।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ।।
চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রাম নগরীর জেল রোডে আমানত শাহ’র মাজার জিয়ারত শেষে পায়ে হেঁটে ফিরছিলেন বর্ষীয়ান রাজনীতিক, বিএনপি নেতা আবদুল্লাহ আল নোমান। একই পথ দিয়ে গাড়িতে যাচ্ছিলেন তরুণ আওয়ামী লীগ নেতা মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল।
নোমানকে দেখেই গাড়ি থেকে নেমে যান নওফেল। নোমান বুকে জড়িয়ে নেন তাকে। ভোটের মাঠে প্রবল প্রতিদ্বন্দ্বী বিপরীতমুখী দুই রাজনৈতিক দলের দুই নেতার মধ্যে এমন সৌহার্দ্য দেখে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন সেখানে থাকা সাধারণ লোকজন।
মঙ্গলবার (১১ ডিসেম্বর) দুপুর ১২টার দিকে জেল রোড হয়ে বক্সিরহাটের দিকে গণসংযোগে যাচ্ছিলেন চট্টগ্রাম-৯ (কোতোয়ালী-বাকলিয়া) আসনের নৌকার প্রার্থী নওফেল। আর আমানত শাহ’র মাজার থেকে বেরিয়ে নিজ নির্বাচনি এলাকা চট্টগ্রাম-১০ (ডবলমুরিং-খুলশী) আসনের দিকে যাওয়ার জন্য পায়ে হেঁটে গাড়িতে উঠতে যাচ্ছিলেন নোমান।
নোমানের সঙ্গে থাকা সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ, “চট্টগ্রামের সহ-সভাপতি, সাংবাদিক জাহিদুল করিম কচি সারাবাংলাকে বলেন, আবদুল্লাহ আল নোমান সাহেব মাজার জিয়ারত করেছেন। উনার গাড়িটা জেল রোডের মুখে রাখা ছিল। তিনি হেঁটে গিয়ে ওই গাড়িতে উঠবেন, এমন সময় নওফেল সাহেবের গাড়ি যাচ্ছিল। তখন তিনি গাড়ি থামিয়ে নেমে গিয়ে কুশল বিনিময় করেন।”
নওফেলের সঙ্গে থাকা চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের উপ-দফতর সম্পাদক ও কাউন্সিলর জহরলাল হাজারী সারাবাংলাকে বলেন, “নোমান সাহেব নওফেল ভাইকে দেখে বুকে জড়িয়ে নেন। নওফেল ভাই উনার হাত ধরে দোয়া চেয়েছেন। সব মিলিয়ে মিনিট তিনেকের মতো উনারা একসাথে ছিলেন।”
এক সময়ের ভাসানীপন্থী তুখোড় বামপন্থী নেতা আবদুল্লাহ আল নোমান এখন বিএনপির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান। কোতোয়ালী-বাকলিয়া আসন থেকে অতীতে তিনি দুইবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। একবার হারিয়েছিলেন নওফেলের বাবা সাবেক মেয়র এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীকেও। ২০০৮ সাল থেকে নোমান আসন পরিবর্তন করে চট্টগ্রাম-১০ আসন থেকে নির্বাচন করছেন।
বিপরীতমুখী রাজনৈতিক দলের নেতা হলেও নোমান-মহিউদ্দিনের সম্পর্ক ছিল খুবই মধুর। দুজনের বাড়িও একই এলাকায় রাউজানে। এক সময় চট্টগ্রামের রাজনীতি আবর্তিত হতো নোমান-মহিউদ্দিনকে ঘিরেই।
প্রয়াত মহিউদ্দিনের ছেলে নওফেল এখন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক। চট্টগ্রাম-৯ আসনে নওফেলের বিপরীতে আছেন নোমানের রাজনৈতিক শিষ্য হিসেবে পরিচিত চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেন।
সারাবাংলা/আরডি/এটি