Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

খুলনা-১: নির্বাচনি লড়াইয়ে নৌকা-ধানের শীষ, আছে জাপা-সিপিবি


২৭ ডিসেম্বর ২০১৮ ১৫:৩১

।। মো. জামাল হোসেন, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট ।।

খুলনা: দীর্ঘ দুই বছরেরও বেশি সময় জেলার দাকোপ ও বটিয়াঘাটা উপজেলায় সরকারি ও বিরোধী দলের রাজনৈতিক তৎপরতা খুব বেশি ছিল না। বিএনপির সময় কেটেছে মামলার জামিন নিতে আদালতের বারান্দায়, আর দলীয় কোন্দলে আওয়ামী লীগও ছিলো নিস্ক্রিয়। তবে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বেড়েছে রাজনৈতিক তৎপরতা।

স্থানীয়রা বলছেন, ভোটের মূল লড়াই ঐক্যফ্রন্ট ও মহাজোটের প্রার্থীর মধ্যেই হবে। তবে তাদের ভোটে ভাগ বসাতে পারে জাতীয় পার্টি, সিপিবি ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ।

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সুন্দরবনের পাদদেশ পর্যন্ত পরিধি খুলনা-১ আসনের। দাকোপ ও বটিয়াঘাটা উপজেলার ১৬টি ইউনিয়ন ও এক পৌরসভা নিয়েই এ আসন। হিন্দু অধ্যুষিত হওয়ায় নিশ্চিত বিজয় ভেবে এখানে ছিলো আওয়ামী লীগের একাধিক প্রার্থী মনোনয়ন প্রত্যাশী, আর বিএনপির ছিলো একক প্রার্থী।

এখানে ১৯৯১ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে শেখ হারুনুর রশীদ ৪৪ হাজার ৮১২ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির এম নূরুল ইসলামের প্রাপ্ত ভোট ১৪ হাজার ২০৩। ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনা ৬২ হাজার ২৪৮ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী সিপিবি’র অচিন্ত্য বিশ্বাসের প্রাপ্ত ভোট ২৪ হাজার।

পরে শেখ হাসিনার ছেড়ে দেওয়া আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী পঞ্চানন বিশ্বাস নির্বাচিত হন। ২০০১ সালে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে পঞ্চানন বিশ্বাস ৭৫ হাজার ৫৫২ ভোট পেয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির আমীর এজাজ খানের প্রাপ্ত ভোট ৪৭ হাজার ৫২৩। ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে ননী গোপাল মণ্ডল ১ লাখ ২০ হাজার ৮০১ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির আমীর এজাজ খানের প্রাপ্ত ভোট ৬৮ হাজার ৪২০। সর্বশেষ ২০১৪ সালে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে পঞ্চানন বিশ্বাস সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।

বিজ্ঞাপন

এবারের নির্বাচনে দাকোপ ও বটিয়াঘাটা উপজেলা নিয়ে গঠিত এ আসনে ৫ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। প্রার্থীরা হচ্ছেন- আওয়ামী লীগ মনোনীত পঞ্চানন বিশ্বাস, জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট সমর্থিত বিএনপির আমীর এজাজ খান, জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য সুনীল শুভ রায়, ইসলামী আন্দোলনের মাওলানা আবু সাঈদ ও সিপিবি’র অশোক কুমার বিশ্বাস।

স্থানীয় সূত্রগুলো জানায়, ক্ষমতা হারানোর পর এ আসনে জাতীয় পার্টির উল্লেখযোগ্য সাফল্য নেই। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ২০০৮ সালের নির্বাচনে এ আসনের প্রার্থী মাওলানা আবু সাঈদ ৫ হাজার ৭৪৬ ভোট পেয়ে জামানত হারান। দু’ উপজেলার একটি পৌরসভা ও ১৪টি ইউনিয়নে সিপিবি’র সমর্থক সংখ্যা ২০ হাজারেরও ওপরে। ’৯১ ও ’৯৬’র নির্বাচন তাই প্রমাণ করে।

গত ১০ ডিসেম্বর থেকে নির্বাচনি প্রচারাভিযান শুরু হয়েছে, এখানের কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। এলাকার চালনা বাজার, বাজুয়া, নলিয়ান, বারোআড়িয়া ও বটিয়াঘাটা সদরের হাটে দফায় দফায় গণসংযোগ হচ্ছে। সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের অর্ধেকের বেশি ভোট হলেও খুলনা নগরীর পাশ্ববর্তী জলমা ইউনিয়নে নতুন বসতিদের মধ্য থেকে ভোটার সংখ্যা বেড়েছে। বিএনপি প্রার্থী এ সুযোগ কাজে লাগাতে চান।

ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী মাওলানা আবু সাঈদ স্থানীয় সাংবাদিকদের জানান, নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ রয়েছে। ভোটারদের কাছ থেকে তিনি অনুকূল সাড়া পাচ্ছেন।

জাপা’র প্রেসিডিয়াম সদস্য সুনীল শুভ রায় শুক্রবার নির্বাচনি এলাকায় পৌঁছেছেন। তার ভাষ্য, দলীয় ইমেজ এবং সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বড় একটি অংশের সমর্থন তিনি পাবেন।

বর্তমান সংসদ সদস্য পঞ্চানন বিশ্বাস জানান, সম্প্রতি অনুষ্ঠিত বর্ধিত সভায় দলের সব স্তরের নেতাকর্মী তাকে সমর্থন দিয়েছেন। এ আসন আওয়ামী লীগের ঘাঁটি। ফলে তার বিজয় নিশ্চিত বলে তিনি আশাবাদী।

বিজ্ঞাপন

বিএনপি’র প্রার্থী আমীর এজাজ খান জানান, মানুষ পরিবর্তন চায়। আওয়ামী লীগের দুঃশাসনের বিরুদ্ধে গণজোয়ার সৃস্টি হয়েছে। সুষ্ঠু নির্বাচন হলে তিনি জয়ী হবেন বলে আশাবাদী।

উল্লেখ্য, এ আসনের ১০৭টি কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এবারে ভোটার সংখ্যা ২ লাখ ৫৯ হাজার ৩৩৫ জন। তার মধ্যে পুরুষ ১ লাখ ২৯ হাজার ৪৬২জন এবং নারী ১ লাখ ২৯ হাজার ৮৭৩জন।

সারাবাংলা/এমও/এমএইচ

আরও পড়ুন

১৫৭ কেন্দ্রের জন্য খুলনায় পৌঁছেছে ইভিএম সরঞ্জাম

খুলনায় বিএনপি প্রার্থীর বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের অভিযোগ

একাদশ জাতীয় নির্বাচন গণসংযোগ প্রচারণা

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর