গোপনে ফিলিপিনো শিশুর খরচ বহন করেছিলেন সিনিয়র বুশ
২০ ডিসেম্বর ২০১৮ ১১:৪০
।। আন্তর্জাতিক ডেস্ক ।।
সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ এইচডব্লিউ বুশ ১০ বছর ধরে গোপনে এক ফিলিপিনো ছেলে শিশুর শিক্ষা ও খাবারের খরচ বহন করেছিলেন। অর্থায়নকারী হিসেবে ছদ্মনাম ব্যবহার করেছিলেন তিনি। খবর বিবিসির।
ওই ছেলে শিশুর সঙ্গে জর্জ ওয়াকার নাম ব্যবহার করে বেশ কয়েকটি চিঠি বিনিময় করেছিলেন সিনিয়র বুশ। ছেলেটির বয়স যখন সাত বছর তখন থেকে তার খরচের দায়িত্ব নেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
সিনিয়র বুশের পৃষ্ঠপোষকতায় থাকা ছেলেটির নাম টিমোথি। একটি দাতব্য সংস্থা কমপ্যাসন ইন্টারন্যাশনাল’র বিশেষ কর্মসূচির আওতায় তার খরচ বহন করেছিলেন সিনিয়র বুশ। টিমোথি ১৭ বছর বয়সে তার শিক্ষা ও খাবারের অর্থায়নকারীর পরিচয় জানে।
উল্লেখ্য, ৪১তম মার্কিন প্রেসিডেন্ট ছিলেন জর্জ এইচডব্লিউ বুশ। গত মাসে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুর সময় তার বয়স হয়েছিল ৯৪জন।
চিঠি
দাতব্য সংস্থাটি সিনিয়র বুশ ও টিমোথির মধ্যে বিনিময় হওয়া বেশ কয়েকটি চিঠি প্রকাশ করেছে।
২০০২ সালে পাঠানো একটি চিঠিতে সিনিয়র বুশ বলেন, প্রিয় টিমোথি, আমি তোমার নতুন পত্রবন্ধু।
তিনি লিখেন, আমি একজন বুড়ো মানুষ, ৭৭ বছর বয়সী। আমি শিশুদের পছন্দ করি। যদিও তোমার সঙ্গে আমার এখনও দেখা হয়নি, কিন্তু তারপরও আমি তোমায় ভালোবাসি।
‘আমি টেক্সাসে বাস করি- আমি মাঝেমাঝে তোমার কাছে চিঠি লিখবো- শুভকামনা। ’
যে কারণে গোপনীয়তা
কমপ্যাসন ইন্টারন্যাশনাল একটি খ্রিস্টান, মানবিক দাতব্য সংস্থা। সংস্থাটি দরিদ্র শিশুদের সাহায্য করে থাকে। সিনিয়র বুশ সর্বপ্রথম ২০০১ সালে এক ক্রিস্টমাস কনসার্টে সংস্থাটির শিশু পৃষ্ঠপোষকতা পরিকল্পনা সম্বন্ধে জানেন।
ধারণা করা হয়, টিমোথির অর্থায়নকারী হিসেবে সিনিয়র বুশের পরিচয় গোপন রাখার কারণ ছিল- একজন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে টিমোথির যোগাযোগ রয়েছে এটা প্রকাশ হলে তার ওপর হামলা হতে পারে।
কিন্তু সিনিয়র বুশ এতে দমেননি। তার চিঠিতে তিনি নিজের পরিচয় সম্পর্কে ইঙ্গিত দিতেন। এক চিঠিতে তিনি লিখেন, টিমোথি, তুমি কখনো হোয়াইট হাউজের নাম শুনেছো? সেখানে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বাস করেন। আমি ক্রিস্টমাসের সময়ে সেখানে যাওয়ার সুযোগ পেয়েছিলাম। সেখান থেকে পাওয়া একটি বুকলেট পাঠালাম তোমার জন্য।
বুশের পরিবারও জানতো না
টিমোথির ব্যাপারটি নিজের পরিবারের কোন সদস্যকেও জানাননি সিনিয়র বুশ। কমপ্যাসন ইন্টারন্যাশনালের ওয়েস স্ট্যাফোর্ড ২০০৮ সালে এক রাষ্ট্রীয় ডিনারে বুশের পরিবারকে এ বিষয়ে অবগত করেন।
স্ট্যাফোর্ড জানান, এ কথা শুনে তার ছেলে জর্জ বুশের স্ত্রী, লরা বুশ কেঁদে দিয়েছিলেন। তার ছেলে জর্জ বুশ এক মুহূর্তের জন্য থেমে গিয়ে বলেছিল, হুম, এটা আমার বাবার মতোই শুনাচ্ছে।
সারাবাংলা/ আরএ