Sunday 08 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

প্রতিশ্রুতিতে ইয়াবা, রোহিঙ্গা ও জলদস্যুতে জোর নেই, হতাশ ভোটাররা


২৪ ডিসেম্বর ২০১৮ ১১:২৭

।। ওমর ফারুক হিরু, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট ।।

কক্সবাজার: নির্বাচনে নানা প্রতিশ্রুতির ফুলঝুরি নিয়ে ভোটারদের দ্বারে দ্বারে যাচ্ছেন কক্সবাজারের সংসদীয় ৪টি আসনের প্রার্থীরা।

তাদের প্রতিশ্রুতিগুলোর মধ্যে আছে- উড়াল সড়ক নির্মাণ, সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা, বেকারত্ব দূরীকরণ, ভূমি অধিগ্রহণের যথাযথ ক্ষতিপূরণ, লবণ শিল্পে উন্নয়ন, ঈদগাঁওকে উপজেলায় রূপান্তর, রেললাইন সম্প্রসারণ, পৌরসভাকে সিটি করপোরেশনে উন্নীতকরণ, সড়ক যোগাযোগ উন্নয়ন ও পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠাসহ নানা উন্নয়নের ফিরিস্তি। তবে জনগুরুত্বপূর্ণ কিছু বিষয় নেই কোনো প্রার্থীর ইশতেহারেই। এতে হতাশ সচেতন ভোটারেরা।

সচেতন ভোটাররা বলছেন, ‘কক্সবাজারের উন্নয়নের অগ্রগতিতে এমনিতেই ২৫টি মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নের পথে থাকলেও একের পর এক বড় বড় প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন প্রার্থীরা। তবে কক্সবাজারসহ পুরো বাংলাদেশের মাথা ব্যথার কারণ রোহিঙ্গা, ইয়াবা, মানবপাচার ও জলদস্যুর মত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে প্রার্থীদের জোর কম।

জানা গেছে, কক্সবাজার-১ (পেকুয়া-চকরিয়া) আসনের নৌকা প্রতীকের আওয়ামী লীগের প্রার্থী আফর আলম প্রতিশ্রুতি দেন, তিনি পেকুয়াকে পৌরসভা ও মাতামুহুরীকে উপজেলায় প্রতিষ্ঠা করবেন, চকরিয়ায় উড়াল সড়ক নির্মাণ করবেন, মাতামুহুরী নদী খনন ও শেখ রাসেল শিশুপার্ক স্থাপন করবেন।

অন্যদিকে তার প্রতিপক্ষ ধানের শীষের প্রতীক নিয়ে বিএনপি থেকে নির্বাচন করা হাসিনা আহমেদের প্রতিশ্রুতি হলো, গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন, সুশাসন ও গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠা, সাধারণ মানুষের বিরুদ্ধে গায়েবি ও মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার।

কক্সবাজার-২ (মহেশখালী-কুতুবদিয়া) আসনের নৌকার প্রার্থী আশেক উল্লাহ রফিকের প্রতিশ্রুতি হলো, মহেখালীতে কয়লাভিত্তিক তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রসহ নানা উন্নয়নমূলক কাজের অধিগ্রহণ হওয়া জমির মালিকদের উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দেওয়া, নিশ্চিত করবেন এই ক্ষতিপূরণ নিতে গিয়ে যেন কেউ হয়রানি না হয়।

এ ছাড়া এসব প্রকল্পের মধ্যে স্থানীয় লোকজনদের চাকরিতে নিয়োগ দেওয়া হবে। তিনি আরও বলেন, লবণের উপযুক্ত মূল্য স্থায়ীকরণ করা হবে। পাশাপাশি বাহির থেকে লবণ আমদানি বন্ধ করা হবে।

তার প্রতিপক্ষ ধানের শীষের প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করা সাবেক সংসদ সদস্য আলমগীর মুহাম্মদ মাহফুজ উল্লাহ ফরিদের প্রতিশ্রুতি হল, বিএনপির জয়ের মাধ্যমে উন্নয়নে ভরিয়ে দেবেন মহেশখালী।

কক্সবাজার-৩ (রামু- সদর) আসনের আওয়ামী লীগের প্রার্থী সাইমুম সরওয়ার কমল প্রতিশ্রুতি হিসেবে বলেন, কক্সবাজার রেললাইন প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে, দ্রুত সময়ের মধ্যে কক্সবাজার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের উন্নয়ন কাজ শেষ করা হবে, ঈদগাহকে উপজেলায় রূপান্তর করা হবে, কক্সবাজারে ৫০০ শয্যার হাসপাতাল, ঈদগাঁহ কলেজ ও স্কুলকে সরকারিকরণ করা হবে, রামুতে হাইটেক পার্কসহ কক্সবাজারে জাতীয় ফুটবল স্টেডিয়াম নির্মাণ করা হবে।

তার প্রতিপক্ষ বিএনপির লুৎফর রহমান কাজল প্রতিশ্রুতি দেন, রেললাইন সম্প্রসারণ করা হবে, ঈদগাঁওকে উপজেলায় রূপান্তর করা হবে, কক্সবাজার পৌরসভাকে সিটি করপোরেশনে উন্নীত করা হবে, কক্সবাজারকে পরিচ্ছন্ন নগরী হিসেবে গড়া হবে, সড়ক যোগাগোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন ও কক্সবাজার পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হবে।

কক্সবাজার ৪ (উখিয়া-টেকনাফ) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ধানের শীষের শাহজাহান চৌধুরী প্রতিশ্রুতি দেন সরকারের দুর্নাম ঘোঁচাবে এবং মাদক মুক্ত করে এলাকার যুব সমাজকে রক্ষা করবে।

অন্যদিকে নৌকার প্রার্থী শাহীন আক্তারের প্রতিশ্রুতি হল, উখিয়া-টেকনাফের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখা হবে। তিনি বর্তমান সাংসদ আবদুর রহমান বদির স্ত্রী।

প্রার্থীদের এসব প্রতিশ্রুতিতে ইয়াবা, রোহিঙ্গা আর জলদস্যুর সমস্যা সমাধানে জোর না থাকায় হতাশ সচেতন ভোটার। তারা বলছেন উন্নয়নের পাশাপাশি দরকার এই বড় বড় সমস্যগুলোর সমাধান।

এ ব্যাপারে সচেতন ভোটার কক্সবাজার কেজি অ্যান্ড মহেল হাই স্কুলের শিক্ষর বেদারুল আলম জানান, শুধু কক্সবাজার নয় পুরো দেশের উন্নয়নের অন্যতম অন্তরায় মাদক। কক্সবাজারের সাংসদদের উচিত মাদক নির্মূল। বিশেষ করে ইয়াবার আগ্রাসন বন্ধে পদক্ষেপ গ্রহণ করা।

সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন)-এর জেলা সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুর রহমান জানান, বর্তমান সময়ে রোহিঙ্গার বিষয়টি শুধু কক্সবাজারের নয় পুরো বাংলাদেশের মাথা ব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। মানবিক কারণে মিয়ানমার থেকে আসা এই সাড়ে ১১ লাখ রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিতে গিয়ে খুব চাপে পড়েছে কক্সবাজারবাসীসহ পুরো বাংলাদেশ। তাই এই সমস্যা সমাধানে সবার সহযোগিতা প্রয়োজন। প্রার্থীদের প্রার্থীদেরও এ বিষয়ে গুরুত্বদেওয়া দরকার।

সাংবাদিক নুরুল আজিম নিহাদ জানান, মহেশখালীতের কয়লাভিত্তিক তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রসহ নানা উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড চলছে। কিন্তু ওই মহেশখালী ও কুতুবদিয়া দ্বীপের চারপাশে জলদস্যুদের অবস্থান। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি হয়ে পড়েছে। এই সমস্যার সমাধান চাইছেন স্থানীয় ভোটাররা। যতই প্রতিশ্রুতি থাক সকালের প্রত্যাশা উন্নত হোক পর্যটন নগরী কক্সবাজার।

সারাবাংলা/এমআই

প্রতিশ্রুতিতে ইয়াবা রোহিঙ্গা ও জলদস্যুতে জোর নেই হতাশ ভোটাররা


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

ভূতের গলির বাসায় মিলল বৃদ্ধের মরদেহ
৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১১:০০

সম্পর্কিত খবর