Friday 27 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

সিরাজগঞ্জ-৪ আসনে তানভীরে বিজয় দেখছে আ.লীগ, বিএনপির ভরসা জামায়াতে


১২ ডিসেম্বর ২০১৮ ০৯:৩২

।। রানা আহমেদ, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট ।।

সিরাজগঞ্জ: সড়ক ও রেল যোগাযোগ সমৃদ্ধ সিরাজগঞ্জ-৪ সংসদীয় আসনটি উল্লাপাড়া উপজেলার ১৪টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা নিয়ে গঠিত। শস্য ভাণ্ডার, শিক্ষানগরী ও বাণিজ্যবন্দর খ্যাত এ আসনটি নিয়ে সব রাজনৈতিক দলেরই রয়েছে বাড়তি নজর। ক্ষমতায় থাকা আওয়ামী লীগ ও সংসদের বাইরে থাকা বিএনপি-জামায়াত এক হলে এই আসনে হাড্ডাহাড্ডি নির্বাচনী যুদ্ধ হবে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক নেতারা।

বিজ্ঞাপন

সিরাজগঞ্জ-৪ (উল্লাপাড়া-সলঙ্গা) আসনে ২০১৪ সালে নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচ টি ইমামের ছেলে তানভীর ইমাম মনোনয়ন পেয়ে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন। নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে এ আসনে আওয়ামী লীগ তানভীর ইমামে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করে দলকে সুসংগঠিত করেছেন।

দলীয় অনেক নেতাকর্মীর মতে প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচ টি ইমামের বাড়ি এ আসনে হওয়ার পাশাপশি এবং আওয়ামী রাজনীতির নীতি নির্ধারকদের একজন হওয়ার কারনে তার ছেলে তানভীর ইমামকে নৌকা প্রতীক দেওয়া হয়। তানভীর ইমাম সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার মধ্য দিয়ে এ আসনে আওয়ামী রাজনীতিতে পরিচয় ঘটে তার। এ আসনের আওয়ামী লীগের দলীয় ও জাতীয় কর্মসূচি তানভীর ইমামের নেতৃত্বেই পরিচালিত হয়।

আওয়ামী রাজনীতিতে হঠাৎ করে জড়ালেও এই বর্তমান এমপি জামায়াত-বিএনপির জ্বালাও-পোড়াও তাণ্ডবের সময় এ অঞ্চলে তার নেতৃত্বে নাশকতা বন্ধে কার্যকরী ভূমিকা রেখেছেন। নবীন নেতৃত্বকে প্রাধান্য দিয়ে দলের অঙ্গসংগঠনের কমিটি ও স্থানীয় নির্বাচনে প্রার্থী নির্ধারণের মধ্যদিয়ে দলের সাংগঠনিক কাঠামোকে শক্তিশালী করেছেন এবং নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রেখে রাখায় তানভীর ইমামকে বিজয়ী করতে সব ভেদাভেদ ভুলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে মাঠে নেমেছেন আওয়ামী লীগ।

বিজ্ঞাপন

এদিকে, এই আসনে ধানের শীষের প্রতীক নিয়ে লড়ছেন জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান। তার পক্ষেই কাজ করছেন বিএনপির নেতাকর্মীরা। ২০দলীয় জোটের শরিক হিসেবে চূড়ান্ত মনোনয়ন পেয়েছেন জামায়াতের রফিকুল। তাকে ধানের শীষ প্রতীক বরাদ্দ দেওয়ায় অপর দুই প্রার্থী সাবেক সংসদ সদস্য এম আকবর আলী ও কাজী কামালের মনোনয়ন প্রত্যাহার হিসেবেই গণ্য হয়েছে।

স্থানীয় জামায়াত নেতারা মনে করছেন প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা এইচটি ইমামের ছেলে বর্তমান সংসদ সদস্য তানভীর ইমামের মোকাবিলায় রফিকুল ইসলাম খানই যোগ্য প্রার্থী। তবে এ আসনে বিএনপি প্রার্থীরা দলীয় মনোনয়ন না পাওয়ার হিসাব নিয়ে তুষের আগুনে জ্বলছে। বিএনপির নিজ আসন হিসাবে পরিচিত এখানে দলের কেউ মনোনয়ন না পাওয়ায় ভোটের আগে গোপনে জোটমিত্র জামায়াতের বিপক্ষে একাট্টা হচ্ছে বিক্ষুব্ধ বিএনপি নেতাকর্মীরা। তবে বিগত ২০০৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এ আসনে সাবেক সাংসদ এম. আকবর আলীকে জোট মনোনীত প্রার্থী করা হলে সে সময় এ প্রার্থীকে জামায়াত মেনে না নিয়ে সেখানে রফিকুল ইসলাম খান জামায়াত মনোনীত বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেন।

জোটের বিপক্ষে অবস্থান করার কারণে পরাজিত হয় জোট মনোনীত প্রার্থী এম. আকবর আলী। তখন থেকেই এ নির্বাচনী এলাকার বিএনপির বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা ভালো চোখে দেখছেন না জামায়াতের নেতাকর্মীদের। এবারের জোট মনোনীত প্রার্থী রফিকুল ইসলাম খানের উপর বিদ্রোহের সেই প্রভাবটি ফেলবে বিএনপি নেতাকর্মীরা এমন আভাস পাওয়া যাচ্ছে। তবে জামায়াত যদি নির্বাচনে বিএনপি কাজে লাগাতে পারে তাহলে এ আসনে উভয় প্রার্থীর মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে।

জানা গেছে, উল্লাপাড়া-সলঙ্গা আসনে আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জামায়াতের প্রায় সমান সংখ্যক ভোট ব্যাংক রয়েছে। জোটগত নির্বাচনে ২০০১ সালে জামায়াতের সমর্থন নিয়ে বিএনপির এম আকবর আলী আওয়ামী লীগের আব্দুল লতিফ মির্জাকে পরাজিত করে বিপুল ভোটে নির্বাচিত হন।

২০০৮ সালে বিএনপি-জামায়াত তাদের নিজস্ব প্রতীক ধানের শীষ ও দাঁড়িপাল্লা নিয়ে সিরাজগঞ্জ-৪ আসনে নির্বাচন করে। এখানে প্রথমবার নির্বাচন করেই প্রায় ৯৮ হাজার ভোট পেয়ে দ্বিতীয় স্থান অর্জন করে জনপ্রিয়তার প্রমাণ দেন প্রভাবশালী জামায়াত নেতা রফিকুল ইসলাম খান। ২০০১ সালে নির্বাচিত এম আকবর আলী ২০০৮ সালে ধানের শীষ প্রতীক ২৪ হাজার ভোট পেয়ে জামানত হারান। এই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী তৃণমূল থেকে উঠে আসা মুক্তিযোদ্ধা শফিকুল ইসলাম শফি এমপি নির্বাচিত হন। ১৯৯১ সালে এম আকবর আলী ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে প্রথম এমপি নির্বাচিত হন। সেবারও জামায়াত প্রার্থী প্রয়াত অ্যাডভোকেট আবু বকর সিদ্দিক মাত্র ২ হাজার ভোটের ব্যবধানে দ্বিতীয় হন।

উল্লেখ্য, আগামী ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এই নির্বাচনে উল্লাপাড়া উপজেলার ১৪টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার প্রায় ৩ লাখ ৯৪ হাজার ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন।

সারাবাংলা/এমও

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

কানপুরে প্রথম দিনে বৃষ্টির দাপট
২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৬:৩৫

সম্পর্কিত খবর