় ভূমিকার মাধ্যমে যক্ষ্মারোগ শনাক্তকরণ ও রোগ প্রতিরোধ নিশ্চিতকরণ’ শীর্ষক গোলটেবিল কর্মশালায় অংশ নিয়ে বক্তারা এসব কথা বলেন।
জাতীয় যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি, বাংলাদেশ হেলথ রিপোর্টার্স ফোরাম ও ব্র্যাক যৌথভাবে এই গোলটেবিল কর্মশালার আয়োজন করে। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির লাইন ডিরেক্টর অধ্যাপক ডা. মো. সামিউল ইসলাম।
মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জাতীয় যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি বাংলাদেশের গ্লোবাল ফান্ড ও এমডিআর-টিবির উপদেষ্টা ডা. মো. আব্দুল হামিদ সেলিম। স্বাগত বক্তব্য রাখেন ব্র্যাকের কমিউনিকেবল ডিজিজ প্রোগ্রাম-এর সহযোগী পরিচালক ডা. মাহফুজা রিফাত।
কর্মশালা সঞ্চালনা করেন বাংলাদেশ হেলথ রিপোর্টার্স ফোরামের সহ-সভাপতি নুরুল ইসলাম হাসিব। বক্তব্য রাখেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু) বাংলাদেশের কমিউনিকেবল ডিজিজেস সার্ভাইল্যান্সের মেডিকেল অফিসার ডা. মিয়া সেপাল নাগন, ব্র্যাকের কমিউনিকেবল ডিজিজেস অ্যান্ড ওয়াশ কর্মসূচির পরিচালক ড. মো. আকরামুল ইসলাম, ডেমিয়েন ফাউন্ডেশনের কান্ট্রি ডিরেক্টর ডা. অংকাই জাই মং, বাংলাদেশ হেলথ রিপোর্টার্স ফোরামের সভাপতি তৌফিক মারুফ এবং আরও অনেকে।
অধ্যাপক ডা. মো. সামিউল ইসলাম বলেন, আমাদের এখন মূল লক্ষ্য যক্ষ্মা শনাক্তকরণের সক্ষমতা বাড়ানো। যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণে আমরা রোগ শনাক্তকরণের জন্য আধুনিক পদ্ধতিকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছি। যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ সংশ্লিষ্ট কর্মকাণ্ডে আর্থিক সহায়তা কমে গেলে কিছুটা নেতিবাচক প্রভাব আসতে পারে। বাংলাদেশ এখনো অন্যতম ঝুঁকিপূর্ণ দেশ, তাই যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণে সরকার বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে। আমি আশা করছি, গ্লোবাল ফান্ডসহ সংশ্লিষ্ট দাতা সংস্থাগুলো তাদের সহায়তা অব্যাহত রাখবে।
ড. মো. আকরামুল ইসলাম বলেন, যক্ষ্মা নির্মূলে সঠিক বার্তা পৌঁছে দিতে কমিউিনিট পর্যায়ে আরও বেশি কাজ করতে হবে। জনবল বাড়ানোর মধ্য দিয়ে সবার চিকিৎসা সেবা নিশ্চত করতে হবে।
কর্মশালায় পরিসংখ্যান তুলে ধরা হয়- গ্রামের তুলনায় শহরে যক্ষ্মারোগের ঝুঁকি বেশি। গ্রামে যেখানে নতুন-পুরাতন সমষ্টিগতভাবে যক্ষ্মারোগী প্রতি লাখে ২৭০ জন, সেখানে শহরে প্রতি লাখে ৩১৬ জন শনাক্ত হচ্ছে।
এ সময় বক্তারা বেশ কয়েকটি সুপারিশ তুলে ধরেন। এগুলো হলো- যক্ষ্মা রোগ প্রতিরোধে আরও মনোযোগী হওয়া; ওষুধের মানের দিকে গুরুত্ব দেওয়া; নগর যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ; শিশু যক্ষ্মা শনাক্তকরণে বেশি গুরুত্ব দেওয়া; যক্ষ্মাবিষয়ক সচেতনতার অংশ হিসেবে গণমাধ্যমে অনুসন্ধানী রিপোর্ট করা।
সারাবাংলা/জেএ/এটি