Saturday 28 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ইন্দোনেশিয়া সুনামি: মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৪২৯, আহত ১৪৫৯


২৫ ডিসেম্বর ২০১৮ ১২:০৯

।। আন্তর্জাতিক ডেস্ক ।।

ইন্দোনেশিয়ার আনাক ক্রাকাতোয়া আগ্নেয়গিরির উদগিরণের ফলে সৃষ্ট সুনামিতে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৪২৯ জনে পৌঁছেছে। নিখোঁজ রয়েছেন আরও ১৫০ জন। আহত হয়েছেন আরও ১৪৫৯ জন। দেশটির দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ একথা জানিয়েছে। খবর বিবিসির।

শনিবার (২২ ডিসেম্বর) সুনামির আঘাতে ভেসে যায় ইন্দোনেশিয়ার সুমাত্রা ও জাভা দ্বীপের উপকূলীয় শহরগুলো। ধারণা করা হচ্ছে, আগ্নেয়গিরির উদগিরণের ফলে সমুদ্রের তলদেশে ভূমিধসের ঘটনা ঘটেছে। যার প্রভাবে সৃষ্টি হয়ে দানবীয় ঢেউয়ের। আর এক সময় তা সুনামির রূপে আঘাত হানে ইন্দোনেশিয়ার সান্দা স্ট্রেইট উপকূলে।

ইন্দোনেশিয়ার দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থার মুখপাত্র সুতোপো পুরয়ো নুগ্রোহো এক বিবৃতিতে বলেন, এখন পর্যন্ত আহতের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে ১৪৫৯জনে। নিখোঁজ রয়েছেন আরও ১৫০ জন।

এদিকে, নতুন সুনামির আশঙ্কায় আগ্নেয়গিরির নিকটে অবস্থিত এলাকা থেকে বাসিন্দাদের নিরাপদে সরে যাওয়ার জন্য সতর্ক করা হয়েছে। রবিবার (২৩ ডিসেম্বর) পুনরায় অগ্ন্যুৎপাত ঘটেছে আনাক ক্রাকাতোয়া আগ্নেয়গিরিতে।

আশঙ্কা করা হচ্ছে, মৃতের সংখ্যা আরও বৃদ্ধি পাবে। সুনামির আঘাতে অনেক রাস্তা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ধীর গতিতে চলছে উদ্ধারকাজ। অনেক এলাকাতেই পৌঁছানো সম্ভব হচ্ছে না।

ইন্দোনেশিয়া সুনামি, মৃতের সংখ্যা বৃদ্ধি, আহতের সংখ্যা বৃদ্ধি

জরুরি সতর্কতা

ইন্দোনেশিয়ার জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থার মুখপাত্র নুগ্রোহো এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, রোববার আনাক ক্রাকাতোয়া থেকে আবারও অগ্ন্যুৎপাত হয়। সেখানে ছাই ও ধোঁয়া উড়ছে। ভূতাত্ত্বিক ও আবহাওয়াবিদরা সমুদ্র তীরবর্তী এলাকা থেকে সকলকে দূরে থাকতে নির্দেশনা দিয়েছেন।

বিজ্ঞাপন

সুনামির পূর্ব সতর্কতা দেওয়া সম্ভব হয়নি উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ভূমিকম্প পর্যবেক্ষণ করে সুনামি সতর্কতা জারির জন্য তারা ‘ওয়ার্নিং সিস্টেম’ স্থাপন করেছেন। তবে সমুদ্রের তলদেশ থেকে ভূমিধসের ফলে সুনামি হবে তা তারা ভাবতে পারেননি।

১৮৮৩ সালে ক্রাকাতোয়া আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত থেকে সৃষ্ট জ্বালামুখ বা ক্যালাডেরা থেকে ১৯২৭ সালে আনাক ক্রাকাতোয়া আগ্নেয়গিরির উদ্ভব ঘটে। সম্প্রতি কয়েকমাস ধরে এটিকে সক্রিয় হতে দেখা যায়।

পৃথিবীর ১৩শতাংশেরও বেশি আগ্নেয়গিরির অবস্থান ইন্দোনেশিয়ায় হওয়ায় দেশটিতে প্রায়ই ভূমিকম্প ও নানান প্রাকৃতিক দুর্যোগের ঘটনা ঘটে। সেপ্টেম্বরে ইন্দোনেশিয়ার সুলাওয়েসি দ্বীপে একটি শক্তিশালী ভূমিকম্পের আঘাতে প্রাণ হারান ২ হাজারের বেশি মানুষ। এর আগে ২০০৪ সালের ডিসেম্বরে এক শক্তিশালী ভূমিকম্পের পর ভারত মহাসাগর থেকে সৃষ্ট সুনামিতে ১৩ দেশে ২ লাখ ২৮ হাজার মানুষ প্রাণ হারান। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি প্রাণহানী হয় ইন্দোনেশিয়ায়।

তবে আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতের ফলে সুনামি হওয়ার ঘটনা কম। ১৮৮৩ সালে মানব ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়ানক অগ্ন্যুৎপাতগুলোর একটি ঘটে ক্রাকাতোয়া আগ্নেয়গিরিতে। ওই অগ্ন্যুৎপাতের পর ৪১ মিটার পর্যন্ত উঁচু ঢেউসহ সুনামি সৃষ্টি হয়। প্রাণ হারায় ৩০ হাজারের বেশি মানুষ। কেবল গরম ছাই থেকে মৃত্যু হয় কয়েক হাজার মানুষের।

ওই অগ্ন্যুৎপাতে ক্রাকাতোয়া থেকে উদগিরণে অন্তত ২০০ মেগা টন টিএনটি (ট্রাই নাইট্রো টলুয়িন) বিস্ফোরক ফাটলে যে শক্তি নির্গত হয় সে মাত্রার বিস্ফোরণ হয়েছিল। ১৯৪৫ সালে হিরোশিমায় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় চালানো নিউক্লিয়ার বোমা হামলায় সৃষ্ট বিস্ফোরণের চেয়ে ১৩ হাজার গুণ শক্তিশালী ছিল এটি। ওই বিস্ফোরণের পর বিশ্বের তাপমাত্রা ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস কম ছিল পরবর্তী এক বছরজুড়ে। দৃশ্যত উধাও হয়ে গিয়েছিল আগ্নেয়গিরি সংলগ্ন দ্বীপটি।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/ আরএ

আহতের সংখ্যা বৃদ্ধি ইন্দোনেশিয়া সুনামি মৃতের সংখ্যা বৃদ্ধি

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

দু’দিনে ভারতে ৯৯ টন ইলিশ রফতানি
২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৭:৩৪

সম্পর্কিত খবর