ক্ষমতায় গেলে মৃত্যুদণ্ড তুলে দেবে জাকের পার্টি
২০ ডিসেম্বর ২০১৮ ১৬:৫১
।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ।।
ঢাকা: ক্ষমতায় গেলে মৃত্যুদণ্ডের বিধান তুলে দেওয়ার অঙ্গীকার করেছে জাকের পার্টি। একইসঙ্গে করনীতিতে পরিবর্তন এনে সম্পদের পরিমাণের ওপর নির্ভর করে মধ্যবিত্ত শ্রেণির জন্য সহনশীল কর হার নির্ধারণ করবে দলটি।
বৃহস্পতিবার (২০ ডিসেম্বর) দুপুরে গুলশানের একটি হোটেলে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে ঘোষিত ইশতেহারে এসব অঙ্গীকার করেছে দলটি। ৪১ দফা এই নির্বাচনি ইশতেহার তুলে ধরেন দলের চেয়ারম্যান মোস্তফা আমীর ফয়সল।
ইশতেহার ঘোষণার সময় মৃত্যুদণ্ডের বিধান তুলে দেওয়ার প্রসঙ্গ টেনে মোস্তফা আমীর ফয়সল বলেন, বর্তমান বিশ্বের পরিপ্রেক্ষিতে মানবাধিকার সুরক্ষা একটি দেশের সার্বিকভাবে এগিয়ে যাওয়ার অন্যতম সূচক। নিরাপদ ও অগ্রগামী বাংলাদেশ গড়ে তুলতেও পারিবারিক, সামাজিক ও রাজনৈতিকসহ সব ক্ষেত্রে মানবাধিকারের লালন-পালন, বিকাশ ও সংরক্ষণ অপরিহার্য। রাজনীতির নামে দমন-নিপীড়ন ও বিচারবহির্ভূত হত্যা, বিনা বিচারে আটকসহ সব ধরনের নির্যাতন ও নিপীড়নমূলক অপতৎপরতা রোধে করা গেলেই শান্তিময় জীবন সংস্কৃতি বিকাশ হবে। পাশাপাশি কল্যাণময় জীবন সংস্কৃতির বিকাশে মৃত্যুদণ্ডের বিধান গ্রহণযোগ্য নয়। তাই এই বিধান তুলে দিতে হবে।
কর নীতি প্রসঙ্গে জাকের পার্টির ইশতেহারে বলা হয়েছে, বিত্তের পরিমাণ অনুযায়ী কর হার নির্ধারণ করা হবে। নতুন ব্যবসায়ীদের কাছ থেকেও তিন পর্যন্ত কর আদায় করা হবে না। তিন বছর পর তাদের করের আওতায় আনতে হবে।
এ প্রসঙ্গে মোস্তফা আমীর ফয়সল বলেন, আমাদের কর ব্যবস্থা সামাজিক ও অর্থনৈতিক বাস্তবতার ভিত্তিতেই গড়ে তুলতে হবে। বাংলাদেশের অল্পসংখ্যক মানুষের হাতে দেশের মোট সম্পদের উল্লেখযোগ্য অংশ, সে ক্ষেত্রে কর নীতি সবার জন্য এক হতে পারে না। সবার জন্য করের হার এক হলে বৈষম্য তৈরি হয়। তাই শীর্ষ ধনী ও বিত্তশালীদের জন্য কর হার হতে হবে সর্বোচ্চ, আর মধ্যবিত্তদের জন্য হতে হবে সহনশীল।
কারও বয়স ১৮ বছর হলেই তাকে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সুযোগ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে জাকের পার্টি। দলটির প্রধান বলেন, সাংবিধানিকভাবে বাংলাদেশ ১৮ বছর বয়সে ভোটার হওয়ার বিধান রয়েছে। তাই এই বয়স হলেই যেন যে কেউ নির্বাচনে অংশ নিতে পারে, সে বিষয়ে নির্বাচনি আইনে সংশোধন আনা উচিত।
সবার জন্য সমান অধিকার ও মর্যাদা নিশ্চিতের অঙ্গীকার করে জাকের পার্টির প্রেসিডেন্ট আমীর ফয়সল বলেন, ধর্মের ভিত্তিতে সংখ্যালঘু নির্ধারণ কোনোভাবেই মানবিক হতে পারে না। প্রত্যেকেই রাষ্ট্রের সম্মানিত নাগরিক। তাই তাদের সবার সমান অধিকার ও মর্যাদা থাকবে। শিক্ষা ও কর্মের ফলাফলের ভিত্তিতে ব্যক্তির আয়-উন্নতির সূচক নির্ধারতি হবে।
তিনি আরও বলেন, জাকের পার্টি শুরু থেকেই অসম্মানজনক সংখ্যালঘু তত্ত্ব পরিহার করে একটি মানবিক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় ‘ধর্ম যার যার, রাষ্ট্র সবার’— এই মূলমন্ত্র নিয়ে কাজ করছে। জাকের পার্টি সংসদে গেলে সংখ্যালঘু তত্ত্ব, অর্থ্যাৎ সংখ্যালঘু বলে কোনো সম্প্রদায়কে খাটো ও হেয় করার প্রথা আর থাকবে না।
একাদশ জাতীয় সংসদে জাকের পার্টি থেকে প্রাথমিকভাবে ১৮০টি আসনে প্রার্থী দেওয়া হলেও শেষ পর্যন্ত ৯০টি আসনে দলীয় মনোনয়ন নিশ্চিত করেছে। দলটি আশা করছে, আগামী নির্বাচনে অন্তত ৩০টি আসনে তারা জয়লাভ করবে।
নির্বাচন প্রসঙ্গে মোস্তফা আমীর ফয়সল বলেন, এবারই প্রথম দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন হচ্ছে। ভোটের দিন এলে বোঝা যাবে, নির্বাচন কেমন হবে। আমারা আশা করছি, নির্বাচন কমিশন নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করবে।
সারাবাংলা/জেএ/টিআর