Saturday 14 Jun 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ইন্টারনেটে ধীর গতি ও মোবাইল ব্যাংকিং বন্ধ চায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী


১৩ ডিসেম্বর ২০১৮ ১৭:১২ | আপডেট: ১৩ ডিসেম্বর ২০১৮ ১৭:২৫
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

।। গোলাম সামদানী ও উজ্জল জিসান ।।

ঢাকা: নির্বাচনকালীন সময়ে গুজব মোকাবিলায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোকে কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করার প্রস্তাব করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ইসির সঙ্গে অনুষ্ঠিত সমন্বয় সভায় নির্বাচনের আগে ও পরে ইন্টারনেটের গতি কমিয়ে আনা, মোবাইল ব্যাংকিং বন্ধ, দেশি-বিদেশি পর্যবেক্ষকদের ওপর বিশেষ নজর রাখার সুপারিশ করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১৩ ডিসেম্বর) একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে আইনশৃঙ্খলা বিষয়ক সমন্বয় সভায় উপস্থিত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে এসব সুপারিশ করা হয়েছে।

এছাড়া সভায় নির্বাচনের দিন সাংবাদিকদের ভোট কেন্দ্রে প্রবেশের বিষয়েও কড়াকড়ি আরোপের ওপর পুলিশের পক্ষ থেকে করণীয় নির্ধারণে প্রস্তাবনা দেওয়া হয়েছে। তাছাড়া ভোট চলাকালীন সময় কেন্দ্রের গোপন কক্ষে সাংবাদিকরা ছবি তোলা, ভিডিও করা ও সরাসরি সম্প্রচার করতে না পারে সেজন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার বিষয়টি উঠে আসে। এসব বিষয় চূড়ান্ত করতে শিগগিরই কমিশন থেকে একটি পরিপত্র জারি করা হতে পারে।

বিজ্ঞাপন

বৈঠকে উপস্থিত থাকা একাধিক পুলিশ ও নির্বাচন কমিশনের (ইসি) কর্মকর্তা সারাবাংলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

ভোট কেন্দ্রের ৪০০ গজের মধ্যে মোবাইল ব্যবহার নিষিদ্ধ, মোবাইল নেটওয়ার্কিংয়ের গতি কমানো, ভোটের দুই দিন আগে ইন্টারনেটের গতি কমিয়ে ফোরজি থেকে টুজিতে নামানো, ভোট কেন্দ্রের ৪০০ গজের ভেতরে গণমাধ্যমকর্মীরা যাতে মোবাইল ফোন ব্যবহার করতে না পারে তা নিয়েও আলোচনা হয়। এর মাধ্যমে কমিশন গণমাধ্যম আইনের কঠোর প্রয়োগ ব্যবহার করতে চান।

সভায় নির্বাচনে কালো টাকার ব্যবহার বন্ধে ভোটের তিন দিন আগে মোবাইল ব্যাংকিং কার্যক্রম বন্ধ করার প্রস্তবনা দেয়া হয়। এই প্রস্তাবের পক্ষে যুক্তি দেওয়া হয় নির্বাচনকালীন সময়ে বিদেশ থেকে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে টাকা আসতে পারে। এসব টাকা নির্বাচনকে প্রভাবিত করতে পারে। এক্ষেত্রে ব্যবস্থা নিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ইসিকে অনুরোধ করেছেন।


বৈধ অস্ত্রধারী, শুধুমাত্র প্রার্থীরা নিরাপত্তার স্বার্থে নিজের কাছে রাখতে পারবে তবে ব্যবহার করতে পারবে না। ভোটের এক সপ্তাহ আগে বৈধ সব অস্ত্র (প্রার্থী ব্যতীত) জমা দিতে হবে। সেনাবাহিনীর মোতায়েনের বিষয়ে সভায় দুই ধরনের বক্তব্য উঠে এসেছে। ইসির পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী ২৪ ডিসেম্বর থেকে ১ জানুয়ারি পর্যন্ত সেনা মোতায়েনের সিদ্ধান্ত ছিল। সভায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একটি পক্ষের দাবি, নয় দিনের চেয়ে সেনা মোতায়েন বাড়ানো হোক। আরেক পক্ষের দাবি, সেনাবাহিনী মোতায়েনের সময় কমিয়ে বরং বিজিবিকে আরও আগে নামানো হোক।

রোহিঙ্গা বিষয়েও আলোচনা হয় সভায়। রোহিঙ্গারা নির্বাচনে প্রভাবিত হতে পারে। সেজন্য বিশেষ নজরদারি বাড়াতে হবে। কমিশনার রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমার কাছে ২৪ ঘণ্টা ফোন আসছে। বেশিরভাগই বলেন, স্যার ভোট দিয়ে বাসায় ফিরতে পারবো কিনা? ভোটারদের এই আশঙ্কা রাখা যাবে না। এটা দূর করতে হবে আপনাদের।’

সভায় কমিশনার কবিতা খানম বলেন, ‘গতকাল (১২ ডিসেম্বর) ঢাকা-১ আসনের প্রার্থীকে উঠিয়ে নিয়ে যাওয়া হলো। রিটার্নিং কর্মকর্তাকে ফোন করে জানতে চাইলে তিনি নাকি কিছু জানেন না। আপনার প্রার্থীকে তুলে নিয়ে গেলো আপনি কিছুই জানেন না। তাহলে এতো সমন্বয়হীনতা নিয়ে আপনারা কাজ করছেন কিভাবে?’

কবিতা খানম আরও বলেন, ‘আগামী ২০ ডিসেম্বরের পর পরিস্থিতি আরও বেশি খারাপ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। ওই সময়টাতে আপনাদের অধিক ধৈর্য ধারণ করতে হবে। মনে রাখতে হবে, ফৌজদারি অপরাধ আর আচরণবিধি এক নয়। আপনাদের ছোট্ট একটা ভুলের কারণে অনেক কিছু ঘটে যেতে পারে।’

আগামী ১৭ ডিসেম্বর প্রধান নির্বাচন কমিশনার রাঙ্গামাটি যাবেন, এরপর ১৮ ডিসেম্বর যাবেন চট্টগ্রাম। সেখানে তিনি প্রার্থী ও ভোটারদের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন বলেও জানান তিনি।

অন্যদিকে কমিশনার রফিকুল ইসলাম তার কার্যালয়ে সাংবাদিকদের বলেন, ‘আজকের সভায় অনেক বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তবে চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। এ নিয়ে গণমাধ্যমের উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই। সভার প্রস্তাবগুলোর বিষয়ে কমিশন বসে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে।’

সারাবাংলা/জিএস/ইউজে/এমও

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর