Saturday 23 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ঐক্যফ্রন্টের ১৬ প্রার্থী কারাগারে, ১৩টি আসন শূন্য


২১ ডিসেম্বর ২০১৮ ১৮:২২

।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ।।

ঢাকা: বিভিন্ন মামলায় গ্রেফতার হয়ে এই মুহূর্তে ধানের শীষের ১৬ জন প্রার্থী কারাগারে। এছাড়া  উচ্চ আদালতের নির্দেশে ১৩টি নির্বাচনি এলাকায় ধানের শীষের প্রার্থিতা শূন্য হয়ে গেছে বলে জানিয়েছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট।

শুক্রবার (২১ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় রাজধানীর পুরান পল্টনে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ড. কামাল হোসেনের সংবাদ সম্মেলন থেকে এসব তথ্য জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে ড. কামাল হোসেনের সই করা লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান গণফোরামের সহ-সভাপতি জগলুল হায়দার আফ্রিক। পরে ড. কামাল হোসেন মৌখিক বক্তব্যের পাশাপাশি সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দেন।

সংবাদ সম্মেলন থেকে দুই দিনের কর্মসূচিও ঘোষণা করে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে ২১ থেকে ২৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত ঢাকা মহানগরের নির্বাচনি আসনগুলোতে একই সময় জনসভা ও গণমিছিল। এছাড়া আগামী ২৭ ডিসেম্বর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জনসভা করবে ঐক্যফ্রন্ট।

ড. কামাল হোসেন বলেন, ‘নির্বাচনের যে চিত্রটা আপনাদের সামনে তুলে ধরা হলো, তা নজীরবিহীন। আমি ৪০/৫০ বছর ধরে বাংলাদেশের নির্বাচন দেখছি, কিন্তু কোনো দিন এমন চিত্র দেখিনি। এতে বোঝা যায়, কেন্দ্রীয় আদেশ-নির্দেশের ভিত্তিতে এগুলো করা হচ্ছে। এটা সংবিধানকে সম্পূর্ণভাবে লঙ্ঘন।’

তিনি বলেন, ‘আমার প্রায় ৫০ বছরের অভিজ্ঞতা— এরকম পরিকল্পিতভাবে পুলিশ আদেশিত হয়ে সারাদেশে অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে! কাদের বিরুদ্ধে?— যারা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী। নির্বাচন জিনিসটা কী?— এটা প্রতিদ্বন্দ্বিতা। নির্বাচনে সরকারি দলের লোক থাকে, বিরোধী দলের লোক থাকে— এরা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে। এদেরকে জনগণ ভোট দেবে। তাই ভোট চাওয়ার জন্য এদেরকে জনগণের কাছে যেতে হয়, আবেদন করতে হয়।

বিজ্ঞাপন

‘কিন্তু এখনই যে অবস্থা চলছে, সাত দিন পর কী অবস্থা হবে?— সেটা তো আপনারা বুঝতে পারছেন। এখন যারা প্রার্থী তাদের কী ধরনের পরিস্থিতি মোকাবেলা করে চেষ্টা করতে হচ্ছে নির্বাচন করার, এটা নজীরবিহীন’— বলেন ড. কামাল হোসেন।

তিনি বলেন, ‘জাতীয় পর্যায়ে পরিকল্পিতভাবে পুলিশকে সংঘদ্ধভাবে রাস্তায় নামিয়ে দেওয়া, যারা ভোট দিতে চাচ্ছে, ভোট চাইতে যাচ্ছে তাদেরকে পুলিশ এবং সরকারি দলের সমর্থকরা মিলে আক্রমণ করা— এটা কোনো দিন আমি দেখি নাই।’

ড. কামাল হোসেন বলেন, ‘সব সময় বলা হয়, ইলেকশনে কিছু তো হবে। ইয়েচ, কিছু তো হবেই। কিন্তু এই আকারে কোনো দিন দেখি নাই। এই আকারে দেখার কল্পনা করা যেতে পারে না। নির্বাচনের সময় পরিবেশ রক্ষা করতে হবে, যাতে প্রার্থীরা তাদের ভোট চাইতে পারে, তাদের কথা রাখতে পারে। কিন্তু পরিবেশ একেবারে ধ্বংস করা হয়েছে।’

প্রেস কনফারেন্সের সাথে সাথে যেন সব ধরনের নিপীড়ন-নির্যাতন বন্ধ করা হয়- সে আহ্বান জানিয়ে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের এই শীর্ষ নেতা বলেন, ‘আমি গঠনমূলকভাবে বলতে চাই, এটা যেন অবিলম্বে বন্ধ হোক। এই প্রেস কনফারেন্সের তথ্য দেওয়ার সাথে সাথে যেন সরকার নিপীড়ন-নির্যাতন একেবারে বন্ধ করে দেয়। না হলে সংবিধান লংঘন করার অপরাধ, গুরুতর অপরাধ— এটা জাস্ট ইলেকশন আইনে অপরাধ না, সংবিধানকে ভঙ্গ করার অপরাধ।’

সংবিধাবন কী বলছে, সংসদে নির্বাচিত প্রতিনিধিরা দায়িত্ব পালন করবে দেশের নাগরিকদের পক্ষে। অবাধ নিরপেক্ষ নির্বাচন নিশ্চিত না করলে, যারা তথাকথিত নির্বাচনের মধ্য দিয়ে দাবি করবে যে, আমরা নির্বাচিত প্রতিনিধি, এটা মিথ্যা দাবি হবে। জনগণকে যদি সুযোগ দেওয়া না হয় একটা অবাধ, নিরপেক্ষ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে প্রতিনিধি বাছাই করার, তাহলে যারা এসে বলবে যে আমরা নির্বাচিত, তাদের কোনোভাবেই নির্বাচিত স্বীকৃতি দেওয়া যাবে না। তখন মহাস সংকট সৃষ্টি হবে’— বলেন ড. কামাল হোসেন।

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, ‘স্বাধীন দেশে জনগণ হলো ক্ষমতার মালিক। মালিক যদি তাদের অধিকার ভোগ করতে না পারে, তাহলে সেটা হবে স্বাধীনতার ওপর আঘাত। এর চেয় বড় কোনো আঘাত হতে পারে না। সেটাই সরকারকে আমরা জানিয়ে দিতে চাই, এখনো সাত দিন আছে, মাথা ঠিক করেন, মাথা সুস্থ করেন, মাথা ঠাণ্ডা করেন। ইলেকশনে জিতে হবে, কিন্তু এভাবে না। এটাকে যেতা বলব না, একটাকে বলে সংবিধান ধ্বংস করা, মানুষের সাথে ভাওতাজাবাজি করা, মানুষকে ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত করা।’

সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি সুব্রত চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসিন মন্টু, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল আউয়াল মিন্টু, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলালসহ অন্যরা।

সারাবাংলা/এজেড /জেডএফ 

ঐক্যফ্রন্টের ১৩ আসন শূন্য ঐক্যফ্রন্টের ১৬ প্রার্থী কারাগারে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর