Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

শবরীমালা মন্দিরে প্রার্থনা করলেন ৪ হিজড়া


১৯ ডিসেম্বর ২০১৮ ১৬:৩৭

।। আন্তর্জাতিক ডেস্ক ।।

সুপ্রিম কোর্টের আদেশ সত্ত্বেও ভারতের কেরালার বিখ্যাত শবরীমালা মন্দিরে প্রার্থনার জন্য প্রবেশ করতে পারেননি নারীরা। তবে ওই মন্দিরেই এবার আদালতের আদেশের সূত্র ধরে প্রার্থনা জানিয়ে এসেছেন চার হিজড়া।

বিবিসির খবরে বলা হয়, হিজড়াদের মাসিক হয় না বলে ওই মন্দিরে তাদের প্রবেশাধিকার ছিল। কিন্তু ১০ থেকে ৫০ বছর বয়সী, অর্থাৎ ঋতুবতী নারীদের জন্য ওই মন্দিরের দরজা ছিল বন্ধ। গত ২৮ সেপ্টেম্বরের রায়ে আদালত নারীদের জন্যও ওই মন্দিরকে উন্মুক্ত রাখার আদেশ দিলে হিজড়াদের জন্যও বন্ধ হয়ে যায় মন্দিরের দরজা।

এর মধ্যে, রোববার (১৬ ডিসেম্বর) এক দল হিজড়া ওই মন্দিরে প্রার্থনা জানানোর জন্য উপস্থিত হন। কিন্তু নিরাপত্তাজনিত কারণে তাদের প্রবেশ করতে দেয়নি স্থানীয় পুলিশ। কেউ কেউ বলেন, হিজড়ারা পুরুষদের পোশাক পরলে হয়তো তাদের প্রবেশ করতে দেওয়া যাবে।

তবে এ পরামর্শ কানে নেননি হিজড়াদের ওই দল। তারা আদালতের শরণাপন্ন হন। আদালত আদেশে বলেন, হিজড়া সম্প্রদায়ের সদস্যরাও চাইলে শবরীমালা মন্দিরে প্রার্থনা করতে পারবেন। ওই সময় মন্দির কর্তৃপক্ষও জানায়, হিজড়ারা লিঙ্গান্তরিত নারী হওয়ায় এবং তাদের সাধারণ নারীদের মতো তাদের মাসিক হয় না বলে তাদের মন্দিরে ঢুকে প্রার্থনা করতে বাধা নেই।

এরপর মঙ্গলবার চার হিজড়ার ওই দলটি শবরীমালা মন্দিরে প্রবেশ করেন। তারা হলেন— ত্রুপ্তি (৩৩), অনন্যা (২৬), রেনজিমল (৩০) ও অবন্তিকা (২৪)। তাদের পরনে ছিল কালো রঙের শাড়ি।

মঙ্গলবার শবরীমালা মন্দিরে প্রার্থনা জানানোর পর ত্রুপ্তি বলেন, তারাও হিন্দুত্ববাদের অংশ এবং তারাও অন্যদের মতো সম্মান প্রত্যাশা করেন।

বিজ্ঞাপন

ত্রুপ্তি বলেন, দেবতা আইয়াপ্পার কাছে প্রার্থনা করে আমরা খুবই আনন্দিত। আমরা তার ভক্ত। অন্য তীর্থযাত্রীরা যেমন সব নিয়ম অনুসরণ করে থাকেন, আমরাও তেমনি সব নিয়ম অনুসরণ করেই প্রার্থনা করেছি।

পুলিশ জানিয়েছে, ওই চার হিজড়ার সঙ্গে প্রায় ২০ জন পুলিশ কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন। তবে তাদের মন্দিরে প্রবেশ নিয়ে কোনো ধরনের প্রতিবাদ বা প্রতিরোধের মুখে পড়তে হয়নি।

উল্লেখ্য, সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১৫০০ ফুট উঁচুতে পাহাড়ের মাথায় অবস্থিত ৮শ বছরের পুরোনো শবরীমালা মন্দিরে পৌঁছনোর রাস্তা ধরে প্রতিবছরই ট্রেক করে লাখ লাখ পুরুষ ভক্ত। এ ধর্মীয় রীতি পালনের আগে ভক্তরা ৪১ দিন উপবাসও করে। কিন্তু বহু বছর ধরেই মন্দিরটিতে ১০ থেকে ৫০ বছর বয়সী, অর্থাৎ মাসিক হয় এমন কোনো নারীকে ঢুকতে দেওয়া হতো না।

মন্দির কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, এই মন্দিরের দেবতা আয়াপ্পা ছিলেন একজন চিরকুমার। এ কারণেই মাসিক হয়, এমন নারীদের স্থান এই মন্দিরে হবে না।

এ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে আসছিলেন নারীরা। অবশেষ গত ২৮ সেপ্টেম্বর নারীদের মৌলিক অধিকারের বিষয়টি সমুন্নত রাখতে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট রায় দেন, ওই মন্দিরে নারীদেরও প্রবেশ করতে দিতে হবে। যদিও ক্ষমতাসীন বিজেপিসহ হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলো আদালতের আদেশ নয়, নারীদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞার রীতি মানার পক্ষেই এখনও অবস্থান নিয়ে আছে।

সারাবাংলা/এএস/টিআর

শবরীমালা মন্দির হিজড়া

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর