Saturday 23 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘প্রধানমন্ত্রী একবার চেয়ে দেখুন, আমরা মরে যাচ্ছি’


১২ জানুয়ারি ২০১৮ ১৩:৩১

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

‘প্রচণ্ড শীত আর অনাহারে আমার ভাইরা মৃত্যুর দিকে। প্রধানমন্ত্রী দয়া করে একবার আমাদের দিকে তাকান। দেখুন আমরা মরে যাচ্ছি।’- একথা বলেই হাউমাউ করে কেঁদে ফেলেন স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদরাসা শিক্ষক সমিতির সভাপতি মাওলানা কাজী রুহুল আমিন চৌধুরি। শুক্রবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে অনশনের চতুর্থ দিনে শিক্ষকদের অবস্থা জানাতে গিয়ে একথা বলেন তিনি।

রুহুল আমিন চৌধুরি বলেন, ১০ হাজার মাদরাসার ৫০ হাজার শিক্ষকদের রুটি-রুজির ব্যবস্থা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে কোনো বড় ব্যাপার না। তিনি একটু আন্তরিক হলেই হয়। আমরা তার মুখের দিকে তাকিয়ে আছি।

এদিকে অনশনের চতুর্থ দিন শুক্রবার প্রেস ক্লাবের সামনে গিয়ে দেখা যায় শত শত শিক্ষক রাস্তায় শুয়ে আছেন। গায়ে শীতের কাপড় জড়িয়ে সারিবদ্ধভাবে তাদের পড়ে থাকা তাদের নাজুক অবস্থার জানান দিচ্ছে।
শিক্ষকদের নেতা মো. আবু সাইদ জানান, শুক্রবার নতুন করে ২০ জন শিক্ষক অসুস্থ হয়েছেন। এ নিয়ে মোট অসুস্থ হয়েছেন ৯২ জন। এ সংখ্যা আরও বাড়ার আশঙ্কা করছেন তিনি।

দুপুর ১২টার দিকে অনশনস্থলের মাঝামাঝি হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন গাইবান্ধার সাদুল্লাপুরের শিক্ষক মোসলেম উদ্দিন। তাকে দ্রুতই রিকশায় উঠিয়ে ঢাকা মেডিকেলে নেওয়া হয়। এর মধ্যে মঞ্চের মাইকে ঘোষণা হয়, স্বেচ্ছাসেবক ভাইরা আপনার মঞ্চের পশ্চিম দিকে একটু আসেন সেখানে বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জের এক শিক্ষক অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিন। অবস্থা বেশি খারাপ হলে ঢাকা মেডিকেলে পাঠান।

শুক্রবার সরেজমিনে দেখা যায়, অসুস্থদের নিজস্ব উদ্যোগে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। একটু পরপর স্যালাইনের স্ট্যান্ড চোখে পড়ছে। একটা স্ট্যান্ডে কয়েকজনের স্যালাইনের ব্যাগ ঝোলানো রয়েছে। অসুস্থদের কেউ কেউ চোখ খুলে তাকাতে পারলেও মুখ শুকনা-বাকশক্তিহীন। হাতের সরু রগ দিয়ে শরীরে স্যালাইন প্রবেশ করছে।
এদিকে অনশনস্থলে অনেক নারী শিক্ষকের ছোটো ছোটো ছেলেমেয়েদের চোখে পড়ছে। অসুস্থ মায়েদের পাশে থাকা এসব শিশুদের অবস্থাও নাজুক। তেমনই একজন ঝিনাইদহের শৈলকুপার নাসরীন বেগমের ছেলে নাজমুলের। অসুস্থ মায়ের পাশে থাকা ভ্যানিটি ব্যাগ থেকে একটি পলিথিন ব্যাগ টেনে বের করে সে। তাতে পরোটা আর ভাজি দেখা যায়। পরে মায়ের পায়ের কাছে বসে খেতে থাকে অভুক্ত নাজমুল।

বিজ্ঞাপন

সমিতির মহাসচিব কাজী মোখলেসুর রহমান বলেন, আমাদের ভাইরা শপথ নিয়েছে তারা প্রাণ থাকতে রাজপথ ছাড়বে না। হয় বেতন না হয় মরণ এই ছাড়া আর কোনো পথ নেই আমাদের।

সারাবাংলা/এমএস/এমএ

অনশন ইবতেদায়ি_মাদরাসা

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর