পুলিশের বিরুদ্ধে ‘অভিযোগের পাহাড়’ সুফিয়ান-এনামের
২৩ ডিসেম্বর ২০১৮ ২২:২০
।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ।।
চট্টগ্রাম ব্যুরো: হামলা, প্রচারে বাধা, পুলিশের অসহযোগিতা, নেতা-কর্মীদের মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ এনে সংবাদ সম্মেলন করেছেন চট্টগ্রামে ধানের শীষ প্রতীকের দুই প্রার্থী।
তারা হলেন, চট্টগ্রাম-৮ (বোয়ালখালী-চান্দগাঁও) আসনের প্রার্থী মহানগর বিএনপির সিনিয়র সহসভাপতি আবু সুফিয়ান এবং চট্টগ্রাম-১২ (পটিয়া) আসনের প্রার্থী দক্ষিণ জেলা বিএনপির সিনিয়র সহসভাপতি এনামুল হক এনাম।
রোববার (২৩ ডিসেম্বর) আবু সুফিয়ান ও এনামুল হক এনাম চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে বিভিন্ন অভিযোগ করেছেন।
সংবাদ সম্মেলনে আবু সুফিয়ান বলেন, ‘আমি যেখানেই গণসংযোগে গিয়েছি সেখানেই ধানের শীষের পক্ষে ব্যাপক সাড়া পেয়েছি। ধানের শীষের পক্ষে গণজোয়ার সৃষ্টি হয়েছে।’
গণজোয়ার ঠেকাতে শতাধিক বিএনপি নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আগে ছিল গায়েবী মামলা এখন তার সঙ্গে কিছু অনুষঙ্গ সৃষ্টি হয়েছে জাল টাকা ও অস্ত্র আইনের মামলা। নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে মোবাইল চুরির মামলাও হচ্ছে।’
‘গত সাপ্তাহে বায়েজিদ থানা যুবদল নেতা আসাদুজ্জামান রুবেলকে থানায় নিয়ে গিয়ে জাল টাকার মামলা দেওয়া হয়েছে। ষোলশহর ওয়ার্ড যুবদলের সাধারণ সম্পাদক ইস্কান্দারকে আমার ব্যানার লাগানোর সময় গ্রেফতার করে জাল টাকার মামলায় ফাঁসানো হয়েছে। এ ছাড়া তার নির্বাচনি অফিসে তিন দফা হামলারও অভিযোগ করেছেন আবু সুফিয়ান।
তিনি বলেন, ‘আমার গতকাল (শনিবার) রাতে বোমা হামলা হয়েছে। গতকালের হামলা ছিলো পরিকল্পিত ও নৃশংস। দুইশতাধিক সন্ত্রাসী মুখ বেঁধে আমার নির্বাচনি কার্যালয়ে হামলা চালিয়ে ১টি পিকআপ, ১টি কার, ১০টি মোটর সাইকেল ও দুইটি সিএনজি অটোরিকশা, অফিসের আসবাবপত্র ও অন্যান্য সারঞ্জাম ভাংচুর করা হয়েছে।
হামলার পর জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে আবু সুফিয়ান চান্দগাঁও থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন বলেও জানিয়েছেন।
অন্যদিকে, চট্টগ্রামের পটিয়ায় ধানের শীষের প্রার্থী এনামুল হক এনামের প্রচারে অংশ নেওয়া বিএনপি ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের ৬০ জন নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে অভিযোগ এনেছেন তিনি।
এ ছাড়া হয়রানির জন্য তিনি পটিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মো. নেয়ামত উল্লাহর প্রত্যাহার দাবি করেছেন।
সংবাদ সম্মেলনে এনাম বলেন, ‘একদিকে গণসংযোগে গেলে সরকারদলীয় সমর্থকরা হামলা করছে। অন্যদিকে নেমপ্লেট ছাড়া পুলিশের পোশাক পড়া সদস্যরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে নেতা-কর্মীদের হয়রানি করছে। পটিয়া থানা পুলিশের কাছে এসব অভিযোগ দিলেও তারা কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না।’
‘আমাকে নির্বাচন থেকে দূরে রাখতে পুলিশ ও সরকারদলীয় সমর্থকরা একজোট হয়ে মাঠে নেমেছে। পুলিশের কাছে অভিযোগ দিলেও কোনো প্রতিকার পাচ্ছি না। রিটার্নিং কর্মকর্তাকে জানালেও কোনো প্রতিকার পাচ্ছি না।’
এনামুল হকের অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে পটিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মো. নেয়ামত উল্লাহ বলেন, এসব অভিযোগের কোনো সত্যতা নেই। উনারা যখনই চেয়েছেন, আমরা সহযোগিতা করেছি। বুধপুরা বাজারে উনি বর্তমান এমপির বিরুদ্ধে বিতর্কিত বক্তব্য দিলে স্থানীয় জনগণ তাকে ঘেরাও করে গণপিটুনি দিতে চেয়েছিল। আমি ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে উনাকে রক্ষা করেছি। পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ করলেও উনি এসব অভিযোগ নিয়ে একবারের জন্যও থানায় আসেননি।
উল্লেখ্য, চট্টগ্রাম-৮ আসনে আবু সুফিয়ানের সঙ্গে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আছেন জাসদ নেতা মঈনউদ্দিন খান বাদল।
সারাবাংলা/আরডি/এমআই