ধার করে নির্বাচনি ব্যয় মেটাবেন খাগড়াছড়ির নতুন কুমার
১২ ডিসেম্বর ২০১৮ ০৮:৪২
।। ডিস্ট্রিক করেসপন্ডেন্ট ।।
খাগড়াছড়ি: নির্বাচন কমিশন থেকে খালি হাতে ফিরলেও আদালতের রায়ে খাগড়াছড়ি আসনে প্রার্থিতা ফিরে পেয়েছেন ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ) সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থী নতুন কুমার চাকমা। এরই মধ্যে ‘সিংহ’ প্রতীকও বরাদ্দ পেয়েছেন তিনি। তবে এই প্রার্থীর নেই নিজস্ব সম্পদ, ব্যাংকে নেই কোনো সম্পদ। মাসে তার আয় মাত্র ২৫ হাজার টাকা। নির্বাচনের জন্য কিছু টাকা অনুদান পাবেন তিনি। আর ধার করে নির্বাচনের বাকি খরচটা মেটাতে হবে নতুন কুমার চাকমাকে।
সারাদেশের অন্য সব প্রার্থীদের মতো ১০ ডিসেম্বরই স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতীক বরাদ্দ পেয়েছেন নতুন কুমার চাকমা। তিনি পেয়েছেন ‘সিংহ’ প্রতীক। তার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর মধ্যে আওয়ামী লীগের কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা নৌকা, বিএনপি শহীদুল ইসলাম ভুঁইয়া ধানের শীষ, জাতীয় পার্টির সোলায়মান আলম শেঠ লাঙ্গল ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আবদুল জব্বার গাজী হাত পাখা প্রতীকে অংশ নিচ্ছেন এই নির্বাচনে।
তবে অন্য প্রার্থীদের সঙ্গে নতুন কুমার চাকমার কিছু পার্থক্য আছে। খাগড়াছড়ি আসনের আওয়ামী লীগ, বিএনপি বা জাতীয় পার্টির প্রার্থীদের ঘরবাড়ি, ব্যাংকে টাকা, ঘরে স্বর্ণালংকার থাকলেও নতুন কুমার চাকমা আর্থিক হিসাবে নিতান্তই ‘দরিদ্র’ একজন প্রার্থী। তার বা তার স্ত্রীর নামে ব্যাংকে কোনো সঞ্চয় নেই। শুধু তাই নয়, ব্যাংকে গচ্ছিত কোনো অর্থই নেই তাদের। অন্য প্রার্থীদের গাড়ি-বাড়ি থাকলেও নতুন কুমার চাকমার রয়েছে কেবল যৌথ মালিকানার একটি বাড়ি, যার দাম মাত্র ৫০ হাজার টাক। আধুনিক সব মডেলের গাড়ি যখন অন্য প্রার্থীদের ঘরে, তখন এই প্রার্থীর নেই একটি মোটরসাইকেলও।
নির্বাচনের মনোনয়নপত্রের সঙ্গে জমা দেওয়া হলফনামার তথ্য অনুযায়ী, কৃষি ও মৌসুমী ব্যবসা থেকে নতুন কুমার চাকমার আয় বছরে ৩ লাখ টাকা। সে হিসাবে বিএ পাস এই প্রার্থীর মাসিক আয় মাত্র ২৫ হাজার টাকা। এই আয়ের বাইরে তার হাতে নগদ আড়াই লাখ টাকাই শেষ সম্বল।
হলফনামায় নতুন কুমার চাকমা জানিয়েছেন, নির্বাচনের খরচ মেটাতে তার বোন স্বেচ্ছাপ্রণোদিত হয়ে ২ লাখ টাকা দিতে পারেন। বাকি ব্যয় বহনের জন্য ভাই উত্তম কুমার চাকমার কাছ থেকে ২ লাখ টাকা এবং ভাইপো রাজেশ চাকমার কাছ থেকে ২ লাখ ধার করতে হতে পারে তাকে।
হলফনামার তথ্য অনুযায়ী, ব্যাংকে নতুন কুমার চাকমার কোনো নগদ টাকা জমা নেই। স্ত্রীর বা নির্ভরশীলদের নামের নেই কোনো স্বর্ণলংকার। স্ত্রীর নামে পোস্টাল, সেভিংস সার্টিফিকেটসহ কোনো ধরনের সঞ্চয়পত্র বা স্থায়ী আমানতও নেই। ঘরে আসবাবপত্র আছে মাত্র ১৬ হাজার টাকা সমমূল্যের।
এর বাইরে যৌথ মালিকানার ৩.২০ একর কৃষি জমিতে অংশীদারিত্ব আছে নতুন কুমার চাকমার। তার অংশের বাজার মূল্য ২ লাখ টাকা। অন্যদিকে, যৌথ মালিকানাধীন কিছু অকৃষি জমিও আছে তার। এর বাজার মূল্য আনুমানিক ১ লাখ টাকা।
ইউপিডিএফ সমর্থিত প্রার্থী নতুন কুমার চাকমা সারাবাংলাকে বলেন, আমিই মনে হয় সবচেয়ে গবীর প্রার্থী। প্রান্তিক পর্যায়ের, বঞ্চিত জনগণের দুঃখ, কষ্ট, যন্ত্রণা আমি যতটা বুঝব, তা অন্য প্রার্থীরা তা বুঝতে পারবেন না। আমি এলাকার শান্তি ও উন্নয়নের জন্য কাজ করতে চাই। আমি খাগড়াছড়িকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, নির্বাচন সুষ্ঠু ও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার হলে তিনিই জিতবেন বলে আশাবাদী।
সারাবাংলা/টিআর