Friday 27 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

একাদশ সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থীর সংখ্যা সবচেয়ে কম


১১ ডিসেম্বর ২০১৮ ১৩:১০

।। গোলাম সামদানী, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট।।

ঢাকা: আসছে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটের মাঠে রাজনৈতিক দলগুলোর মোট ১ হাজার ৮৪১ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর মধ্যে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল থেকে ১ হাজার ৭৪৫ জন এবং অবশিষ্ট ৯৬ জন স্বতন্ত্র থেকে অংশ নিয়েছেন। সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র থেকে অংশ নেয়া প্রার্থীর সংখ্যা আগের ১০টি সংসদ নির্বাচনের তুলনায় সবচেয়ে কম। শুধু তাই নয় একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থীর সংখ্যা দশম সংসদ নির্বাচনের চেয়ে ৮ জন কম। ইসি সূত্র সারাবাংলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

বিজ্ঞাপন

ইসি সূত্র জানায়, ২০০৮ সালের সংশোধিত গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) স্বতন্ত্র প্রার্থীরা নির্বাচনে অংশ নেয়ার ক্ষেত্রে কিছু সংশোধনী আনা হয়েছে। সংশোধিত আরপিও অনুযায়ী স্বতন্ত্র প্রার্থীদের নির্বাচনে অংশ নিতে হলে ১ শতাংশ ভোটারের সই অথবা টিপসই বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। স্বতন্ত্র প্রার্থীদের এই শর্ত মেনে নির্বাচন করা বেশ কঠিন। কারণ, বর্তমানে প্রতিটি আসনে গড় ভোটার প্রায় তিন লাখ ৪০ হাজার। এই অবস্থায় স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে একজন প্রার্থীকে গড়ে সাড়ে তিন হাজার ভোটারের সই অথবা টিপসই নিয়ে মনোনয়নপত্র জমা দিতে হয়। পরে এই সইগুলো থেকে দৈবচয়নের মাধ্যমে যে কোনো ১০টি সই বেছে নিয়ে রিটানিং কর্মকর্তা যাচাই বাচাই করে দেখেন সই/টিপ গুলো সঠিক কিনা। সেখান থেকে একটি সই/টিপ না মিললে প্রার্থীতা বাতিল করা হয়। ফলে অনেক ক্ষেত্রে একজন স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে সাড়ে তিন থেকে চার হাজার টিপসই/ স্বাক্ষর সংগ্রহ করা বেশ কঠিন। কারণ অনেক স্বতন্ত্র প্রার্থী ওই পরিমাণ ভোটই পান না। ফলে স্বতন্ত্র প্রার্থীর সংখ্যা কমে গেছে।

বিজ্ঞাপন

ইসি সূত্র জানায়, দশম সংসদে নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থীর সংখ্যা ছিল ১০৪ জন। অথচ ১০ম সংসদে ৩শ আসনের মধ্যে মাত্র ১৫৩টি আসনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। বাকি ১৪৭টি আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় প্রার্থীরা নির্বাচিত হন। তা সত্ত্বেও একাদশ সংসদ নির্বাচনে দশম সংসদের তুলনায় স্বতন্ত্র প্রার্থীর সংখ্যা কমে গেছে ৮ জন। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৩ হাজার ৬৫ জন প্রার্থীর মধ্যে যাচাই বাচাই শেষে বৈধ প্রার্থীর সংখ্যা ২ হাজার ২৭৯ জন। এর মধ্যে ৩৯টি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের বৈধ প্রার্থীর সংখ্যা ছিল ২ হাজার ১৬৫ জন, স্বতন্ত্র থেকে বৈধ প্রার্থী ১১৪ জন।

অন্যদিকে, যাচাই বাচাইয়ে বাতিল হওয়া ৭৮৬ জন প্রার্থীর মধ্যে রাজনৈতিক দলের ২ হাজার ৫৬৭ জন প্রার্থী থেকে ৪০২ জন প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিল হয়। অন্যদিকে, স্বতন্ত্র থেকে দাখিল করা ৪৯৮ জন প্রার্থীর মধ্যে ৩৮৪ জনের মনোনয়নপত্র বাতিল হয়। এতে করে স্বতন্ত্র থেকে বৈধ প্রার্থীর সংখ্যা দাঁড়ায় মাত্র ১১৪ জন। পরে সেখান থেকে প্রত্যাহারের দিন ১৮ জন প্রার্থীতা প্রত্যাহার করলে এই সংখ্যা মাত্র ৯৬ জনে নেমে আসে।

ইসি সূত্র জানায়, ১৯৭৩ সালো প্রথম সংসদ নির্বাচনে ১ হাজার ৮৯ জন প্রার্থীর স্বতন্ত্র প্রার্থী ছিল ১২০। ১৯৭৯ সালে দ্বিতীয় সংসদ নির্বাচনে ২ হাজার ১২৩ জন প্রার্থীর মধ্যে স্বতন্ত্র প্রার্থী ছিল ৪২২ জন। ১৯৮৬ সালের তৃতীয় সংসদ নির্বাচনে ১ হাজার ১২৪ জন প্রার্থীর মধ্যে স্বতন্ত্র প্রার্থী ছিল ৪৫৩ জন। ১৯৮৮ সালের চতুর্থ সংসদ নির্বাচনে ৯১৯ জন প্রার্থীর মধ্যে স্বতন্ত্র ছিল ২১৪ জন। ১৯৯১ সালের ৫ম সংসদে ২ হাজার ৭৮৭ জন প্রার্থীর স্বতন্ত্র ৪২৪ জন। ১৯৯৬ সালো ১৫ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে ১ হাজার ৪৫০ জন প্রার্থী ছিল। ১৯৯৬ সালের ১২ জুন সপ্তম সংসদ নির্বাচনে ২ হাজার ৫৭৪ জন প্রার্থীর মধ্যে স্বতন্ত্র ছিল ৮৬৪ জন। ২০০১ সালের ১ অক্টোবর ৮ম সংসদ নির্বাচনে ১ হাজার ৬২ জন প্রার্থী নির্বাচনে অংশ নেয়। ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর নবম সংসদ নির্বাচনে ১ হাজার ৫৬৭ জন প্রার্থীর মধ্যে ১৪১ জন স্বতন্ত্র। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি দশম সংসদ নির্বাচনে ৫৪৩ জন প্রার্থীর মধ্যে স্বতন্ত্র ছিল ১০৪ জন।

ইসি সূত্র জানায়, একাদশ সংসদ নির্বাচনে কুমিল্লা-৩ আসনে সর্বোচ্চ ১৫ জন ও সর্বনিম্ন বেশ কয়েকটি আসনে তিনজন করে প্রার্থী রয়েছেন। এবারের সংসদ নির্বাচনের জন্য ৬৪টি প্রতীক সংরক্ষণ করেছে নির্বাচন কমিশন। এর মধ্যে ৩৯টি নিবন্ধিত দলকে নিজের প্রতীক এবং স্বতন্ত্র প্রার্থীদের অবশিষ্টগুলো থেকে প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এবার ১০ থেকে ২৮ ডিসেম্বর মধ্যরাত পর্যন্ত মোট ১৯ দিন প্রচারণা চালানোর জন্য সময় পাচ্ছেন প্রার্থীরা। আগামী ২৮ ডিসেম্বর মধ্য রাত ১২টা থেকে প্রচারণা বন্ধ থাকবে।

সারাবাংলা/ জিএস/জেএএম

একাদশ সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থীর সংখ্যা কম

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর