কক্সবাজার-৩: ধারাবাহিকতা চায় আ.লীগ, পুনরুদ্ধারে মরিয়া বিএনপি
২৭ ডিসেম্বর ২০১৮ ১৩:৫৩
।। ওমর ফারুক হিরু, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট ।।
কক্সবাজার: একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোট গ্রহণের আর মাত্র দুইদিন বাকি। এরইমধ্যে কক্সবাজার-৩ (সদর-রামু) আসনে এখন পর্যন্ত বিএনপি-আওয়ামী লীগের মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের আভাস পাওয়া যাচ্ছে। এ আসনে আওয়ামী লীগ চায় আবারও জিতে ক্ষমতার ধারবাহিকতা রক্ষা করতে। আর বিএনপি মরিয়া হয়ে উঠেছে নিজেদের ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত আসনটি পুনরুদ্ধারে।
কক্সবাজার-৩ (সদর-রামু) আসনটি বিএনপি-জামায়াতের ঘাঁটি হিসাবে পরিচিতি থাকলেও আওয়ামী লীগ সরকারের ধারাবাহিক উন্নয়নের কারণে এখানকার মানুষ নিশ্চিত পুনরায় নৌকায় ভোট দেবে বলে দাবি করছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী সাইমুম সরওয়ার কমল।
তিনি আরও জানান, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে রামু ও সদরে যে উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন হয়েছে তা কোনো সরকারের আমলে হয়নি। এই সরকার উন্নয়নের সরকার। চলমান প্রকল্পসমূহ সফলভাবে বাস্তবায়নের জন্য দরকার সরকারের ধারাবাহিকতা। কক্সবাজারে সদরে কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ, আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, রেললাইন প্রকল্প, জেলা সদর হাসপাতালের আধুনিকায়ন, রামুতে হাইটেক পার্ক, রাজারকুল ব্রিজ, জোয়ারিয়ানালায় নির্মিতব্য বিকেএসপি, সদরের খুরুস্কুলের আশ্রয়ন প্রকল্প, ভারুয়াখালী নদীতে সংযোগ সেতুসহ নানা প্রকল্প বাস্তবায়ন সম্ভব হবে সরকারের ধারাবাহিকতা থাকলে।
তিনি দাবি করেন, গত ৫ বছরে প্রায় ৮ হাজার বেকার তরুণ-তরুণীর কর্মসংস্থান হয়েছে। এতে করে তাদের পরিবারে স্বচ্ছলতা এসেছে। সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির কারণে আজ আমার আসনে বেড়েছে বয়স্কভাতা, বিধবা ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতার উপকারভোগীদের সংখ্যা।
অন্যদিকে একই আসনে বিএনপির প্রার্থী লুৎফর রহমান কাজল জানান, গত ১০ বছরে আওয়ামী লীগ যে দুঃশাসন চালিয়েছে ৩০ ডিসেম্বর তার উপযুক্ত জবাব দেবেন ভোটাররা। তিনি বিপুল ব্যবধানে জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী।
তিনি বলেন, ‘মানুষ আওয়ামী দুঃশাসন থেকে মুক্তি চায়। মুখে কথা বলতে না পারলে, স্বাধীনভাবে চলাচল করতে না পারলে উন্নয়ন কোনো কাজে আসবে না। মানুষ নির্ভয়ে ভোট দিতে পারলে ৮০ শতাংশ ভোটার বিএনপিকে ভোট দেবেন।’
তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘রামু-সদরে বিএনপির নেতাকর্মীদের মাঠে নামতে দিচ্ছে না। এখন পর্যন্ত সদর-রামুতে প্রায় ডজন মামলায় ৫ শতাধিক মামলা হয়েছে। ভোটারদের ভীতি দেখানো হচ্ছে। যার কারণে প্রচারণা চালাতে পারছে না কর্মীরা। প্রশাসন লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডের সুযোগ দিচ্ছে না।’
কক্সবাজার-৩ আসনটি উভয় দলের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কেননা আওয়ামী লীগের প্রার্থী সাইমুম সরওয়ার কমলের জনপ্রিয়তার যেমন ‘এসিড টেস্ট’, তেমনি বিএনপির প্রার্থী লুৎফর রহমান কাজলের হারানো সিংহাসন পুনরুদ্ধারের সুযোগ। তবে শেষ পর্যন্ত কার কপালে এ আসন জুটে তার জন্য ৩০ ডিসেম্বর রাত অবধি অপেক্ষা করতে হবে।
কক্সবাজার-৩ আসন তথা রামু ও সদরের ২১টি ইউনিয়ন, ১টি পৌরসভা নিয়ে এ আসন। কক্সবাজার-৩ আসনে মোট ভোট কেন্দ্র রয়েছে ১৬৯টি। ভোট কক্ষ রয়েছে ৮০৫টি। মোট ভোটার ৪ লাখ ১৪ হাজার ৯৩০।
এরমধ্যে রামুর ১১টি ইউনয়নে ভোটার সংখ্যা ১ লাখ ৫৮ হাজার ২৮৬ এবং কক্সবাজার সদরের ১০ ইউনিয়ন ও কক্সবাজার পৌরসভায় মোট ভোটার ২ লাখ ৫৬ হাজার ৬৪৪ জন। রামুর চেয়ে কক্সবাজার সদরে ভোটার সংখ্যা বেশি ৯৮ হাজার ৩৫৮ জন। উভয় উপজেলার ভোটারের ব্যবধান যেকোনো প্রার্থীর জন্য ‘উইনিং ফ্যাক্টর’ হতে পারে।
সারাবাংলা/এমও