অবশেষে মহেশখালী-কুতুবদিয়ার ভোটের লড়াইয়ে ধানের শীষ
২০ ডিসেম্বর ২০১৮ ১৩:৪৩
।। ওমর ফারুক হিরু, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট ।।
কক্সবাজার : আইনি জটিলতার কারণে কক্সবাজার-২ (মহেশখালী-কুতুবদিয়া) আসনে কোনো প্রার্থী ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করতে পারছিলেন না।
তবে কেটেছে সেই জটিলতা। প্রতীক ও প্রার্থীতা ফিরে পেয়েছেন বিএনপির প্রার্থী আলমগীর মোহাম্মদ মাহফুজউল্লাহ ফরিদ। উচ্চ আদালতের নির্দেশমতে তাকে ধানের শীষ প্রতীক বরাদ্দ দেন রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন।
এর আগে, আলমগীর ফরিদ বিএনপির প্রাথমিক মনোনয়ন পেয়েছিলেন। কিন্তু বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২৩ দলীয় জোট থেকে চূড়ান্ত মনোনয়ন দেয়া হয় জামায়াত নেতা হামিদুর রহমান আযাদকে। কিন্তু মনোনয়ন দাখিলের সময় স্বতন্ত্র প্রার্থী উল্লেখ্য করায় হামিদ আযাদকে ধানের শীষ প্রতীক বরাদ্দ দেননি রিটার্নিং কর্মকর্তা। ওই সময় তাকে আপেল প্রতীক বরাদ্দ দেয়া হয়। যার ফলে মহেশখালীতে নির্বাচন চলছিল ধানের শীষ প্রতীক ছাড়াই।
এদিকে আলমগীর ফরিদ দলের চূড়ান্ত মনোনয়ন বঞ্চিত হওয়ায় নির্বাচন কমিশনের কাছে দলীয় প্রতীক বরাদ্দ পাওয়ার সুপারিশ জমা দিতে পারেন নি। তাই নির্বাচনি বিধি মতে, স্বয়ংক্রিয়ভাবেই তাঁর মনোনয়নপত্র বাতিল হয়ে যায়।
পরে নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে প্রার্থীতা ও প্রতীক ফিরে পেতে উচ্চ আদালতে একটি রিট পিটিশন দায়ের করেছিলেন আলমগীর ফরিদ।
আলমগীর ফরিদের আইনজীবী ফারুক ইকবাল জানান, ওই পিটিশন আমলে নিয়ে আলমগীর ফরিদের প্রার্থীতা ফিরিয়ে দিয়ে তাঁকে ধানের শীষ প্রতীক বরাদ্দ দেয়ার জন্য নির্বাচন কমিশনকে নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। কিন্তু ওই আদেশের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে আপিল করে নির্বাচন কমিশন। মঙ্গলবার (১৮ ডিসেম্বর) প্রধান বিচারপতির সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ নির্বাচন কমিশনের আপিল আবেদন নাকচ করে দিয়ে হাইকোর্টের আদেশ বহাল রাখেন আপিল বিভাগ। যার ফলে আলমগীর ফরিদের প্রার্থীতা ফিরিয়ে পেতে এবং ধানের শীষ প্রতীক পেতে সব প্রতিবন্ধকতা দূর হয়ে যায়। এ সংক্রান্ত সব ধরনের কাগজপত্র বুধবার সকালে রিটার্নিং কর্মকর্তা জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেনে কাছে জমা দেন আলমীর ফরিদের আইনজীবীরা।
এ ব্যাপারে রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন বলেন, শুরু থেকেই কক্সবাজার-২ আসনের মনোনয়ন প্রত্যাশী আলমগীর ফরিদকে নিয়ে নানা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয়েছিল। কয়েক দফায় আইনি বাধা কাটিয়ে তিনি প্রার্থীতার যোগ্যতা অর্জন করেছেন। তার আইনজীবীদের দেয়া কাগজপত্র যাচাই-বাচাইয়ের পর তাকে প্রার্থীতা এবং ধানের শীষ প্রতীক দেয়া হয়েছে।
এদিকে মনোনয়ন দাখিলের সময় স্বতন্ত্র প্রার্থী উল্লেখ্য করায় ২৩ দলীয় জোটের ধানের শীষ প্রতীকের অনুলিপি আনতে পারলেও আইনি প্রক্রিয়ায় আলমগীর ফরিদ প্রথমে ধানের শীষ প্রতীক পাননি। তাকে দেয়া হয়েছিল আপেল প্রতীক। কিন্তু স্বতন্ত্র আপেল প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করছিলেন জামায়াত নেতা হামিদুর রহমান আযাদ। তবে তার প্রার্থিতা চ্যালেঞ্জ করে রিট আবেদন করা হলে হাইকোর্ট স্থগিত করে দেন। এর বিরুদ্ধে জামায়াত নেতা আযাদ চেম্বার জজ আদালতে গেলে সোমবার পর্যন্ত হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত করেন চেম্বার জজ আদালতের বিচারপতি। একই সঙ্গে আপিল বিভাগে শুনানির দিন ধার্য করা হয়। গতকাল আপিল বিভাগে শুনানি হয়। শুনানি শেষে মঙ্গলবার হাইকোর্টের দেয়া আদেশ বহাল রাখেন আপিল বিভাগ। ফলে আযাদের মনোনয়নপত্র স্থগিতই থাকছে বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা।
সারাবাংলা/এসএমএন