।। জোসনা জামান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট ।।
ঢাকা: নৌকা প্রতীকের পোস্টারে ছেয়ে গেছে গোটা মিরপুর ও কাফরুলের অলিগলি, রাস্তাঘাটসহ সব জায়গা। এর বাইরে অন্য প্রতীকের কিছু প্রার্থীর পোস্টার দেয়ালে থাকলেও নৌকার পোস্টারের দাপটে সেগুলো থেকে যাচ্ছে দৃষ্টির আড়ালে। এই এলাকায় নৌকার প্রচারের ধাক্কায় টিকতে পারছেন না অন্যান্য প্রতীকের প্রার্থীরা।
ঢাকা-১৫ আসনের অধীন মিরপুরের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে এমন চিত্র। এই এলাকার রাস্তাঘাটসহ সব জায়গাতেই শোভা পাচ্ছে নৌকা প্রতীকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আলহাজ্ব কামাল আহমেদ মজুমদারের পোস্টার। এই আসনে আরও ৯ জন প্রার্থী ভোটের লড়াইয়ে থাকলেও তাদের পোস্টার তেমন একটা চোখে পড়ছে না কোথাও। ভোটাররাও অধিকাংশ প্রার্থীর সঙ্গেই পরিচিত নন বলে জানালেন।
কামাল মজুমদার ছাড়া এই আসনের অন্য প্রার্থীরা হলেন— জামায়াতে ইসলামীর ডা. মো. শফিকুর রহমান (ধানের শীষ), জাতীয় পার্টির সামসুল হক (লাঙ্গল), বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির আহাম্মদ সাজেদুল হক (কাস্তে), বিকল্পধারা বাংলাদেশের এইচ এম গোলাম রেজা (কুলা), ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্ট-বিএনএফের এস এম ইসলাম (টেলিভিশন), জাকের পার্টির আব্দুল মান্নান মিয়া (গোলাপ ফুল), প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক দলের (পিডিপি) সামছুল আলম চৌধুরী (বাঘ), ইসলামি আন্দোলন বাংলাদেশের হেমায়েত উল্লাহ কাসেমী (হাতপাখা) ও বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির সাইফুল ইসলাম (কাঁঠাল)।
তবে নৌকা প্রতীকের পোস্টারের ফাঁকে ফাঁকে এসব প্রার্থীর পোস্টারের দেখা মেলা ভার। এর মধ্যে অবশ্য লাঙ্গল প্রতীকে মোহাম্মদ সামসুল হকের কিছু পোস্টার চোখে পড়ে। তার পোস্টারে স্লোগান— শান্তির জন্য পরিবর্তন, পরিবর্তনের জন্য জাতীয় পার্টি। কিছু পোস্টার দেখা গেল ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী মুফতি হেমায়েত উল্লাহ কাসেমীরও। হাতপাখা প্রতীকের পোস্টারগুলোতে নির্বাচনি স্লোগান— সন্ত্রাস, মাদক, দুর্নীতিমুক্ত ও পরিচ্ছন্ন একটি আদর্শ সমাজ গড়ার সুযোগ দিন।
এই আসনে জাকের পার্টির প্রার্থী মুক্তিযোদ্ধা আবদুল মান্নান মিয়া। গোলাপ ফুল প্রতীকে তার সামান্য কিছু পোস্টার রয়েছে এখানে সেখানে। ‘দেশের গণতন্ত্র ও উন্নয়নের ধারা গতিশীর রাখতে এবং আর্ত মানবতার কল্যাণে অর্থনৈতিক মুক্তির জন্য একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোট দিন’— এমন আহ্বানই জানানো হয়েছে জাকের পার্টির পোস্টারে।
বাঘ মার্কা নিয়ে ঢাকা-১৫তে নির্বাচন করছেন প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক দলের (পিডিপি) সামছুল আলম চৌধুরী। তবে তিনি এখনও পোস্টারই ছাপাতে পারেননি। বিকল্প হিসেবে নির্বাচনি প্রচারণার জন্য ভোটারদের মধ্যে কেবল লিফলেট বিলি করছেন তিনি। মিরপুর ১০ নম্বর গোলচত্বর এলাকায় একটি মাইক্রোবাসে করে প্রচারণা চালাচ্ছিলেন তিনি। এসময় তিনি সারাবাংলাকে বলেন, ‘গরীব মানুষ। তাই টাকার অভাবে পোস্টার ছাপাতে পারিনি।’
প্রচারে কোনো ধরনের বাধার মুখে পড়ছেন কি না— জানতে চাইলে সামছুল আলম বলেন, ‘প্রথম দিকে কিছুটা সমস্যা থাকলেও এখন আর নেই। আমরা প্রতিহিংসার রাজনীতিতে বিশ্বাস করি না। আমরা পরিবর্তন চাই, উই ওয়ান্ট চেঞ্জ— এটাই আমাদের স্লোগান।’ কথা বলতে বলতেই ভোটারদের মধ্যে বাঘ মার্কা লিফলেট ছড়িয়ে দিচ্ছিলেন তিনি। বিশেষ করে তরুণ ভোটারদের লক্ষ করে বলছিলেন, এলোমেলো এলাকাকে পরিকল্পিত এলাকা গড়তে বাঘ মার্কায় ভোট দিন।
এদিকে, সোমবার (১৭ ডিসেম্বর) দিনজুড়ে থেকেই হঠাৎ বৃষ্টিতে নির্বাচনি প্রচারণায় কিছুটা হলেও বাধার মুখে পড়েছেন প্রার্থীরা। গত কয়েকদিনের মতো তাই তারা এলাকা চষে বেড়াতে পারেননি। নৌকার প্রার্থী কামাল আহমেদ মজুমদারও এদিন সিটি করপোরেশনের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের অল্প কিছু স্থানে প্রচারণা চালিয়েছেন।
সারাবাংলা/জেজে/টিআর
