জিডিপি ১১ শতাংশে উন্নীত করা হবে: ইশতেহারে বিএনপি
১৮ ডিসেম্বর ২০১৮ ১২:৩০
।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট।।
ঢাকা: জাতীয় অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির (জিডিপি) হার ১১ শতাংশে উন্নীত করা হবে বলে অঙ্গীকার করা হয়েছে বিএনপি’র নির্বাচনি ইশতেহারে।
মঙ্গলবার (১৮ ডিসেম্বর) সকাল ১১টায় রাজধানীর গুলশানের হোটেল লেকশোরে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে ইশতেহার ঘোষণা করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। মঞ্চে ছিলেন- স্থায়ী কমিটির সদস্য মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
অর্থনীতিকে ফোকাস করে ইশতেহারে বলা হয়েছে, রফতানি প্রবৃদ্ধির হার ৩ গুণ বাড়ানো হবে। রফতানি পণ্যের বহুমুখীকরণ করা হবে। শেয়ারমার্কেট, ব্যাংক ও সামাজিক নিরাপত্তা তহবিলের অর্থ লুটের তিক্ত অভিজ্ঞতা থেকে কেউ যাতে এমন দুর্নীতি করতে না পারে সেজন্য এসব প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা বোর্ডে যোগ্য, সৎ ও দক্ষ ব্যক্তিদের নিয়োগ দেওয়া হবে। ব্যাংক পরিচালনায় রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ বন্ধ করা হবে। অর্থমন্ত্রণালয়ের ব্যাংকিং ডিভিশন বিলুপ্ত করে রাষ্ট্রায়ত্ব ব্যাংক পরিচালনা ও তদারকির ভার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হাতে ছেড়ে দেওয়া হবে।
অঙ্গীকার করা হয়েছে, ক্ষমতা নেওয়ার প্রথম বছরে বিদ্যুৎ ও আবাসিক গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধি করা হবে না। বিদ্যুৎ ও গ্যাসের মূল্যে সকল প্রকার অসঙ্গতি দূর করা হবে।
এছাড়া, অদক্ষ পুরনো বিদ্যুৎ কেন্দ্র অতি জরুরি ভিত্তিতে আধুনিকায়ন এবং পুনর্বাসনের পদক্ষেপ নেওয়া হবে। দেশিয় গ্যাস এবং ফার্নেস-অয়েল-এর ওপর নির্ভলশীলতা কমানো হবে। বিদ্যুৎ সংকট স্থায়ীভাবে নিরসন এবং কার্বন নিঃস্বরণ কমাতে ছোট, মাঝারি ও বৃহদাকার পরিবেশ বান্ধব বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের পাশাপাশি নবায়নযোগ্য জ্বালানী আহরণ বিশেষ করে সৌরশক্তি, বায়ুশক্তি, জিও-থারমাল, সমুদ্র তরঙ্গ, বায়োগ্যাস, বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনসহ নানামুখী পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে বলা হয়েছে ইশতেহারে।
বিভিন্ন খাতের শ্রমিকদের মজুরি বাড়ানো হবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে ইশতেহারে। বলা হয়েছে, দু’বছরের মধ্যে গার্মেন্টস শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি ১২ হাজার টাকা করা হবে। এছাড়া, সকল খাতের শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণ করার কথা বলা হয়েছে।
কৃষি ও শিল্প খাত নিয়ে ইশতেহারে বলা হয়েছে, কৃষক যাতে ফসলের ন্যায্য মূল্য পায় সে ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হবে। কৃষিতে নানা ধরণের ঝুঁকি মোকাবেলায় ভর্তুকি দিয়ে হলেও শস্য, মৎস্য, পোল্ট্রি বীমা চালু করা হবে। গরীব কৃষকের কৃষিঋণের সুদ মওকুফ করা হবে। গ্রাম ও দরিদ্র জনগোষ্ঠিকে কম দামে রেশন দেওয়া হবে। পুনর্বাসন ছাড়া শহরের বস্তিবাসী ও হকারদের উচ্ছেদ করা যাবে না। স্বাস্থ্য বীমার মাধ্যমে শ্রমিকরা মাসে নির্দিষ্ট পরিমাণ প্রিমিয়ামের মাধ্যমে সকল চিকিৎসা সুবিধা পাবেন।
বৈদেশিক কর্মসংস্থান সম্প্রসারণ, ঝুঁকিমুক্ত অভিবাসন নিশ্চিতকরণ ও অভিবাসন ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে সুশাসন প্রতিষ্ঠা করা হবে। প্রবাসীরা যাতে তাদের কষ্টার্জিত আয় বৈধ পথে দেশে পাঠাতে পারে সেজন্য পর্যাপ্ত এক্সচেঞ্জ হাউস/ব্যাংকের সঙ্গে প্রণোদনা সুবিধাসহ রেমিট্যান্স প্রেরণ ব্যবস্থা গড়ে তোলা হবে। বিদেশে বাংলাদেশি দূতাবাসগুলোতে প্রবাসী বাংলাদেশি শ্রমিকদের কল্যাণে যথাযোগ্য ভূমিকা পালন করে তা নিশ্চিত করা হবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
বিদেশফেরত প্রবাসীদের বিমানবন্দরে হয়রানি বন্ধ করা হবে বলেও জানানো হয়েছে ইশতেহারে।
সারাবাংলা/জেএএম