২৫ জামায়াত নেতার প্রার্থিতা নিয়ে ফের আবেদন, শুনানি কাল
২৬ ডিসেম্বর ২০১৮ ১১:৪৫
।। সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট ।।
ঢাকা: একাদশ জাতীয় নির্বাচনে জামায়াতে ইসলামীর ২৫ নেতার প্রার্থিতার বৈধতা দিয়ে নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে এবার হাইকোর্টে আবেদন করেছেন তরিকত ফেডারেশনের মহাসচিবসহ চার ব্যক্তি। আগামীকাল বৃহস্পতিবার (২৭ ডিসেম্বর) এ আবেদনের শুনানি অনুষ্ঠিত হবে।
বুধবার (২৬ ডিসেম্বর) সকালে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় রিটটি দায়ের করেন তরিকত ফেডারেশনের মহাসচিব রেজাউল হক চাঁদপুরীর আইনজীবী ব্যারিস্টার তানিয়া আমীর।
আবেদনটি আদালতে উপস্থাপনের পর বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি খায়রুল আলমের হাইকোর্ট বেঞ্চ শুনানির জন্য আগামীকাল বৃহস্পতিবার দিন ঠিক করেছেন।
এর আগে, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে যাওয়া ২৫ জামায়াত নেতার প্রার্থিতার বৈধতা নিয়ে নির্বাচন কমিশনে আবেদন করেন তরিকত ফেডারেশনের মহাসচিবসহ চার ব্যক্তি। সেই আবেদনে সাড়া না পেয়ে ওই ২৫ প্রার্থীর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে সোমবার (১৭ ডিসেম্বর) তরিকত ফেডারেশনের মহাসচিব সৈয়দ রেজাউল হক চাঁদপুরী রিট দায়ের করেন। এদিন রিটটির পক্ষে আংশিক শুনানি করেন ব্যারিস্টার তানিয়া আমীর।
পরে মঙ্গলবার (১৮ ডিসেম্বর) সকালে ফের এই রিটের শুরু হয়। বিচারপতি আশফাকুল ইসলাম ও বিচারপতি মোহাম্মদ আলীর হাইকোর্ট বেঞ্চ এ বিষয়ে রিট শুনানি শেষে রুল জারি করে তিন দিনের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে নির্বাচন কমিশনকে নির্দেশ দেন। বৃহস্পতিবার (২০ ডিসেম্বর) দুপুরে ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ জানান, ওই দিন তারা আদেশটি পেয়েছেন। এ বিষয়ে সোমবারের (২৪ ডিসেম্বর) মধ্যে সিদ্ধান্ত নেবে ইসি।
রোববার (২৩ ডিসেম্বর) বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করে তবে ইসি জানায়, জামায়াত নেতাদের প্রার্থিতা বাতিল করার আইনি এখতিয়ার তাদের নেই। ইসির কমিশন সভা শেষে ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ বলেন, কমিশন সভায় জামায়াতের ২৫ প্রার্থীর প্রার্থিতা বিষয়ে হাইকোর্টের আদেশ চুলচেরা বিশ্লেষণ করা হয়েছে। আদেশ বিশ্লেষণ করে কমিশন দেখেছে, বিদ্যমান আইনে এসব প্রার্থীর প্রার্থিতা বাতিল করার কোনো সুযোগ নেই। ফলে এই ২৫ জামায়াত নেতার প্রার্থিতা বহাল থাকছে।
এরই পরিপ্রেক্ষিতে এবার বিষয়টি নিয়ে ফের হাইকোর্টে আবেদন করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, ২০ দলীয় জোটের শরিক বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ২২ নেতাকে ধানের শীষ প্রতীকে মনোনয়ন দিয়েছে বিএনপি। এছাড়া, বাকি তিনজন জামায়াত নেতা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন।
এবারের নির্বাচনে জামায়াত প্রার্থীরা হলেন— দিনাজপুর-১ আসনে মোহাম্মদ হানিফ, দিনাজপুর-৬ আসনে মোহাম্মদ আনোয়ারুল ইসলাম, নীলফামারী-২ আসনে মনিরুজ্জামান মন্টু, নীলফামারী-৩ আসনে মোহাম্মদ আজিজুল ইসলাম, গাইবান্ধা-১ আসনে মাজেদুর রহমান সরকার, সিরাজগঞ্জ-৪ আসনে মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান, পাবনা-৫ আসনে মাওলানা ইকবাল হুসাইন, ঝিনাইদহ-৩ আসনে অধ্যাপক মতিয়ার রহমান, যশোর-২ আসনে আবু সাঈদ মুহাম্মদ শাহাদাত হোসাইন, বাগেরহাট-৩ আসনে অ্যাডভোকেট আবদুল ওয়াদুদ, বাগেরহাট-৪ আসনে অধ্যাপক আবদুল আলীম, খুলনা-৫ আসনে অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, খুলনা-৬ আসনে মাওলানা আবুল কালাম আযাদ, সাতক্ষীরা-২ আসনে মুহাদ্দিস আবদুল খালেক, সাতক্ষীরা-৩ আসনে মুফতি রবিউল বাশার, সাতক্ষীরা-৪ আসনে গাজী নজরুল ইসলাম, পিরোজপুর-১ আসনে শামীম সাঈদী, ঢাকা-১৫ আসনে ডা. শফিকুর রহমান, সিলেট-৬ আসনে মাওলানা হাবিবুর রহমান, কুমিল্লা-১১ আসনে ডা. আবদুল্লাহ মো. তাহের, চট্টগ্রাম-১৫ আসনে আ ন ম শামসুল ইসলাম ও কক্সবাজার-২ আসনে হামিদুর রহমান আযাদ।
চলতি বছরের ২৯ অক্টোবর রাজনৈতিক দল জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন বাতিল করে প্রজ্ঞাপন জারি করে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এর আগে ২০১৩ সালে হাইকোর্টের রায়ে দলটির নিবন্ধন অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করা হয়।
সারাবাংলা/এজেডকে/টিআর