চাকরি না পেয়ে সাংবাদিকের আত্মাহুতি, তিউনিশিয়ায় বিক্ষোভ
২৬ ডিসেম্বর ২০১৮ ২১:০১
।। আন্তর্জাতিক ডেস্ক ।।
তিউনিশিয়ায় এক সাংবাদিকের আত্মাহুতির পর দেশজুড়ে বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। মৃত্যুর আগে এক ভিডিওবার্তায় দেশের অর্থনৈতিক মন্দা ও চাকরি না পাওয়ায় হতাশা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেন ওই সাংবাদিক। খবর আল জাজিরার।
আত্মাহুতি দেওয়া সাংবাদিকের নাম আব্দেররাজাক যরুগি। মৃত্যুর সময় তার বয়স হয়েছিল ৩২ বছর। নিজের গায়ে আগুন জ্বালিয়ে দেওয়ার আগে তিনি অনলাইনে একটি ভিডিও প্রকাশ করেন। তাতে তিউনিশিয়ায় জীবন যাপনের দুরবস্থা ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি। সোমবার (২৪ ডিসেম্বর) ক্যাসেরিন শহরে এই ঘটনা ঘটে।
নিজের শেষ ভিডিওবার্তায় যরুগি, বেকারত্ব ও ২০১১ সালে তুনিশিয়ায় শুরু হওয়া আরব বসন্ত বিদ্রোহের প্রতিশ্রুতি পূরণ না হওয়ার প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
প্রসঙ্গত, ২০১০ সালে তিউনিশিয়ায় দুর্নীতি ও অর্থনীতির মন্দাবস্থার প্রতিবাদে নিজের গায়ে কেরোসিন ঢেলে আত্মাহুতি দিয়েছিলেন মোহাম্মদ বৌজাজি নামের এক ফলের দোকানদার। ওই ঘটনা সৃষ্টি দিয়েছিল দেশব্যাপী বিক্ষোভের। পতন হয়েছিল তৎকালীন সরকারের। পরবর্তীতে এই বিক্ষোভ আরব বসন্ত নামে পরিচিতি পায়। ধীরে ধীরে আরব বসন্ত ছড়িয়ে পরে পুরো মধ্যপ্রাচ্যে। তবে যরুগি তার ভিডিওতে দাবি করেন, ওই বিক্ষোভে জানানো দাবি আজও পূরণ হয়নি।
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, যরুগিকে সোমবার হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার কিছুক্ষণ পরই তার মৃত্যু হয়। কিন্তু তার আত্মাহুতি, দেশব্যাপী বিক্ষোভের সূচনা ঘটিয়েছে। ক্যাসেরিনে বিক্ষোভের মাত্রা ছিল সবচেয়ে বেশি। বিক্ষোভকারীদের দমাতে পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ছুড়েছে, প্রধান সব সড়ক বন্ধ করে রেখেছে। পাল্টা জবাবে বিক্ষোভকারীরা পুলিশকর্মীদের লক্ষ্য করে পাথর ছুড়েছে।
তিউনিশিয়ার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র সোফিয়ানে যাগ মঙ্গলবার (২৫ ডিসেম্বর) বলেন, এখন পর্যন্ত বিক্ষোভে অন্তত ছয় পুলিশকর্মী আহত হয়েছেন। গ্রেফতার করা হয়েছে বেশ কয়েকজন বিক্ষোভকারীকে।
সোমবারের পর মঙ্গলবার রাতেও ক্যাসেরিনে বিক্ষোভ হয়। এছাড়া দেশের অন্যান্য অংশেও বিক্ষোভের খবর পাওয়া গেছে। যরুগি তার শেষবার্তায় বলেন, যাদের জীবিকার কোন উপায় নেই, ক্যাসেরিনের সেসব সন্তানের জন্য আজ আমি একটি বিদ্রোহের শুরু করলাম। আমি নিজেকে আগুনে জ্বালিয়ে দেবো।
সারাবাংলা/ আরএ