সা’দকে দিল্লি ফিরতেই হলো

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা : বিরোধীপক্ষের বিক্ষোভের মুখে অবশেষে দিল্লি ফিরে গেলেন ভারতীয় উপমহাদেশ তাবলীগ জামাতের আমির মাওলানা সা’দ কান্ধলভী। ঢাকায় আসার তিনদিন পর তিনি দিল্লিতে ফেরত গেছেন। শনিবার দুপুর ১২টা ৪০ মিনিটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে একটি ফ্লাইটে তিনি নিজ দেশের উদ্দেশে রওয়ানা হন সা’দ।

বিমানবন্দর থানার অ‌ফিসার ইনচার্জ (ও‌সি) নূ‌রে আজম মিয়া সারাবাংলা‌কে জানান, জেড এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইটে ক‌রে কিছুক্ষণ আ‌গে দিল্লির উদ্দেশে রওয়ানা দিয়েছেন তিনি।

গত বুধবার দুপুরে তাবলীগ জামাতে অংশ নিতে ঢাকায় আসেন সা’দ কান্ধলভী। তবে তার আসার আগে থেকেই তাবলীগ জামাতের একাংশ ও তার বিরোধীপক্ষের মুসল্লিরা বিমানবন্দরের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন। পরে পুলিশি নিরাপত্তায় বিকেল পৌনে ৪টার দিকে তাকে কাকরাইল মসজিদে নেওয়া হয়। পুলিশি নিরাপত্তায় গত তিনদিন তিনি সেখানেই ছিলেন।

তাবলীগ জামাত সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশ তাবলীগ জামাত পরিচালনা কমিটির শূরা সদস্য ১১ জন। এর মধ্যে সৈয়দ ওয়াসিফুল ইসলাম ও হাফেজ মাওলানা জুবায়েরের মধ্যে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে দ্বন্দ্ব ও গ্রুপিং ছিল। তারা একে অপরের বিরুদ্ধে এর আগেও দুর্নীতির অভিযোগ করেছিলেন। তবে দ্বন্দ্ব পরিস্থিতি ঘোলাটে হয় মাওলানা সা’দ কিছু ফতোয়া দেওয়া পর থেকেই। এরপর মাওলানা জুবায়েরের পক্ষে অবস্থান নেয় কওমি মাদরাসার শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। ওয়াসিকুল অবস্থান নেন সা’দের পক্ষে।

তাবলীগ জামাতের জুবায়ের গ্রুপের অভিযোগ মাওলানা সা’দ ফতোয়া দিয়েছেন, স্মার্টফোন সঙ্গে থাকলে নামাজ হবে না। কারণ স্মার্টফোনে নানা ধরনের মানুষের ছবি থাকে। আর ছবি সঙ্গে থাকলে নামাজ হয় না।

সূত্র জানায়, মাওলানা সা’দ মাদরাসা শিক্ষা ব্যবস্থার বিরুদ্ধেও কথা বলেছেন। তিনি বলেছেন, আরবি শিক্ষার বিনিময়ে টাকা নেওয়া হারাম। মূলত এমন ফতোয়ার পরেই পরিস্থিতি উত্তাল হয়।

এছাড়াও গত নভেম্বরে পাকিস্তানে তাবলীগ জামাতের এক আয়োজনে বাংলাদেশের তাবলীগ জামাতের মজলিশে শূরা সদস্য ও ফায়সাল (আমির) সৈয়দ ওয়াসিফুল ইসলাম ও হাফেজ মাওলানা জুবায়েরের যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু শেষ মুহূর্তে জুবায়ের সেখানে যান। দেশে ফেরার পর তাকে অভিজ্ঞতা ভাগাভাগি করতে বলা হয়। কিন্তু জুবায়ের অভিজ্ঞতা ব্যক্ত না করে তথ্য গোপন করেন। এ নিয়েও ঝামেলা হয় দুই পক্ষের মধ্যে।

এর আগে গত ১৪ নভেম্বর কাকরাইল মসজিদে ওয়াসিফুল ও জুবায়ের গ্রুপ একে অন্যের বিরুদ্ধে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ করে। তখন দুই পক্ষের মধ্যে প্রথমে ধাক্কাধাক্কি, এরপর হাতাহাতি হয়।

শুক্রবার তুরাগের তীরে শুরু হয় বিশ্ব ইজতেমা। গতবারের মতো এবারও বিশ্ব ইজতেমা দুইটি পর্বে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। প্রথম পর্ব ১২ জানুয়ারি থে‌কে ১৪ জানুয়ারি পর্যন্ত চলবে। ইজতেমার দ্বিতীয় পর্ব ১৯ জানুয়ারি থে‌কে ২১ জানুয়ারি পর্যন্ত চলবে।

সারাবাংলা/এসআর/একে