নির্বাচনি এলাকায় অস্থিরতা সৃষ্টির দুরভিসন্ধি মাহমুদুলের: পুলিশ
২২ ডিসেম্বর ২০১৮ ২১:৪৬
।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ।।
চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রামে বাঁশখালীতে হামলার শিকার হওয়ার পর সংবাদ সম্মেলনে পুলিশকে জড়িয়ে জাতীয় পার্টির প্রার্থী মাহমুদুল ইসলাম চৌধুরীর দেওয়া বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়েছে জেলা পুলিশ। মাহমুদুলের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ এনে পুলিশ দাবি করেছে, ‘নির্বাচনি এলাকায় অস্থিরতা সৃষ্টির জন্য তিনি দুরভিসন্ধি নিয়ে অন্তর্ঘাতমূলক কাজ করেছেন।
শনিবার (২২ ডিসেম্বর) রাতে চট্টগ্রামে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বিশেষ শাখা ও জনসংযোগ) মহিউদ্দিন মাহমুদ সোহেলের পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জেলা পুলিশের প্রতিবাদের বিষয়টি জানানো হয়েছে।
শুক্রবার (২১ ডিসেম্বর) বিকেলে বাঁশখালী উপজেলার চাম্বল বাজারে মাহমুদুলের প্রচারণা সভায় হামলা ও গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটে। এতে অন্তঃত ২৫ জন আহত হয়েছে বলে দাবি তার। হামলার বিষয়ে জানাতে শনিবার সকালে সংবাদ সম্মেলন করেন জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য মাহমুদুল ইসলাম।
জেলা পুলিশের দাবি, সংবাদ সম্মেলনে মাহমুদুল বলেছেন, হামলা এবং ঘটনার বিষয়ে বাঁশখালী থানায় মামলা করতে গেলে পুলিশ তাকে থানা থেকে বের করে দেয়।
এই অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন দাবি করে পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, নির্বাচনি এলাকায় অস্থিরতা সৃষ্টির জন্য দুরভিসন্ধি নিয়ে তিনি অন্তর্ঘাতমূলক কাজ করেছেন এবং মিথ্যা সংবাদ সরবরাহের মাধ্যমে মূল ঘটনা ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার অপচেষ্টা করছেন।
পুলিশের পক্ষ থেকে গণমাধ্যমকে যাচাইবাছাই করে সংবাদ পরিবেশনের অনুরোধ করা হয়েছে।
চাম্বল বাজারে জাতীয় পার্টির প্রচারণা সভায় গুলিবর্ষণের ঘটনাটি সত্য নয় দাবি করে পুলিশ ঘটনার বিস্তারিত বিবরণও প্রতিবাদলিপিতে দিয়েছে।
পুলিশের ভাষ্যমতে, ২১ নভেম্বর (শুক্রবার) বিকেলে বাঁশখালী উপজেলার চাম্বল বাজারে জাতীয় পার্টি আয়োজিত পথসভায় প্রধান অতিথি ছিলেন মাহমুদুল ইসলাম চৌধুরী। তিনি নেতা-কর্মীসহ সদলবলে চাম্বল বাজারে যাওয়ার পথে সিকদারের দোকান এলাকায় গণসংযোগরত আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরীর নেতা-কর্মীদের কথা কাটাকাটি হয়। এর জের ধরে মাহমুদুল ইসলাম চৌধুরীর উচ্ছৃঙ্খল নেতা-কর্মীরা বৈলছড়ি বাজারে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর নির্বাচনী অফিসে হামলা ও অগ্নিসংযোগ করে।
এরপর জাতীয় পার্টির উচ্ছৃঙ্খল নেতা-কর্মীরা চট্টগ্রাম-বাঁশখালী সড়কের চেচুরিয়া বাজারে সড়ক অবরোধ করে। রাস্তায় টায়ার পুড়িয়ে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে। যাত্রীবাহী গাড়ি ভাংচুর করে। বৈদ্যুতিক পিলারের ক্ষতিসাধন করে এবং বাজারের বৈদ্যুতিক সংযোগ বিচ্ছিন্ন ও বাজারে থাকা সিসি ক্যামেরা ভাংচুর করে।
এই সংবাদের ভিত্তিতে বাঁশখালী থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে জাতীয় পার্টির নেতা-কর্মীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে এবং ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে। এ ছাড়া মাহমুদুল ইসলাম চৌধুরীর ব্যক্তিগত দেহরক্ষীও তার অস্ত্র দিয়ে পুলিশকে পুলিশকে লক্ষ্য করে কয়েক রাউন্ড গুলি ছোড়ে। জনসাধারণের নিরাপত্তা বিধান, জান-মাল রক্ষা, সরকারী অস্ত্র-গুলি ও আত্মরক্ষার্থে পুলিশ পাল্টা গুলি ছুঁড়লে ‘উত্তেজিত জনতা’ ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়।
জেলা পুলিশের দাবি, জাতীয় পার্টির নেতা-কর্মীদের ছোড়া গুলিতে উপপরিদর্শক (এসআই) মোজাম্মেল খান, সুজন সিকদার ও ফারুক উদ্দিন এবং কনস্টেবল৯ রুবেল, শরীফ ও বাছেদ আলম গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হয়েছেন।
জেলা পুলিশের বক্তব্য, ‘সরকার দলীয় সমর্থক কর্তৃক মাহমুদুল ইসলাম চৌধুরীর বাড়ি ঘেরাও এবং গুলিবর্ষণের ঘটনা সত্য নয়।’
পুলিশের এই বক্তব্যের বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে মাহমুদুল ইসলাম চৌধুরীকে একাধিকবার ফোন করেও সাড়া মেলেনি।
সারাবাংলা/আরডি/এমআই