।। ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট ।।
নওগাঁ: নওগাঁ-৬ (রাণীনগর ও আত্রাই) আসনের বিএনপির প্রার্থী আলমগীর কবির নির্বাচন বানচাল করতে ষড়যন্ত্র করছেন বলে অভিযোগ তুলেছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী ইসরাফিল আলম। বৃহস্পতিবার (২৭ ডিসেম্বর) সকালে রাণীনগর উপজেলা সদরের নিজ বাসভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন।
সংবাদ সম্মেলনে ইসরাফিল ইসরাফিল আলম অভিযোগ করে বলেন, ‘২০০১ থেকে ২০০৫ সালে চার দলীয় জোট সরকারের আমলে আলমগীর প্রতিমন্ত্রী ও সংসদ সদস্য থাকা অবস্থায় আত্রাই ও রাণীনগরকে একটি রক্তাক্ত জনপথে পরিণত করেছিলেন। তাঁর পৃষ্ঠপোষকতায় সে বাংলাভাইসহ বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠন এ এলকার ৭৬ জন মানুষকে হত্যা করে। শত শত মানুষ পঙ্গু হয়ে আজও দুর্বিষহ জীবন অতিবাহিত করছে। ২০০৫ সালে আলমগীর কবির বিএনপি ত্যাগ করে বিকল্পধারায় যোগ দেওয়ার পর থেকে অনেকটা লোকান্তরিত হয়ে যান। এরপর থেকে গত ১২ বছর ধরে এলাকায় শান্তি বিরাজ করছিল। কিন্তু একাদশ সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগ মূহূর্তে তিনি আবারও বিএনপিতে যোগ দেওয়ার পর রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড শুরু করলে এ এলাকা আবারও অশান্ত হয়ে উঠেছে।’
তিনি বলেন, ‘২০০৫ সালে দল ত্যাগ করার সময় আলমগীর কবির বিএনপির বিরুদ্ধে নানা অপপ্রচার শুরু করেন। এই সব কর্মকাণ্ডের জন্য তাঁর ছোট ভাই বিএনপি নেতা আনোয়ার হোসেনের নেতৃত্বে স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মীরা সেই সময় তাঁর কুশপুত্তলিকা পুড়িয়েছেন ও বিক্ষোভ করেছিলেন। একাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে বিএনপিতে তাঁর প্রত্যাবর্তনের ঘটনায় স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মীরা প্রতিবাদ করেছেন এবং সংবাদ সম্মেলন করে তাঁকে এলাকায় অবাঞ্চিত ঘোষণা করেছেন। অথচ স্থানীয় নেতাকর্মীদের সব আপত্তির পরও আলমগীরকেই মনোনয়ন দেওয়ায় এখানে স্পষ্টত দুটি ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েছে। এ অবস্থায় তিনি নেতাকর্মী ও ভোটারদের সাড়া পাননি। এ পরিস্থিতিতে নির্বাচনে নির্ঘাত পরাজয় জেনে তিনি এখন নির্বাচনবিরোধী অপতৎপরতা শুরু করেছেন।’
ইসরাফিল আলম অভিযোগ করে আরও বলেন, “দাঙ্গা-হাঙ্গামার মাধ্যমে একটা অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে আলমগীর কবিরের সন্ত্রাসী বাহিনী আমার নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালাচ্ছে এবং আমার নির্বাচনি ক্যাম্প ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করাচ্ছে। অথচ তিনি বারবার নির্বাচন কমিশন ও গণমাধ্যমের কাছে তাঁর নেতাকর্মীদের ওপর হামলা, নির্বাচনি ক্যাম্প ভাঙচুর ও প্রচারণায় বাধা দেওয়ার ‘মিথ্যা’ অভিযোগ করে যাচ্ছেন। তবে তিনি কোনো অভিযোগই নির্বাচনি তদন্ত কমিটির কাছে প্রতিষ্ঠিত করতে পারেননি। নির্বাচনের দিন সংঘাতময় পরিস্থিতি সৃষ্টি করে নির্বাচন বানচালের চেষ্টা করলে যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা প্রস্তুত রয়েছে।”
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বিএনপির প্রার্থী আলমগীর বলেন, ‘আমি মিথ্যা না সত্যি অভিযোগ করছি, তাঁর দায়ভার আমার নির্বাচনি এলাকার জনগণ ও আপনাদের (সাংবাদিক) ওপরই দিতে চাই। আমার কোনো অভিযোগ ভিত্তিহীন কেউ তা প্রমাণ করে দেখাক।’
নির্বাচন বানচালের ষড়ষন্ত্রের অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমি কখনোই ষড়যন্ত্র করিনি। বরং আওয়ামী লীগের প্রার্থী একটা সংঘাতময় পরিস্থিতি সৃষ্টি করে জনগণের ভোট ছাড়াই ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য ষড়যন্ত্র করছে।’
সারাবাংলা/এমও