Sunday 29 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ঢাকা-১৭: ভোট চায় ফারুক, পার্থ চায় দোয়া


১৫ ডিসেম্বর ২০১৮ ০০:০৩

।। আব্দুল জাব্বার খান, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট,

ঢাকা: রাজধানী ঢাকার অভিজাত এলাকা গুলশান, বনানী, ক্যান্টনমেন্ট নিয়ে গঠিত ঢাকা-১৭ আসনে এখনও জমে উঠেনি নির্বাচনী প্রচারণা। এ আসনের ভাষানটেক অংশে নৌকার পোস্টারের কিছুটা দেখা মিললেও বিএনপিসহ অন্য প্রার্থীদের পোস্টার দেখা যায়নি। মাঠে নেই প্রচার- প্রচারণাও।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতীক বরাদ্দের পর শুক্রবার জুম্মার নামাজের পর থেকে নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করেন দেশের প্রধান দুই রাজনৈতিক দলের প্রার্থীরা। নৌকার প্রার্থী আলহাজ আকবর হোসেন পাঠান (চিত্র নায়ক ফারুক) ভাষানটেকের কুচক্ষেত বাজার থেকে প্রচারণা শুরু করেন। এ সময় তিনি ভোটারদে কাছে গিয়ে নৌকা মার্কায় ভোট চান।

অন্যদিকে, ধানের শীষের প্রার্থী আন্দালিব রহমান (পার্থ) বনানী চেয়ারম্যান বাড়ী রোড থেকে নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করেন। এ সময় তিনি আশে পাশের দোকান, শপিংমলে গিয়ে ভোটারদের কাছে দোয়া প্রার্থনা করেন। আগামী ৩০ ডিসেম্বর ভোটের দিন সবাইকে ভোট কেন্দ্রে যাওয়ার জন্য আহবান জানান।

ঢাকা-১৭ আসন গুলশান, বনানী, ক্যান্টনমেন্ট ও ভাষানটেক এলাকা নিয়ে গঠিত। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ১৫, ১৮, ১৯ ও ২০ নং ওয়ার্ড এবং ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট থানার ক্যান্টনমেন্ট এলাকা এই আসনের মধ্যে রয়েছে। এখানে মোট ভোটার সংখ্যা ৩ লাখ ১৩ হাজার ৯৯৮ জন।

এ আসনটিতে নৌকা প্রতীক নিয়ে লড়ছেন অভিনেতা আকবর হোসেন পাঠান (ফারুক), বিজেপির চেয়ারম্যান আন্দলিব রহমান পার্থ (ধানের শীষ), জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদ (লাঙল) এবং বর্তমান সংসদ সদস্য বিএনএফ প্রেসিডেন্ট এস এম আবুল কালাম আজাদ (টেলিভিশন)।

বিজ্ঞাপন

স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ‘সিংহ মার্কা’য় লড়ছেন সাবেক মন্ত্রী বিএনএ-এর চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার নাজমুল হুদা এবং হাত পাখা প্রতীক নিয়ে প্রার্থী হয়েছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশর মো. আমিনুল হক তালুকদার।

শুক্রবার (১৪ ডিসেম্বর) সরেজমিনে দেখা গেছে, ভাষানটেকের কচুক্ষেত বাজার এলাকায় বিকেল ৩টার পর থেকেই নৌকা প্রতীকের পক্ষে ছোট ছোট মিছিল এসে জমায়েত হয়। এর কিছুক্ষণ পরে নৌকার প্রার্থী অভিনেতা আকবর হোসেন পাঠান (ফারুক) এসে হাজির হন। পরে মিছিলসহ মার্কেটে ভোটারদের কাছে গিয়ে গিয়ে ভোট প্রার্থনা করছেন। তাকে ঘিরে উৎসুক জনতা ভিড় জমায়।

এ সময় নৌকার জয় অবধারিত উল্লেখ করে তিনি বলেন, এই নির্বাচনে ইনশাআল্লাহ নৌকা জয়ী হবে। নৌকার জয় কেউ ঠেকাতে পারবে না। তিনি বলেন, ভোটের মালিক জনগণ। জনগণ চিন্তা করবে দেশের জন্য কে কাজ করে। দেশের জন্য শেখ হাসিনা কাজ করেন। সেজন্য আমাকে প্রশ্ন করলে আমি বলবো, নৌকার জয় অবধারিত।

