Friday 27 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘নৌকার জয় হোক, চট্টগ্রামবাসীর জয় হোক’


১৯ ডিসেম্বর ২০১৮ ২০:৪১

।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট।।

চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রামের উন্নয়নে বিভিন্ন প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘নৌকার জয় হোক, চট্টগ্রামবাসীর জয় হোক।’

৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনে চট্টগ্রামে আওয়ামী লীগ ও মহাজোটের সব প্রার্থীকে বিজয়ী করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেছেন, চট্টগ্রামবাসী সবসময় আওয়ামী লীগের পাশে আছে, আওয়ামী লীগের পাশে ছিল এবং আমি আশা করি, আগামী নির্বাচনে চট্টগ্রামের জনগণ আওয়ামী লীগকে নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে তাদের সেবা করার সুযোগ দেবে।

বুধবার (১৯ ডিসেম্বর) বিকেলে নগরীর লালদিঘীর মাঠে আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের পরিচিতি উপলক্ষে আয়োজিত জনসভায় ঢাকার সুধাসদন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে বক্তব্য দেন শেখ হাসিনা।

চট্টগ্রামের উন্নয়ন এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরী মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে শুরু হয়েছিল মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, চট্টগ্রামে ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট আমরা করেছি। ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম হয়ে কক্সবাজারের ঘুমধুম পর্যন্ত রেল লাইনের কাজ আমরা শুরু করেছি। ঢাকা থেকে চট্টগ্রামে চার লেইনের মহাসড়ক করেছি। আগামীতে বুলেট ট্রেন চালু করব, যাতে ঢাকা-চট্টগ্রামের মানুষ দ্রুত যাতায়াত করতে পারে।

‘চট্টগ্রাম জেলা ও বিভাগের সার্বিক উন্নয়নে আমরা ব্যাপক কাজ হাতে নিয়েছি। চট্টগ্রাম পোর্টের ব্যাপক উন্নয়ন আমরা করেছি। বে-টার্মিনাল নির্মাণ করা হবে। আমরা বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মসূচি আমরা হাতে নিয়েছি। এই কর্মসূচিগুলো বাস্তবায়ন করতে হলে আওয়ামী লীগ সরকারকে ক্ষমতায় থাকতে হবে’ বলেন প্রধানমন্ত্রী

গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতার সঙ্গে উন্নয়নের ধারাবাহিকতাও বজায় রাখার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘প্রতিটি নির্বাচনী এলাকার ভোটারদের কাছে আমার আবেদন, উন্নয়নের ধারা আমরা সূচনা করেছি। বাংলাদেশ ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশ, ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত-সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে গড়ে উঠবে। জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা আমরা গড়ে তুলব।’

বিজ্ঞাপন

লুটেরা-দুর্নীতিবাজরা যাতে আর ক্ষমতায় আসতে না পারে, সেদিকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘লুটেরা, দুর্নীতিবাজরা অর্থ আত্মসাত করে, মানিলন্ডারিং করে। ১০ ট্রাক অস্ত্র চোরাকারবারি করতে গিয়ে যারা সাজাপ্রাপ্ত, একুশে আগস্টের গ্রেনেড হামলা মামলায় যারা সাজাপ্রাপ্ত, এই বিএনপি-জামায়াত জোট যেন আর কোনোদিন ক্ষমতায় আসতে না পারে। আবার যেন অস্ত্র চোরাকারবারি, লুট, দুর্নীতি, অর্থ আত্মসাত, মানিলন্ডারিং করতে না পারে, খুন-খারাবি করতে না পারে।’

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ আজ এগিয়ে যাচ্ছে। আমরা যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করেছি। সেই বিচারের রায় আমরা কার্যকর করেছি। বাংলাদেশ অভিশাপমুক্ত হয়ে উন্নয়নের গতিধারায় এগিয়ে যাচ্ছে। এই ব্যাপক উন্নয়ন, এটা শুধু আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আছে বলেই আপনারা পাচ্ছেন।’

লালদিঘীর মাঠ থেকে প্রার্থী ও আওয়ামী লীগের নেতাদের কয়েকজন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সরাসরি কথা বলার এবং বক্তব্য রাখার সুযোগ পান।

