।। সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট ।।
ঢাকা: একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-১৫ আসন থেকে জাতীয় পার্টির লাঙ্গল প্রতীক নিতে সেগুনবাগিচার রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে এসেছিলেন মো. মুকুল আমীন। দলীয় প্রতীক লাঙ্গল তো পাননিই- উল্টো তাকে ফিরে যেতে হয়েছে নাজেহাল হয়ে। যাওয়ার সময় দলের জন্য নিজের সময় অর্থ আর শ্রম দেওয়াকে অনর্থক বলে মন্তব্য করলেন এই রাজনীতিক। সেইসঙ্গে কেন দল তার সঙ্গে এমন বেঈমানি করল সে প্রশ্নও তোলেন মুকুল আমীন।
সোমবার (১০ ডিসেম্বর) ঢাকা মহানগরীর ১৫টি আসনে ১৩২ প্রার্থীর হাতে প্রতীক তুলে দেন রিটার্নিং কর্মকর্তা কে এম আলী আজম। দুপুর ১২টার দিকে ডাক পড়ে ঢাকা-১৫ আসনের প্রার্থীদের। এ আসনে মহাজোটের প্রার্থী কামাল আহমেদ মজুমদার। জাতীয় পার্টিও এই আসনে দলীয় প্রার্থী দিয়েছে। মুকুল আমীন জাপার প্রার্থী।
দলের সাবেক মহাসচিব রুহুল আমীন হাওলাদারের স্বাক্ষরে ২০ হাজার টাকায় দলীয় মনোনয়ন ফরম কেনেন তিনি। নির্বাচন কমিশনের কাছ থেকে নেওয়া রশিদ রয়েছে তার কাছে। প্রাথমিক বাছাইয়ে বাদ পড়ার পর ইসিতে আপিল করে জয় পান তিনি। সেসব কাগজপত্র সবই রয়েছে তার কাছে। পার্টির একক প্রার্থী হিসেবে প্রতীক নিতে আসেন মুকুল আমীন।
কিন্তু রিটানিং কর্মকর্তা দলীয় প্রতীক তুলে দেন শামসুল হক নামে অন্য এক প্রার্থীর হাতে। এ সময় মুকুল আমীন রিটার্নিং কর্মকর্তাকে কাগজপত্র দেখাতে চান। বলেন, ‘আমিই ঢাকা-১৫ আসনে জাতীয় পার্টি মনোনীত প্রার্থী। আমাকে প্রতীক দেন’।
কমিশনার জানান, দল থেকে যার নামে কাগজ পাঠানো হয়েছে আমরা তার হাতেই প্রতীক তুলে দেবো। আপনার নামে দল থেকে আমাদের কাছে কোনো চিঠি আসেনি। এ সময় সম্মেলন কক্ষেই বসে ছিলেন দলটির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও মহানগর উত্তরের সভাপতি এস এম ফয়সাল চিশতী। তিনি অনেকটা ধমক দিয়ে মুকুল আমীনকে সামনের চেয়ারে এসে বসতে বলেন।
প্রতীক হস্তান্তর অনুষ্ঠানের ফাঁকে নিজের অবস্থানের কথা আরও বেশ কয়েকবার উচ্চ স্বরে জানান দেন মুকুল আমীন। কিন্তু তার কথা আমলে নেওয়ার মতো কোনো যৌক্তিক কারণ খুঁজে পায়নি নির্বাচন অফিস।
পরে মুকুল আমীন সারাবাংলাকে জানান, দীর্ঘদিন ধরে জাতীয় পার্টির রাজনীতি করেন তিনি। গত দু’টি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে কাউন্সেলর পদেও তাকে প্রার্থী মনোনীত করা হয় পার্টি থেকে। কাফরুলের স্থানীয় এই জনপ্রতিনিধির এবার স্বপ্ন ছিল সংসদ নির্বাচনে লড়ার। দল থেকেই তাকে বাছাই করা হয়েছিল। সে হিসেবে বেশ টাকাও ঢেলেছেন এই ডেইরি ব্যবসায়ী।
তার অভিযোগ দল যদি আমাকে চূড়ান্তভাবে প্রার্থী না-ই করবে তাহলে কেন আমাকে এতদূর আনলো? কেনই বা আমাকে দলীয় মনোনয়ন দিলো, ইসিতে আপিল করালো- এতো পানিতে কেন নামালো, প্রশ্ন রাখেন তিনি।
মুকুল আমীন বলেন, দলের দুর্দিনে আমি দলের জন্য অনেক কিছুই করেছি। অর্থ সময় আর শ্রম ব্যয় করেছি। অথচ আজ দল একজন পল্টিবাজকে বেছে নিলো। আমাকে সবার সামনে এভাবে হেনস্তা করার তো কোনো মানে ছিল না।
সারাবাংলা/এমএস/এটি