চিত্র নায়ক ফারুক বলেন, নৌকা হলো গণমানুষের প্রতীক। স্বাধীনতাকামী মানুষের প্রতীক। এই নৌকাই একাত্তরে দেশকে স্বাধীনতা এনে দিয়েছে। এটা ভুলে গেলে চলবে না। এটা স্বাধীনতার মাস। এই মাসে মনে করতে হবে বঙ্গবন্ধুর সেই ভাষণের কথা। এ মাসে আমাদের আবারও জয় হবে।

অন্যদিকে, বনানীর চেয়ারম্যানবাড়ী রোড থেকে গোপনে নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করেন ধানের শীষের প্রার্থী আন্দালিব রহমান (পার্থ)। স্ত্রী, কন্যা ও হাতে গোনা কয়েকজন নেতা-কর্মী নিয়ে দোকানে দোকানে গিয়ে নির্বাচনী লিফলেট দিয়ে ভোট ও দোয়া প্রার্থনা করেন। তবে ভোটারদের কাছে ভোটের চেয়ে দোয়াই বেশি চাচ্ছেন।

এ সময় নির্বাচনে তার প্রত্যাশা কি জানতে চাইলে কোন জবাব না দিয়ে দ্রুত স্থান ত্যাগ করে চলে যান পার্থ। দ্রুততার সঙ্গে স্থান ত্যাগ করার কারণ জানতে চাইলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তার এক সহকারী (পিএস) বলেন, পুলিশের গ্রেফতার এড়িয়ে যতটা কাজ করা যায় ততই ভালো। এ কারণেই তিনি দ্রুত স্থান ত্যাগ করেছেন। মাত্র ২০ মিনিটের মধ্যে বনানী চেয়ারম্যানবাড়ী রোড থেকে বনানী বাজার, কবরস্থান এলাকাসহ বেশ কিছু জায়গায় তিনি গিয়েছেন বলেও জানায় তার এপিএস। আগামীকাল কোন কোন এলাকায় প্রচারণায় যাবেন সেটিও জানা যায়নি। এসব এলাকার ভোটারদের কাছে নিরাপদে ভোট কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দেওয়ার পরিবেশটাই এখন প্রধান দাবি। ভোটাররা কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিতে চান।

বিজ্ঞাপন

ভাষানটেক বাজারের মুদি দোকানদার আমজাদ আলী সারাবাংলাকে বলেন, ‘যারা উন্নয়ন করবে আমরা তাদেরকে ভোট দিব। ভালো প্রার্থীদের ভোট দিব।’
যার তার কথায় যে কাউকে ভোট দেবেন না বলে সাফ জানিয়ে দেন মুদি দোকানদার আমজাদ আলী।

স্থানীয় ডাব বিক্রেতা সেলিম আকন্দ বলেন, ‘গতবার ভোট দিবার পারি নাই। এবারতো ভোট দিতে চাই। সরকার যদি আমাগো ভোট দিবার সুযোগ দেয় অবশ্যই কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিব।’

বনানী বাজারের কাপড়ের দোকানদার শফিকুল ইসলাম বলেন, সংঘাত ছাড়া সুষ্ঠু নির্বাচন হোক এটা আমরা চাই। নিরাপদে ভোট দিতে পারলেই আমাদের শান্তি।

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র জিসান। এবার নতুন ভোটার হয়েছেন। ভোট কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দেওয়ার ইচ্ছা তার। আগ্রহ নিয়ে ৩০ ডিসেম্বর দিনটির অপেক্ষা করছে জানিয়ে জিসান বলেন, এবার প্রথম ভোট দিব। আমরা সব বন্ধুরা মিলে ভোট কেন্দ্রে যাব। আশা করি ভোট সুষ্ঠু হবে।

সারাবাংলা/এজেডকে/এমএইচ/জেআইএল

একাদশ জাতীয় নির্বাচন নির্বাচনী প্রচারণা ভোটার

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর