যুক্তরাষ্ট্রের আচরণ আরও গঠনমূলক হওয়া উচিত: বাংলাদেশ
২৩ ডিসেম্বর ২০১৮ ১৮:০৬
।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ।।
ঢাকা: আসন্ন ভোট নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে হতাশ হয়েছে বাংলাদেশ—জানিয়েছে, বন্ধু বা সহযোগি রাষ্ট্রগুলোর আচরণ আরও গঠনমূলক হওয়া উচিত। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে রোববার (২৩ ডিসেম্বর) বিকেলে এক বার্তায় এই তথ্য জানানো হয়।
এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় শুক্রবার (২১ ডিসেম্বর) (বাংলাদেশ সময় ২২ ডিসেম্বর) এক বিবৃতিতে জানায়, ‘এশিয়ান নেটওয়ার্ক ফর ফ্রি ইলেকশনস (এএনএফআরইএল/আনফ্রেল)-এর অধিকাংশ আন্তর্জাতিক নির্বাচন পর্যবেক্ষককে বাংলাদেশ সরকার একটি বিশ্বাসযোগ্য আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষণ মিশন চালানোর মতো যথাযথ সময়ের মধ্যে পরিচয়পত্র ও ভিসা দিতে না পারায় হতাশ যুক্তরাষ্ট্র।’
আরও পড়ুন: পর্যবেক্ষক ইস্যুতে ব্রিটেনের উদ্বেগের পর যুক্তরাষ্ট্রের হতাশা
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘যুক্তরাষ্ট্র সরকার ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক ইনস্টিটিউটের মাধ্যমে ওই মিশনে অর্থায়ন করেছিল। যথাসময়ে পরিচয়পত্র ও ভিসা না পেয়ে আনফ্রেল তাদের ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচন পর্যবেক্ষণ মিশন বাতিল করতে বাধ্য হয়েছে।’
যুক্তরাষ্ট্রের ওই বিবৃতির প্রেক্ষিতে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বার্তায় জানিয়েছে, ‘আসন্ন ৩০ ডিসেম্বরর ভোট নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের গত ২১ ডিসেম্বরের একটি বিবৃতি আমাদের নজর কেড়েছে। নিবন্ধিত সবগুলো রাজনৈতিক দলই এই নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে, যা সংবিধান দ্বারা গঠিত স্বাধীন ও নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনের তদারকিতে অনুষ্ঠিত হচ্ছে।’
‘আসন্ন এই নির্বাচন পর্যবেক্ষণের জন্য নির্বাচন কমিশন যখন পর্যবেক্ষকদের আহবান জানিয়েছে—তখন নির্বাচন কমিশনের সংশ্লিষ্ট নিয়ম অনুযায়ী পর্যবেক্ষণের জন্য আবেদন করা পর্যবেক্ষকদের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। এবারের নির্বাচন পর্যবেক্ষণের জন্য একাধিক রাষ্ট্র ও সংস্থার পক্ষে মোট ১৭৫ জন বিদেশি পর্যবেক্ষক আবেদন করে। যার মধ্যে আনফ্রেল নামের এই সংস্থাটিও ভোট পর্যবেক্ষণের অনুমতি চেয়ে আবেদন করেছে, যা নির্বাচন কমিশনে অনুমতির বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন। এ ছাড়া নির্বাচন কমিশন নিবন্ধিত ১১৮টি স্থানীয় সংস্থার ২৫ হাজার ৯২০ জন পর্যবেক্ষককে ভোট পর্যবেক্ষণের অনুমতি দিয়েছে।’
আনফ্রেল নামের এই সংস্থাটির পর্যবেক্ষণের মিশন বাতিল বিষয়ে বার্তায় বলা হয়, ‘সংস্থাটি নিজের উদ্যোগে পর্যবেক্ষণ মিশন বাতিল করেছে। কেন না তাদের আবেদনের অর্ধেক এরই মধ্যে অনুমতি পেয়েছে, বাকিগুলো অনুমতি পাওয়ার প্রক্রিয়ায় রয়েছে।’
বার্তায় আরও বলা হয়, ‘বাংলাদেশের বেসরকারি সংস্থা অধিকার, আনফ্রেল নামের এই সংস্থাটি থেকে অনুদান পেয়ে থাকে। সকলেই জানেন যে—বাংলাদেশের বিরুদ্ধে পক্ষপাতমূলক কাজ করে থাকে (মানবাধিকার সংগঠন) অধিকার। বিশেষ করে বর্তমান ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে। অধিকারের এই পক্ষপাতমূলক আচরণ একাধিক প্রতিবেদনে প্রকাশ পেয়েছে। অধিকারের সর্বোচ্চ পর্যায়ের একজন ব্যক্তিকে বিএনপি-জামাত সরকারের ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বানানো হয়েছিল, তখনই সংস্থাটিকে নিয়মের বাইরে গিয়ে নির্বাচন পর্যবেক্ষক সংস্থা হিসেবে নিবন্ধন দেওয়া হয়। ১৯৭২ সালের গণপ্রতিনিধিত্ব আইনের ৯১-এর সি এর ১-এ বলা আছে, কমিশন পর্যবেক্ষক হিসেবে তাকেই নিয়োগ দিতে পারবে, যার রাজনৈতিক কোনো পরিচয় নেই বা কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত না বা যিনি কোনো প্রার্থী না।’
যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে গঠনমূলক আচরণ আশা করে বাংলাদেশ—উল্লেখ করে বার্তায় বলা হয়, ‘বিশ্বে যেসব রাষ্ট্রে গণতান্ত্রিক চর্চা হয় এবং অন্য রাষ্ট্রের প্রতি যথাযথ মর্যাদা প্রদর্শন করা হয়, বাংলাদেশ তাদের মধ্যে অন্যতম। বাংলাদেশ তার বন্ধু রাষ্ট্র এবং সহযোগী রাষ্ট্রগুলো থেকেও এমন গঠনমূলক আচরণ আশা করে।’
সারাবাংলা/জেআইএল/এমআই
আরও পড়ুন: ভোটের পর্যবেক্ষক নিয়োগে ব্রিটেনের উদ্বেগ