চট্টগ্রাম-৮ (বোয়ালখালী-চান্দগাঁও) আসনে নৌকার প্রার্থী, বাংলাদেশ জাসদের নেতা মঈনউদ্দিন খান বাদল প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে বলেন, ‘নেত্রী, আপনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ কতটুকু এগিয়েছে, আজকের মিটিংটাই তার প্রমাণ। আমাদের জীবনেও এইরকমভাবে মিটিং হতে পারে, এটা আমরা কল্পনাও করিনি। এটা একটা অদ্ভূত মিটিং। ঢাকায় বসে আছেন, অথচ চট্টগ্রামে সবার সাথে কথা বলছেন।’

তখন প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এটাই ডিজিটাল বাংলাদেশ।’

এরপর বাদল বলেন, ‘একটা শেষ কথা বলি। চাটগাঁইয়া ভাষায় বলব, আপনাকে কেউ বুঝিয়ে দিতে পারে’ প্রধানমন্ত্রী বলেন- আমি বুঝি।

বিজ্ঞাপন

বাদল বলেন, ‘আমরা চাটগাঁইয়ারা বলি, ১০ বছর আগে আমরা ছিলাম ফকিরনীর পুত। ১০ বছর পরে আমরা হয়েছি রাজার পুত। এই যে পরিবর্তন, এই পরিবর্তনটা আপনার নেতৃত্বে এসেছে। আমরা বহু জায়গায় বলেছি- এই পরিবর্তনটা মানুষের হক। আর ভোট, এটা আপনার হক বাংলাদেশের মানুষের উপর। আমি বলি- ভোট চাই না। হক আদায় করেন।’

জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশের জনগণকে এখন আর কেউ ফকিরনির পুত বলে না। বিদেশে সবাই বলে, বাংলাদেশ এখন উন্নয়নের মাইলফলক।’

চট্টগ্রাম-১ (মিরসরাই) আসনের নৌকার প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘গত ১০ বছর চট্টগ্রামসহ সারাদেশে আপনার নেতৃত্বে যে উন্নয়ন হয়েছে, তাতে চট্টগ্রামের ১৬টি আসনে আপনি আওয়ামী লীগ এবং মহাজোটের যাদের প্রার্থী করেছেন, চট্টগ্রামবাসী তাদের সবাইকে জয়ী করবেন।’

এসময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আন্তরিকতার সঙ্গে সবাই মিলেমিশে কাজ করুন যেন আমরা জয়ী হয়ে আবারও সরকার গঠন করতে পারি।’

প্রধানমন্ত্রী নিজেই চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরীর বক্তব্য শুনতে চান। মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী ‘প্রধানমন্ত্রীর জয় হোক’ বলে বক্তব্য শেষ করেন।

এসময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘নৌকার জয় হোক, চট্টগ্রামবাসীর জয় হোক।’

চট্টগ্রাম-৭ (রাঙ্গুনিয়া) আসনের প্রার্থী ড.হাছান মাহমুদও বক্তব্য রাখেন।

বিকেল সোয়া তিনটার দিকে প্রধানমন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্সে লালদিঘীর মাঠের জনসভায় যুক্ত হন। এর আগেই লালদিঘীর মাঠ কানায়-কানায় পূর্ণ হয়ে যায়। চট্টগ্রামের ১৬টি আসন থেকে প্রত্যেক প্রার্থীর সমর্থকরা মিছিল নিয়ে আসেন লালদিঘীর মাঠে। প্রধানমন্ত্রী যখন বক্তব্য শুরু করেন, তখন মাঠ ছাপিয়ে আশপাশের সড়ক-এলাকাও লোকে লোকারণ্য হয়ে যায়।

প্রধানমন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হওয়ার আগে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও চট্টগ্রাম-৯ (কোতোয়ালী-বাকলিয়া) আসনের প্রার্থী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোছলেম উদ্দিন আহমেদ, উত্তর জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এম এ সালাম, নগর কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন, দক্ষিণ জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান বক্তব্য রাখেন।

জনসভায় চট্টগ্রামের ১৫টি আসনের নৌকা মার্কার প্রার্থীরা সবাই ছিলেন। চট্টগ্রাম-৫ (হাটহাজারী) আসনে লাঙল মার্কায় মহাজোটের প্রার্থী আনিসুল ইসলাম মাহমুদও ছিলেন।

সারাবাংলা/আরডি/একে

আওয়ামী লীগ নির্বাচন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

কানপুরে প্রথম দিনে বৃষ্টির দাপট
২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৬:৩৫

সম্পর্কিত খবর