স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে সাদের পক্ষ-বিপক্ষের মুরব্বিরা
১১ জানুয়ারি ২০১৮ ১৫:৫৪
স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
ঢাকা : ভারতীয় উপমহাদেশের তাবলীগ জামাতের মুরব্বি মাওলানা সাদ কান্ধলভির ইজতেমায় অংশগ্রহণ নিয়ে তাবলীগ জামাতের দুইমতে বিভক্ত হয়ে যাওয়া মুরব্বিরা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও ধর্ম সচিবের সঙ্গে বৈঠকে বসেছেন।
বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টার দিকে সাদের বিরোধীপক্ষ বাংলাদেশ কওমী মাদরাসা বোর্ডের সহ-সভাপতি মাওলানা আশরাফ আলীর নেতৃত্বে ১৫-২০ জনের একটি প্রতিনিধি দল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আসেন। তাদের সঙ্গে আরও উপস্থিত ছিলেন আওয়ালে সুন্নত ওয়াল জামাতের মহাসচিব মুফতি মিজানুর রহমান।
পরে মাওলানা সাদের পক্ষে থাকা তাবলীগ জামায়াত কাকরাইলের শুরা সদস্য মাওলানা ওয়াসিব যোগ দেন।
বুধবার বেলা ১২ টায় মাওলানা সাদ হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান। তবে আগে থেকেই তার বিপক্ষের মুসল্লিরা বিমানবন্দরের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করায় তিনি বের হতে পারেননি। পরে পুলিশি নিরাপত্তায় বিকেল পৌনে ৪টার দিকে তাকে কাকরাইল মসজিদে নেওয়া হয়। তিন স্তর বিশিষ্ট নিরাপত্তায় এখন তিনি সেখানেই রয়েছেন।
এরপর ওই দিন সন্ধ্যায় সাদ এর বিপক্ষের মুসল্লিরা কাকরাইল মসজিদের কাছে প্রধান বিচারপতির বাস ভবনের সামনের রাস্তায় প্রায় ১০ মিনিট তারা মিছিল করে। এক ট্রাক ভর্তি মুসল্লি এ সময় স্লোগান দেয় ‘সা’দ তুমি ফিরে যাও’। এরপর পুলিশ তাদের সঙ্গে আলোচনা করে সরে যেতে বললে মুসল্লিরা কাকরাইল মসজিদের সামনে থেকে সরে যায়।
বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১২ টায় রাজধানীর বায়তুল মোকাররম মসজিদের সামনে এক সমাবেশে তাকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়।
তাবলীগ জামাত সূত্রে জানা যায়, বাংলাদেশ তাবলীগ জামাত পরিচালনা কমিটির শূরা সদস্য ১১ জন। এর মধ্যে সৈয়দ ওয়াসিফুল ইসলাম ও হাফেজ মাওলানা জুবায়েরের মধ্যে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে দ্বন্দ্ব ও গ্রুপিং ছিল। এরকম পরিস্থিতিতে মাওলানা সাদের দেওয়া, স্মার্ট ফোন বহন এবং আরবি শিক্ষার বিনিময়ে টাকা নেওয়া হারাম ফতোয়ার পরে সে দ্বন্দ্ব আরও বেড়ে যায়।
তাবলীগ জামাতের বিরোধ নিয়ে এই দুই পক্ষের মধ্যে মামলা-পাল্টা মামলা দেওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল তাদের নিয়ে কয়েক দফা বৈঠকও করেছেন।
এর আগে গত ১৪ নভেম্বর কাকরাইল মসজিদে ওয়াসিফুল ও জুবায়ের গ্রুপ একে অন্যের বিরুদ্ধে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ করে। তখন দুই পক্ষের মধ্যে প্রথমে ধাক্কাধাক্কি, এরপর হাতাহাতি হয়।
এখন ইজতেমায় মাওলানা সাদ কান্ধলভির অংশ নেওয়া নিয়ে আবার দুই পক্ষ পাল্টাপাল্টি অবস্থান করছেন।
এদিকে বৃহস্পতিবার দুপুরে মহাখালির আইপিএইচ স্কুল ও কলেজের পঞ্চাশ বছর পূর্তির অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে জানান, মাওলানা সাদ ইজতেমায় অংশ নেবেন কি না তা তাবলীগ জামাতের মুরব্বিরা সিদ্ধান্ত নেবেন; সরকার শুধু দেখবে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ঠিক আছে কিনা।
সারাবাংলা/জিএস/এমএ/একে