ধানের শীষের পক্ষে গণজোয়ার সৃষ্টি হয়েছে: রিজভী
১৩ ডিসেম্বর ২০১৮ ১৩:১৬
।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ।।
ঢাকা: ধানের শীষের পক্ষে গণজোয়ার সৃষ্টি হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, সারাদেশে জনগণ এখন ঐক্যবদ্ধ।
বৃহস্পতিবার (১৩ ডিসেম্বর) সকালে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব দাবি করেন।
রিজভী বলেন, “খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে এবং ‘আওয়ামী হানাদারদের’ কবল থেকে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করতে ধানের শীষের পক্ষে গণজোয়ার সৃষ্টি হয়েছে। সারাদেশে জনগণ এখন ঐক্যবদ্ধ। এই অবৈধ সরকার আগামী নির্বাচনে নিশ্চিত ভরাডুবি আঁচ করতে পেরে হামলা গ্রেফতার বাড়িয়ে দিয়েছে। টিকে থাকার জন্য শেষ মরণকামড় দিচ্ছে এখন।’
তিনি বলেন, ‘গণমাধ্যমে খবর বেরিয়েছে-আইজিপি সব ডিআইজি ও এসপিদেরকে ঢাকায় তলব করেছেন। বিএনপি’র আড়াই লাখ নেতাকর্মীদের একটি তালিকা করেছে পুলিশ। ডিআইজি এবং এসপিদের সঙ্গে বৈঠকের পর চিরুনি অভিযান চালিয়ে ঐসব নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করে নির্বাচনি মাঠ ফাঁকা করা হবে। মূলতঃ শত বাধা বিপত্তি-গ্রেফতার-হামলা উপেক্ষা করে চারদিকে ধানের শীষের যে গণজোয়ার সৃষ্টি হয়েছে সেটিকে থামিয়ে দিতেই এই অভিযানের পরিকল্পনা নিয়েছে পুলিশ।’
রিজভী বলেন, ‘৫ বছর ঢাকায় আরাম আয়েশে লুটপাট করে কাটিয়ে এখন নির্বাচনী এলাকায় গিয়ে চরম প্রতিকুলতায় পড়েছে নৌকার প্রার্থীরা। দিকে দিকে জনগণ তাদের বিরুদ্ধে ফুঁসে উঠতে শুরু করেছে। ভোট চাইতে গিয়ে ভোটারদের রোষের মুখে পড়ছে।’
দলীয় সন্ত্রাসী আর পেটোয়া বাহিনী দিয়ে সাধারণ জনগণকে দাবিয়ে রাখা যাবে না মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘সময় এখন জনগণের। আমরা নিশ্চিত, এবার সকল বাধা অতিক্রম করে সারাদেশে সাহসী জনতা ধানের শীষের বিজয় ছিনিয়ে আনবে’।
সারাদেশে নৌকাডুবির আওয়াজ উঠেছে মন্তব্য করে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘এখন পতনের ক্ষণগননা চলছে। তাই পলায়নপর সরকার নানামুখী ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট এবং ২০ দলীয় জোট নির্বাচনে অংশ নেয়ার ঘোষণা দেয়ার পরই চরম দুশ্চিন্তায় পড়ে গেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। একাধিক গোয়েন্দা সংস্থার মাধ্যমে তারা জানতে পেরেছে ক্ষমতা এবার হাতছাড়া হয়ে যাবে।’
রিজভী বলেন, ‘আমাদের কাছে প্রমাণসহ তথ্য আছে, গত ১০ ডিসেম্বর সোমবার পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের কতিপয় নেতাদের নিয়ে একটি গোপন বৈঠক হয়েছে। এ বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে নির্বাচনি প্রচারণায় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের লোকদেরকে মাঠে নামাতে সর্বোচ্চ পদক্ষেপ নেওয়া। একটি পর্যায়ে তারা নিজেরাই সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের লোকদের ওপর হামলা চালাবে। প্রয়োজনে বড় ধরনের নাশকতাও করতে পারে। পরে এসব হামলা ও নাশকতার দায়ভার চাপাবে বিএনপি ও ঐক্যফ্রন্টের ওপর।’
এসব ঘটনার মাধ্যমে তারা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে বোঝানোর চেষ্টা করবে যে, যারা এখনই সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের লোকদের ওপর হামলা করতে পারে তারা ক্ষমতায় আসলে পরিস্থিতি কী হবে?, যোগ করেন রিজভী।
বিএনপিকে বেকায়দায় ফেলার জন্য যা যা করার দরকার আওয়ামী লীগ তাই করবে অভিযোগ করে তিনি বলেন বলেন, ‘পরিস্থিতি অনুকূলে না থাকলে বিভিন্ন অজুহাতে নির্বাচন বানচালও করে দিতে পারে তারা। সেই কারণে আমরা গতকাল দলের পক্ষ থেকে আজ-ই সেনা মোতায়েনের দাবি করেছিলাম। কিন্তু আমাদের দাবির ঘণ্টা খানেক পরেই তড়িঘড়ি করে ভোটের পাঁচ দিন আগে সেনা মোতায়েনের ঘোষণা দিল নির্বাচন কমিশন। এই সময়ের মধ্যে তারা নির্বাচনী মাঠ বিরান ভূমিতে পরিণত করবে আওয়ামী চেতনায় সাজানো আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর দ্বারা।’
‘তবে আমরা সকল বাধা অতিক্রম করে নির্বাচনের দিন পর্যন্ত ভোটের লড়াই করে যাবো। জনগণই সকল ক্ষমতার উৎস। জনগণই আমাদের শক্তি’— বলেন রিজভী।
সারাবাংলা/এজেড/এসএমএন