‘বিজয় দিবস ও নির্বাচনে নাশকতার উদ্দেশ্যে বোমা তৈরি করে’
১৫ ডিসেম্বর ২০১৮ ২০:০৩ | আপডেট: ১৫ ডিসেম্বর ২০১৮ ২০:০৪
।। সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট ।।
ঢাকা: ‘রাজধানীর ওয়ারী এলাকার গোয়ালঘাট লেনের ১২/১ ছাত্তার মার্কেটের একটি দোকান থেকে পুলিশ যে বোমা ও বিস্ফোরক দ্রব্য উদ্ধার করেছে, তা ১৬ ডিসেম্বরে (বিজয় দিবস) ও নির্বাচনের সময় নাশকতার কাজে ব্যবহার করার জন্য রাখা হয়েছিল বলে জানিয়েছে পুলিশ।’
শনিবার (১৫ ডিসেম্বর) বিকেল সাড়ে ৪টায় ঘটনাস্থলে এক সংবাদ সম্মেলনে ওয়ারী বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মো. ফরিদ উদ্দিন সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
ডিসি বলেন, ‘গতকাল রাত ১১টার দিকে মোবাইল ফোনে একটি কল আসে। বলা হয়, ছাত্তার মার্কেটের নাদিম মোটরস নামে একটি দোকানে বোমা রাখা আছে। সামনে নির্বাচনে নাশকতায় ব্যবহারের জন্য রাখা হয়েছে। আপনারা ব্যবস্থা নেন। ওই সংবাদের ভিত্তিতে গতকাল রাতেই পুলিশ আসে এবং তল্লাশি চায়িয়ে কিছু পায়নি।’
‘আজ শনিবার আবারও একজন সহকারী কমিশনারের নেতৃত্বে সকাল থেকেই অভিযান শুরু হয়। যে দোকানের নাম বলা হয়েছিল সেখানে কিছু পাওয়া যায়নি। তার পাশের দোকানের তালা ভেঙে তল্লাশি চালিয়ে বোমা সদৃশ একটি বস্তু পাওয়া যায়। পরে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিটকে খবর দেওয়া হয়। তারা এসে সেটি উদ্ধার করে পরে তা নিস্ক্রিয় করে। ওই দোকান থেকে গান পাউডারসহ অন্যান্য বিস্ফোরক দ্রব্যও পাওয়া যায়।’
ডিসি বলেন, ‘বোমাটি ছিল অত্যান্ত শক্তিশালী। যেকোনো সময় বিস্ফোরিত হতে পারত। কারণ বোমার মধ্যে ডিটনেটর পাওয়া গিয়েছে। বোমার আকার ও তার ভেতরের সরঞ্জামাদি দেখে মনে হয়েছে বোমাটি ছিল উচ্চ শক্তিধর। একটি গ্রেনেডের সমান। এর নাম আইইডি।’
ডিসি আরও বলেন, দোকানের মালিক একরামুল হক ও মার্কেটের মালিক হাসান আলী জনির সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। এর থেকে কেউ বোমা রেখে গেছেন কি না সেটাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এ ছাড়া নাদিম মোটরসে তল্লাশি চালিয়ে দেশীয় পিস্তল তৈরির কিছু সরঞ্জামাদি পাওয়া গেছে। সব মিলিয়ে তদন্ত সাপেক্ষে বিস্তারিত বেরিয়ে আসবে বলে জানান, উপ কমিশনার ফরিদ উদ্দিন।
মার্কেটের মালিক হাসান আলী জনি বলেন, ‘গত দুই বছর ধরে ভাড়া দেয় না একরাম। ভাড়া চাইতে গেলেই পিস্তল দেখিয়ে ভয়-ভীতি দেখায়। হাজী ইসলামের লোক বলে এই এলাকায় চাঁদাবাজি করে। ভাড়া দেয় না বলেই সিভিল আদালতে মামলা করেছি।’
একই মার্কেটের মোটর পার্টস দোকানের একজন কর্মচারী নাম প্রকাশ না করার শর্তে সারাবাংলাকে বলেন, ‘বিএনপির স্থানীয় নেতা ওমর হাসান ও আশরাফুন্নেছার কাছ থেকে এক লাখ করে মোট দুই লাখ টাকা নিয়েছেন। সবাই বলে ওই দুই নেতাকে কি যেন দিতে চেয়েছেন একরাম। আজ পুলিশ এসে একরাম মোটরসের কর্মচারী সজলকে আটক করে নিয়ে গেছে।’ তবে কাউকে আটকের বিষয়ে নিশ্চিত করেনি পুলিশ।
স্থানীয় বাসিন্দা জোবায়ের মাহবুব বলেন, ‘রাতভর দোকান খুলে কি করে জানি না। মার্কেটের সবার দোকান বন্ধ থাকে শুধু তার দোকান খোলা থাকে। ভয়ে কেউ তাকে কিছু বলে না।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে একরাম হোসেনকে কল করা হলে তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
সারাবাংলা/ইউজে/এমআই