।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ।।
চট্টগ্রাম ব্যুরো : চট্টগ্রামের হাটহাজারী ও ফটিকছড়ি উপজেলায় ধানের শীষ প্রতীকের দুই প্রার্থীর উপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। হামলায় ফটিকছড়িতে বিএনপির প্রার্থী অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল আজিমউল্লাহ বাহার আহত হয়েছেন। অন্যদিকে, হাটহাজারী আসনের প্রার্থী কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল সৈয়দ মুহাম্মদ ইব্রাহীমের গাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে এবং কয়েকজন নেতাকর্মী হামলায় আহত হয়েছেন।
রোববার (২৩ ডিসেম্বর) বিকেলে পৃথক এই দু’টি হামলার ঘটনা ঘটেছে।
চট্টগ্রামের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (হাটহাজারী সার্কেল) আবদুল্লাহ আল মাসুম সারাবাংলাকে বলেন, ‘ফটিকছড়িতে হামলার ঘটনা মৌখিকভাবে শুনেছি। কেউ অভিযোগ করেনি। অভিযোগ করলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে হাটহাজারীতে কোনো প্রার্থীর ওপর হামলার খবর আমার জানা নেই।’
ফটিকছড়ি
রোববার (২৩ ডিসেম্বর) বিকেল তিনটার দিকে চট্টগ্রাম-২ (ফটিকছড়ি) আসনের তকিরহাটে ধানের শীষের প্রার্থী আজিমউল্লাহ বাহার গণসংযোগে যান।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, গণসংযোগের একপর্যায়ে ১০-১৫ জন যুবক বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে হামলা করে। হামলায় আহতদের মধ্যে কয়েকজনের নাম পাওয়া গেছে। এরা হলেন- প্রার্থী আজিমউল্লাহ বাহার, আমিন তালুকদার (৩০), মুহাম্মদ সোহেল (২১), মোর্শেদ (৩০), আহমদ রশিদ (৪৮), সাইফুল ইসলাম (২৯), আজম খান (৪২), রাসেল (৩০), এনাম হোসেন (৩৪), গিয়াস উদ্দিন (৩৩), রায়হান (১৮), মুন্না(২৫)।
আজিমউল্লাহ বাহারসহ আহতরা স্থানীয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়েছেন। তিনি কমপক্ষে ২০ জন আহত হয়েছেন বলে দাবি করেছেন।
আজিমউল্লাহ বাহার এই ঘটনার জন্য মহাজোটের প্রার্থী নজিবুল বশর মাইজভাণ্ডারির সমর্থকদের দায়ী করে সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমাদের শান্তিপূর্ণ গণসংযোগের সময় মহাজোট প্রার্থীর কতিপয় যুবক লাঠি-সোটা নিয়ে অতর্কিতভাবে হামলা চালিয়েছে। পরে মহাজোটের প্রার্থীর লোকজন তাদের নির্বাচনি ক্যাম্প নিজেরা ভাঙচুর করে আমাদের ওপর দোষ চাপাচ্ছে।’
তবে ফটিকছড়ির স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা দাবি করেছেন, উপজেলার জাফতনগরে নজিবুল বশর মাইজভাণ্ডারির নির্বাচনি ক্যাম্প ভাঙচুরের পর এই ঘটনার সূত্রপাত হয়েছে। আজিমউল্লাহ বাহারের সমর্থকরা এই ক্যাম্প ভাঙচুর করেছেন।
এদিকে হামলার পর বিএনপি নেতাকর্মীরা ফটিকছড়ি উপজেলার নাজিরহাটে বিভিন্ন দোকানপাট ও যানবাহন ভাঙচুর করেছে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে। এসময় সেখান থেকে কয়েকজনকে আটকের তথ্য পাওয়া গেছে।
হাটহাজারী
রোববার বিকেল ৪টার দিকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের এক নম্বর গেইটের সামনে সৈয়দ মুহাম্মদ ইব্রাহীমের প্রচারণার গাড়িতে হামলা হয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন।
ইব্রাহীম সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমার মাইক্রোবাস যখন বিশ্ববিদ্যালয়ের এক নম্বর গেইটে পৌঁছায়, তখন কয়েকজন এসে আমাদের ওপর আক্রমণ করে। তারা আমাকে জোর করে গাড়ি থেকে টেনে নামানোর চেষ্টা করে। কারণ আমাকে নামাতে পারলে সঙ্গীরা বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে। সঙ্গীদের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেলে তখন তারা গুলি করবে।’
‘আমি তাদের হাতে পাথরের টুকরা দেখেছি। আমি যখন গাড়ি থেকে নামিনি, তখন গাড়ির সামনের কাচ লক্ষ্য করে তারা সেই পাথরের টুকরা ছুঁড়ে। আমার মাথার পাশ দিয়ে পাথর গিয়ে গাড়িতে বসা আমার কর্মীদের একজনের মাথায় লেগেছে। পেছনের গাড়িও ভেঙে দিয়েছে’, বলেন তিনি।
ইব্রাহীম হামলার জন্য প্রতিদ্বন্দ্বী জাতীয় পার্টির প্রার্থী আনিসুল ইসলাম মাহমুদের অনুসারীদের দায়ী করে বলেন, ‘আমি ছিলাম লক্ষ্যবস্তু। আমাকে হত্যার জন্য এই হামলা হয়েছে। প্রতিপক্ষ লাঙ্গলের প্রার্থী কতুটুক নিচে নামতে পারলে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীকে হত্যা করতে চায়, এটা আমার মাথায়ও আসছে না। এই ধরনের অগণতান্ত্রিক আচরণের জবাব ৩০ ডিসেম্বর হাটহাজারীবাসী ব্যালটের মাধ্যমে দেবে।’
স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সেলিম এবং ছাত্রলীগ নেতা শাহ-আলমের নেতৃত্বে এই হামলা হয়েছে বলে দাবি করেন ইব্রাহীম।
সারাবাংলা/আরডি/এমও