Sunday 18 May 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

পুলিশ প্রশাসন ও বিচার বিভাগ একাকার হয়ে গেছে, ইসিকে খোকন


১৯ ডিসেম্বর ২০১৮ ১৯:৪৮ | আপডেট: ১৯ ডিসেম্বর ২০১৮ ২০:১৫

।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ।।

ঢাকা: নোয়াখালী-১ (চটাখিল-সোনাইমুড়ীর একাংশ) আসনে বিএনপি প্রার্থী ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন নির্বাচন কমিশনে (ইসি) এসে তার ওপর হামলার ঘটনা বর্ণনা করেছেন। এছাড়া তার নির্বাচনি এলাকায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা ভোট না চেয়ে প্রকাশ্যে অস্ত্র নিয়ে ঘুরে বেরাচ্ছে বলে দাবি করেন তিনি।

বুধবার (১৯ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি। এর আগে মাহবুব উদ্দিন খোকন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদার সঙ্গে সাক্ষাত করেন।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় বসানোর জন্য পুলিশ প্রশাসন এবং বিচার বিভাগ একাকার হয়ে গেছে। যেটা সম্পূর্ণ সংবিধান পরিপন্থী বলে আমি মনে করি এবং এটা করা উচিৎ না। যেসব পুলিশ কর্মকর্তা এসব করছে- তাদেরকে পরিবর্তন করার জন্য আমি প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে বলেছি।

“আমার নির্বাচনি এলাকার কথাও বলেছি। সেখানে কোনো আওয়ামী লীগ ছিল না। আওয়ামী লীগের কোনো মিছিল ছিল না, কিছুই ছিল না। আমার গণসংযোগের পেছনে পুলিশ ছিল, সামনেও ছিল। পুলিশসহ সংশ্লিষ্টদের আমার গণসংযোগের বিষয়ে অবহিত করা ছিল। এক পর্যায়ে সোনাইমুড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) নেতৃত্বে পুলিশ মানুষের ওপর এলোপাথারি গুলি করা শুরু করলো। আমি নিষেধ করে বললাম গুলি করছেন কেনো, গুলি স্টপ করেন প্লিজ। তারপরও ওসি সাহেব গুলি স্টপ করছেন না। সম্ভবত শটগান ছিল- স্প্রিন্টারের আঘাতে কর্মীরা পড়ে যাচ্ছিল। আমি বললাম মানুষকে গুলি করবেন না। গুলি করলে আমাকে করেন। তখন আমাকে সে গুলি করে দিলো! আমার কণ্ঠনালীর ওখানে গুলি লেগে রক্ত ঝরছিল। আমি বললাম, আপনি আমাকে গুলি করে দিলেন? তারপর সে বলল- আপনি ওদিকে যান। তার দেখানো দিকে যাওয়ার সময় পেছন থেকে আবার গুলি করে দিলো। আমার মোট সাতটা গুলি লেগেছে। পেছনে ছয়টা সামনে একটা”- বলেন তিনি।

বিজ্ঞাপন

তিনি আরও বলেন, আমি সিইসিকে বললাম, পুলিশ কী বললো না বললো এটা কোনো ম্যাটার না। আমি একজন ল’ইয়ার হিসেবে, ব্যারিস্টার হিসেবে বলছি এই হলো ঘটনা। সেখানে কোনো আওয়ামী লীগের লোক ছিল না। পরবর্তীতে আমি হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার দেড়-দুই ঘণ্টা পরে পুলিশের প্রহরায় আওয়ামী লীগের কর্মীরা বিএনপির যত দোকান-পাট, হাসপাতাল সব ভাঙচুর করছে। ভাঙচুর করার পর তারা ভিন্ন স্টোরি বানিয়েছে।

এই আইনজীবী বলেন, চাটখিল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সামসুদ্দিন বিএনপির লোক ধরে নিয়ে ঘুষ নেয়। প্রতিদিন ১৫-২০ জন ধরবে। কোনো মামলা নেই কিছু নেই। সেখান থেকে হয়তো ৫ জনকে রিকোস্টে ছাড়ছেন। আর ৫ জনের কাছ থেকে টাকা নিচ্ছেন। আর ৫ জনকে চালান করে দিচ্ছে। নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা আছে- যাদের বিরুদ্ধে মামলা নেই তাদেরকে গ্রেফতার করা যাবে না। তা সে মানছে না। আমার এলাকায় অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার হচ্ছে না। চাটখিল ও সোনাইমুড়ীতে আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের কাছে যে অস্ত্র আছে, দুই-তিন থানাতেও এতো অস্ত্র নেই। অস্ত্র উদ্ধার করেন। উনারা (কমিশন) বলেছেন, আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি।

তিনি অভিযোগ করে বলেন, আওয়ামী লীগের সমর্থক অবৈধ অস্ত্রধারীরা এবং পুলিশ একসঙ্গে কাজ করছে। নিরীহ মানুষের ওপর নির্যাতন করছে। আমার নির্বাচনি এলাকায় আওয়ামী লীগ ভোট চাচ্ছে না। তাদের প্রার্থী কর্মীরা ভোট চাচ্ছে না। মানুষকে হয়রানি করছে, সন্ত্রাস করছে এবং পুলিশ দিয়ে গ্রেফতার করছে, মানুষকে আহত করছে। শুধু আমার এলাকায় না, সারা বাংলাদেশে একই কাজ করছে আওয়ামী লীগ। আওয়ামী লীগের কর্মীরা কোথাও ভোট চাচ্ছে না। তারা মিছিলে হামলা করছে, বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভয় দেখাচ্ছে। এসব বিষয়ে জানানোর পর সিইসি বলেছেন- আমরা সুষ্ঠু ভোট গ্রহণে আমরা বদ্ধ পরিকর।

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, আমি প্রার্থীদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করার জন্যও সিইসিকে বলেছি। নির্বাচন কমিশন নির্বাচনের সিডিউল ঘোষণা করেছে। কমিশনের দায়িত্ব প্রার্থীদের নিরাপত্তা দেওয়া, সকল ভোটাররা তাদের ইচ্ছামত ভোট দিতে পারেন- সেই জন্য ভোটারদের নিরাপত্তা দেওয়া। আমি সোনাইমুড়ী থানার ওসির প্রত্যাহার চেয়েছি। চাটখিল থানার ওসির বিষয়েও তদন্ত করে তার প্রত্যাহার চেয়েছি। এগুলো তিনি শুনেছেন। আমাকে আশ্বস্ত করে বলেছেন, আমরা নিরপেক্ষ নির্বাচন করার চেষ্টা করছি।

সারাবাংলা/জিএস/এটি

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর