Sunday 24 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

সহিংসতা ৫ জানুয়ারির পুনরাবৃত্তি কিনা, খতিয়ে দেখতে সিইসির নির্দেশ


১৩ ডিসেম্বর ২০১৮ ১১:৪১

।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ।।

ঢাকা: গত দুই দিন ধরে নির্বাচনি প্রচারের সময় সহিংসতার ঘটনা ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির পুনরাবৃত্তির পায়তাঁরা কি না খতিয়ে দেখতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কেএম নূরুল হুদা।

আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সারাদেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে করণীয় নির্ধারণে সশস্ত্র বাহিনীসহ সব বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থার সঙ্গে বৈঠকে এই নির্দেশ দেন সিইসি।

এসব সহিংসতার ঘটনায় তৃতীয় কোনো শক্তির উত্থানের আলামত কি না তা খতিয়ে দেখার জন্য সব গোয়েন্দা সংস্থাকে নির্দেশ দেন তিনি।

বৃহস্পতিবার (১৩ ডিসেম্বর) সকালে নির্বাচন ভবনের অডিটরিয়ামে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদার সভাপতিত্বে বৈঠকে চার নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার, মো. রফিকুল ইসলাম, কবিতা খানম ও ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) শাহাদত হোসেন চৌধুরী এবং ইসি সচিবইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমদসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত আছেন।

সিইসি বলেন, ‘২০১৪ সালের নির্বাচন আমাদের ভুলে গেলে চলবে না। যে ভয়ঙ্কর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছিল সেটার আলোকে আমাদের এই নির্বাচনে প্রস্তুতি নিতে হবে। ওই নির্বাচনে আমরা কি দেখেছি, মাঠে পর্যাপ্ত সংখ্যক পুলিশ ও প্রশাসনের লোক থাকা সত্ত্বেও প্রিজাইডিং অফিসার, পুলিশ সদস্য ও অন্যান্য সদস্যদের নিহত হতে হয়েছে। শত শত মানুষের প্রাণ গেছে। শত শত প্রতিষ্ঠান ভস্মিভূত হয়েছে। এখানে যারা পুলিশ প্রশাসন, গোয়েন্দা সংস্থা ও অন্যান্য সংস্থার লোক রয়েছেন, তারা যেন জনগণের ভোটের জানমাল এবং নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেন সে ব্যাপারে আপনাদের নির্দেশ দিচ্ছি।’

বিজ্ঞাপন

কেএম নুরুল হুদা বলেন, প্রতীক বরাদ্দের পরের দিন নির্বাচনি প্রচারণায় দুটি প্রাণ হারানোর ঘটনা অত্যন্ত দুঃখজনক। এটা কি শুধুই রাজনৈতিক ঘটনা নাকি ২০১৪ সালের ঘটনার পুনরাবৃত্তির পায়তারা। এসব ঘটনার খোলস থেকে সকলেরই বের হয়ে আসতে হবে। রাজনৈতিক দল ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলোকে সচেষ্ট থাকতে হবে, সহিংসতা সৃষ্টির ঘটনার মধ্যে কোনো তৃতীয় শক্তির ষড়যন্ত্র চলছে কিনা সেটা খতিয়ে দেখতে হবে।

নির্বাচন নিয়ে মানুষের মধ্যে স্বতঃস্ফূর্ততার সৃষ্টি হয়েছে উল্লেখ করে সিইসি বলেন, ঠিক এমন সময় মানুষ খুনের ঘটনা, হামলার ঘটনাকে বিচ্ছিন্ন ঘটনা বলে মনে করার কোনো কারণ নেই।

ইভিএম বিষয়ে সিইসি বলেন, ‘এবারের নির্বাচনে কয়েকটি আসনে ইভিএম ব্যবহার করতে চাই। কারণ মাস্তানদের হাতে ভোটারদের সিদ্ধান্ত ছেড়ে দেওয়া যায় না। ব্যালটবাক্স ছিনতাইকারীর হাত থেকে ভোটারদের মুক্তি দিতে হবে। বর্তমানে যে পদ্ধতিতে ভোট চলছে, তার চেয়ে অনেক বেশি ভালো হবে ইভিএম পদ্ধতি। ইভিএম একটি বিকল্প পদ্ধতি, যার মাধ্যমে ভোটারদের ভোটের নিশ্চয়তা থাকবে। যেখানে ইভিএম ব্যবহার হবে ওইসব এলাকায় আলাদা নজর দেওযা এবং আলাদাভাবে নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা। ইভিএম সবখানে প্রয়োগ করা হলে এদেশের নির্বাচনের ৮০ ভাগ অনিয়ম কমে আসবে বলে মনে করি ‘

তিনি বলেন, সমগ্র নির্বাচন ভালোভাবে শেষ করতেই আমাদের সকল আয়োজন। আনসার, পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি, গোযেন্দা সংস্থা সকলেই দায়িত্বশীল জায়গায় কাজ করবেন। তার বাইরে প্রিজাইডিং অফিসার দায়িত্ব পালন করবেন। সকলকে একটা কথাই বলব, সবাই মিলে সমন্বয়ের মাধ্যমে একটি নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করে ভোট শেষ করতে হবে।

বিজ্ঞাপন

সিইসি আরও বলেন, ভোটের মাঠ সুষ্ঠ ও শান্তিপূর্ণ রাখতে সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার করতে হবে, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার করতে হবে সেক্ষেত্রে বিজিবিকে সম্পৃক্ত করে কাজ করতে হবে। কারণ বিজিরির এ ব্যাপারে অভিজ্ঞতা রয়েছে।প্রত্যেক এলাকার মাস্তান, সন্ত্রাসীদের তালিকা করতে হবে।

বৈঠকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সচিব মোস্তফা কামাল উদ্দীন, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার লে. জেনারেল মোহাম্মদ মাহফুজুর রহমান, বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী, আনসার ও ভিডিপির মহাপরিচালক মেজর জেনারেল কাজী শরীফ কায়কোবাদ, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মো. সাফিনুল ইসলাম, গোয়েন্দা সংস্থা এনএসআইয়ের পরিচালক মেজর জেনারেল টি এম জোবায়ের, ডিজিএফআইয়ের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মো. সাইফুল আবেদিন, কোস্টগার্ডের পরিচালক রিয়ার অ্যাডমিরাল এ এম এম এম আওরঙ্গজেব চৌধুরী, র‌্যাবের মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার মো. আছাদুজ্জামান মিয়া ও পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক মীর শহীদুল ইসলাম উপস্থিত আছেন।

আরও উপস্থিত আছেন নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. মোখলেসুর রহমান ও জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ সাইদুল ইসলামসহ বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।

আগামী ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠেয় একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে কোনো বাহিনীর কতসংখ্যক জনবল কতদিনের জন্য নিয়োজিত করা হবে, সে বিষয়গুলোতে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে এই বৈঠকে।

সারাবাংলা/জিএস/ইউজে/এসএমএন

সিইসি

বিজ্ঞাপন

মানুষের হিংস্রতা কেন বাড়ছে?
২৪ নভেম্বর ২০২৪ ০৯:৪১

আরো

সম্পর্কিত খবর