।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট।।
ঢাকা: পুলিশকে ‘জানায়োর’ বলে সমালোচনার মুখে পড়া জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ড. কামাল হোসেনকে পরোক্ষভাবে সমর্থন করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘ক্ষুব্ধ না হয়ে কি গালিবের গজল গাইবে?’
বৃহস্পতিবার (২৭ ডিসেম্বর) সকালে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
রিজভী বলেন, ‘চোখের ওপর সরকারি দলের হামলা, সংঘাত চলবে। নিষ্ক্রিয় পুলিশের সামনে. মাথা ফাটবে, পেটে ছুরি ঢুকবে, সারা শরীর থেকে রক্ত ঝরবে। এমতাবস্থায় কোনো বিবেকবান মানুষ ক্ষুদ্ধ না হয়ে কি গালিবের গজল গাইবে?’
পুলিশের অনাচারের পক্ষে প্রধানমন্ত্রী সাফাই গাইছেন অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রিসভার সদস্য, প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ কতিপয় কমিশনার পুলিশের পক্ষে সাফাই গাইছেন। তবে কমিশনে এখনও বিবেকবান কমিশনার আছেন— যিনি এইচ টি ইমামের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে সুষ্ঠু নির্বাচনের পক্ষে অবস্থান নিয়ে কথা বলে যাচ্ছেন। আমরা জানি, পুলিশের সবাই নির্বাচনি অনাচারের সাথে লিপ্ত নয়। কিন্তু সুবিধাভোগীদের সাথে তারা পেরে উঠছে না। চাকরি বাঁচাতে নীরব দর্শকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে বাধ্য হয়েছে।’
রোববার (২৬ ডিসেম্বর) প্রধানমন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বিভিন্ন নির্বাচনি এলাকায় বক্তৃতাকালে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতাদের কঠোর সমালোচনা করে বলেন, ‘তাদের (ঐক্যফ্রন্ট) দুর্ব্যবহার থেকে কেহই রেহাই পাচ্ছে না। তারা নির্বাচন কমিশনে গিয়ে ঝড়গা করছে এবং পুলিশের বিরুদ্ধে বাজে ভাষা ব্যবহার করছে।’
প্রধানমন্ত্রীর এ বক্তব্যের জবাবে রিজভী বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্য বাংলাদেশের মানুষের সাথে সেরা প্রহসন। আওয়ামী সন্ত্রাসী ও তাদের হুকুমে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর দ্বারা আক্রান্ত হয়ে শত শত ধানের শীষের প্রার্থী ও বিএনপি’র কেন্দ্রীয় নেতারা রক্তাক্ত-ক্ষতবিক্ষত। পুলিশ ও আওয়ামী ক্যাডারদের নিক্ষিপ্ত গুলিতে ধানের শীষের সমর্থকদের চোখ অন্ধ হওয়া থেকে শুরু করে হাজারো নেতাকর্মী আজ পঙ্গুত্ব বরণ করছে।’
তিনি বলেন, ‘হাজার হাজার নেতাকর্মী আটক হয়ে কারাবন্দি। এর মধ্যেও বিএনপি’র অনেক নেতাকর্মী গুম-খুন ও বিচারবহির্ভূত হত্যার শিকার হচ্ছেন। শত শত বিএনপি, ঐক্যফ্রন্ট ও জোটের নেতাকর্মীদের বাড়িঘর আগুন দিয়ে জালিয়ে দেওয়া হচ্ছে। আওয়ামী সন্ত্রাসী ও কিছু সংখ্যক রাষ্ট্রীয় বাহিনীর তাণ্ডবে বাংলাদেশের প্রতিটি জনপদ এখন আতঙ্কের নগরীতে পরিণত হয়েছে।’
‘বাংলাদেশ এবং বিশ্ব মিডিয়ায় এসব খবর প্রচার হচ্ছে ফলাও করে। এখন আওয়ামী প্রধান শেখ হাসিনা ও তার দলের নেতারা শাক দিয়ে মাছ ঢাকার চেষ্টা করছেন। নিজেরা আক্রমণ করে মিথ্যা গল্প সাজিয়ে নির্যাতিতদের ওপর দায় চাপিয়ে দেয়ার অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছেন’—অভিযোগ রিজভীর।
সারাবাংলা/এজেড/একে