ব্যক্তি ইমেজে এগিয়ে খালিদ, পিছিয়ে নেই পিনাক চৌধুরী
২৩ ডিসেম্বর ২০১৮ ০৯:৫৯
।। মাহিদুল ইসলাম রিপন,ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট।।
দিনাজপুর: জেলা শহরের পশ্চিমে অবস্থিত বিরল-বোচাগঞ্জ উপজেলা নিয়ে গঠিত দিনাজপুর-২ আসন। গত ১০ বছরে রেকর্ড পরিমাণে উন্নয়ন ও ব্যক্তি ইমেজের কারণে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতিকের প্রার্থী খালিদ মাহমুদ চৌধুরীর এখন পর্যন্ত ভোটের পাল্লা ভারি রয়েছে। স্বাধীনতার পর থেকেই উন্নয়নবঞ্চিত এই দুই উপজেলায় বিভিন্ন উন্নয়ন মূলক প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছেন তিনি।
অপরদিকে আওয়ামী লীগের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বি বিএনপির ধানের শীষের প্রার্থী সাদিক রিয়াজ চৌধুরী পিনাক এবারই প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন। বিগত সময় দলীয় নেতাকর্মী ও স্থানীয়দের সাথে যোগাযোগ বজায় রাখার কারণে ব্যাপক সারা পাচ্ছেন পিনাক চৌধুরী। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রচারণা মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন তিনি। এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্তে ছুটছেন ভোটারদের দ্বারে দ্বারে।
স্থানীয় ভোটাররা বলছে, উন্নয়ন ও ব্যক্তি ইমেজের কারণে ভোটের লড়াইয়ে এগিয়ে আছে খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। তবে ভোটের মাঠে প্রচারণায় শক্ত অবস্থান নিয়ে থাকা ধানের শীষ প্রার্থী সাদিক রিয়াজ চৌধুরী পিনাকের সাথেই লড়াই হবে নৌকার মাঝি খালিদ মাহমুদ চৌধুরীর। এই আসনটিতে অন্যান্য দলের প্রার্থী থাকলেও আলোচনায় নেই কেউ।
নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা গেছে, আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দিনাজপুর-২ (বিরল-বোচাগঞ্জ) আসনে ১১৩টি কেন্দ্রে ৩ লাখ ৬ হাজার ৫৩১ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। এদের মধ্যে পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৫৪ হাজার ৫৩০ জন ও নারী ভোটার ১ লাখ ৫২ হাজার ১ জন। এবার নির্বাচনে দিনাজপুর-২ আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন আওয়ামী লীগের খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, বিএনপি’র সাদিক রিয়াজ, জাতীয় পার্টির জুলফিকার হোসেন, ইসলামী আন্দোলনের হাবিবুর রহমান ও মুসলীম লীগের এরশাদ হোসেন।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী ২০০৮ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এসেই বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য, হেভিওয়েট প্রার্থী সাবেক সংসদ সদস্য লে. জেনারেল মাহবুবুর রহমানকে বিপুল ভোটে পরাজিত করে চমক সৃষ্টি করেন। এমপি হওয়ার পর তিনি দলীয় কাউন্সিলে সাংগঠনিক সম্পাদক নির্বাচিত হন। আওয়ামী লীগের শক্ত ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত দিনাজপুর-২ (বিরল-বোচাগঞ্জ) আসনে বিগত আমলে উন্নয়নের ক্ষেত্রে পিছিয়ে পড়লেও খালিদ মাহমুদ চৌধুরী দুই উপজেলার উন্নয়নের চিত্র পাল্টে দিয়েছেন। ইতোপূর্বে বিরল উপজেলায় পৌরসভা উপহার দিয়ে ওই এলাকার মানুষের মনি কোঠায় ঠাঁই করে নিয়েছেন। এ ছাড়া যোগাযোগ ব্যবস্থা, বিদ্যুতায়ন, রাবার ড্যাম, নতুন নতুন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নির্মাণ, সামাজিক সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন, মসজিদ-মন্দির নির্মাণ, গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়নসহ বিভিন্ন অবকাঠামোগত উন্নয়ন করে দুই উপজেলার মানুষের মনে আস্থা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছেন।
২০০৮ সালে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সাবেক সংসদ সদস্য লে. জেনারেল মাহবুবুর রহমান বিপুল ভোটের ব্যবধানে আওয়ামী লীগ প্রার্থী খালিদ মাহমুদ চৌধুরীর কাছে পরাজিত হন। এরপর থেকেই লে. জে. মাহবুবুর রহমান জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন। এই সুযোগ ব্যবহার করে সাদিক রিয়াজ চৌধুরী পিনাক দখলে নেয় মাঠ। নির্বাচিত হয় বোচাগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সভাপতি পদে। দীর্ঘদিন অবস্থান করায় একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি থেকে মনোনয়ন পান পিনাক চৌধুরী। নির্বাচনের প্রচারণার প্রথম দিন থেকেই প্রচারণায় নামেন তিনি। দীর্ঘদিন থেকে দলীয় নেতাকর্মী ও স্থানীয়দের সাথে যোগাযোগ বজায় রাখায় নির্বাচনের মাঠে ব্যাপক সারা পাচ্ছে পিনাক চৌধুরী।
বিরল উপজেলার আজিমপুর গ্রামের হারেসুল ইসলাম জানান, বিরল-বোচাগঞ্জ নিয়ে গঠিত দিনাজপুর-২ আসনে বিগত দিনে ব্যাপক উন্নয়ন করায় ও ব্যক্তি ইমেজের কারণে নির্বাচনের মাঠে এগিয়ে আছে খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। তবে পিছিয়ে থাকলেও ব্যাপক প্রচারণা ও পূর্বের যোগাযোগ বজায় রাখায় নির্বাচনের মাঠে খালিদ মাহমুদ চৌধুরীর সাথে ভোটের লড়াইটা হবে পিনাক চৌধুরীর।
তিনি জানান, নতুন ভোটাররা খালিদ মাহমুদ চৌধুরীর পক্ষেই বেশি দেখা যাচ্ছে। আর প্রবীণদের মধ্যে সাদিক রিয়াজ চৌধুরী পিনাকের আলোচনা চলছে বেশি।
সারাবাংলা/এমএইচ