Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ব্রেক্সিট ইস্যুতে থেরেসা মে’র বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব


১৮ ডিসেম্বর ২০১৮ ০৫:৫২

।। আন্তর্জাতিক ডেস্ক ।।

ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে’র বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব এনেছেন বিরোধী দলীয় নেতা জেরেমি করবিন। ব্রেক্সিট ইস্যুতে ব্রিটিশ পার্লামেন্টে ভোট ১৪ জানুয়ারি পর্যন্ত পিছিয়ে দেওয়ায় লেবার পার্টির নেতা করবিন এ প্রস্তাব আনেন। তবে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে বলা হয়েছে, অনাস্থা প্রস্তাবকে আমলে আনবে না সরকার।

বিবিসির খবরে বলা হয়, এর আগে গত ১১ ডিসেম্বর ব্রেক্সিট ইস্যুতে ব্রিটিশ পার্লামেন্টে ভোট হওয়ার কথা ছিল। তবে থেরেসা মে স্বীকার করে নেন, ওই সময় ভোট হলে তিনি হেরে যেতেন। সে কারণেই তিনি ভোট পিছিয়েছেন। ওই ভোটে হেরে গেলে থেরেসা মে’কে ফের ব্রেক্সিট নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সঙ্গে আলোচনায় বসতে হতো।

এরই পরিপ্রেক্ষিতে লেবার পার্টির নেতা করবিন সোমবার (১৭ ডিসেম্বর) ব্রিটিশ পার্লামেন্টে বলেন, এই ভোট মধ্য জানুয়ারি পর্যন্ত পিছিয়ে দেওয়া কোনোভাবেই সমর্থনযোগ্য নয়। তিনি আরও বলেন, এ সিদ্ধান্তের মাধ্যমে থেরেসা মে ব্রিটেনকে ‘জাতীয় সংকটে’র দিকে ঠেলে দিলেন।

ব্রিটিশ পার্লামেন্টে অনাস্থা প্রস্তাব এনে করবিন সংসদ সদস্যদের প্রতি আহ্বান জানান, ব্রেক্সিট ইস্যুতে প্রধানমন্ত্রী হাউজ অব কমন্সে অর্থপূর্ণ একটি ভোট আয়োজনে ব্যর্থ হওয়ায় তার প্রতি অনাস্থা জ্ঞাপন করা হোক। ব্রেক্সিট ভোট না হওয়ার কারণে তিনি ব্রিটিশ সরকার নয়, বরং ব্যক্তিগতভাবে থেরেসা মে’কেই দায়ী করেন।

করবিনের এ বক্তব্যের পর ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ১০ ডাউনিং থেকে বলা হয়েছে, এ ধরনের ‘তুচ্ছ রাজনৈতিক খেলা’র সঙ্গে জড়াবেন না ব্রিটিশ মন্ত্রিরা।

বিজ্ঞাপন

বিবিসির রাজনৈতিক বিষয়ক সম্পাদক লরা কুয়েনসবার্গ বলেন, থেরেসা মে’র জন্য এই অনাস্থা প্রস্তাব বিব্রতকর। তবে ঘটনাপ্রবাহ বলছে, ব্রিটিশ মন্ত্রীরা এই অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে পার্লামেন্টে কোনো ধরনের বিতর্কের জন্য সময় বরাদ্দ করতে সম্মত হবেন না।

কুয়েনসবার্গ বলেন, প্রধানমন্ত্রী বরং তাকে ব্যক্তিগতভাবে ব্রেক্সিট ভোট পিছিয়ে দেওয়ার জন্য দায়ী না করে ব্রিটিশ সরকারকেই এর দায়ভার চাপিয়ে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন লেবার পার্টির প্রতি। এর মাধ্যমে তিনি চতুরতার সঙ্গে বল লেবার পার্টির কোর্টেই ফেরত পাঠিয়েছেন। আর সেক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রীর বদলে গোটা সরকারের প্রতিই অনাস্থা প্রস্তাব আনলে এবং সেই প্রস্তাব পাস হলে আগাম নির্বাচনে যেতে হতো ব্রিটেনকে।

স্কটিশ ন্যাশনাল পার্টি, দ্য লিব ডেমস, প্লাইড সিমরু ও গ্রিন পার্টির পক্ষ থেকে লেবার পার্টিকে চাপ দেওয়া হয়েছিল, করবিন যেন কেবল থেরেসা মে’র বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব না এনে ব্রিটিশ সরকারের বিরুদ্ধেই অনাস্থা প্রস্তাব আনেন। তবে করবিন জানিয়েছেন, তিনি ব্রেক্সিট ইস্যুতে চলতি সপ্তাহেই ভোট আয়োজনের জন্য চাপ প্রয়োগ করতে থেরেসা মে’র বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব এনেছেন।

এর আগে, আগামী বছরের ২৯ মার্চের মধ্যে ব্রেক্সিট কার্যকর করতে, অর্থাৎ ইইউ থেকে ব্রিটেনের বেরিয়ে যাওয়ার প্রক্রিয়া কার্যকর করতে বিভিন্ন শর্ত চূড়ান্ত করে ভোট প্রস্তাব এনেছিলেন থেরেসা মে। ওই প্রস্তাবে ব্রেক্সিটের পর ইইউ ও ব্রিটেনের সম্পর্কের রূপরেখাও অন্তর্ভুক্ত ছিল। ব্রিটিশ পার্লামেন্টে সংসদ সদস্যদের অনুমোদন পেলেই কেবল এসব শর্তাবলি কার্যকর হতো।

বিজ্ঞাপন

উল্লেখ্য, ইইউয়ের ভার যুক্তরাজ্যকে বইতে হচ্ছে— এমন অভিযোগ ব্রিটিশ নাগরিকদের পুরনো। ইইউতে ব্রিটিশরা সুখী নয়— এমন বিতর্ক নিরসনে কনজারভেটিভ পার্টির নেতা, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন ২০১৫ তার দ্বিতীয় মেয়াদের নির্বাচনি ইশতেহারে ব্রেক্সিট প্রশ্নে গণভোট ডাকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। নিজে ব্রেক্সিটের বিপক্ষে থাকলেও প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ২০১৬ সালের জুনে ব্রেক্সিট গণভোটের আয়োজন করেন তিনি। ওই গণভোটে দেশটির ৫২ ভাগ লোক ইইউ থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পক্ষে রায় দেন। নিজের অবস্থানের পক্ষে গণভোটের রায় না আনতে পারায় পদত্যাগ করেন ক্যামেরন। তবে সরকারি ও বিরোধী দল জানায়, ব্রিটিশদের চাওয়াকে প্রাধান্য দেওয়া হবে। এদিকে, ক্যামরনের উত্তরসূরী থেরেসা মে’ও ব্রেক্সিটের পক্ষে ছিলেন না। তবে জনমতের বাস্তবায়নেই ব্রেক্সিট বাস্তবায়নে কাজ করে যেতে হচ্ছে তাকে।

সারাবাংলা/টিআর

জেরেমি করবিন থেরেসা মে ব্রেক্সিট

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর