‘ঐক্যফ্রন্ট নির্বাচন বয়কটের ঘোষণা দিলে বিভ্রান্ত হবেন না’
২৯ ডিসেম্বর ২০১৮ ১৭:১৯
।। সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট।।
ঢাকা: নির্বাচন শেষ না হওয়া পর্যন্ত দলের সব স্তরের নেতাকর্মীসহ প্রার্থীদের ভোটকেন্দ্রে অবস্থান করতে আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পাশাপাশি জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট বা বিএনপি নির্বাচন বয়কটের ঘোষণা দিলে তাতেও বিভ্রান্ত না হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি সবাইকে সাবধান করে দিচ্ছি। বিএনপি-জামায়াতের একটি চরিত্রই রয়েছে, নির্বাচনের মাঝপথে তারা ঘোষণা দিতে পারে— নির্বাচনে আমরা অংশ নেব না এবং আমরা নির্বাচন বয়কট করলাম। সেক্ষেত্রে আমি আমাদের প্রার্থী ও অন্যদলের যারা রয়েছেন, তাদের বলব— নির্বাচন শেষ না হওয়া পর্যন্ত ভোট চালিয়ে যান।’
শনিবার (২৯ ডিসেম্বর) সকালে রাজধানীর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) দিনাজপুরের আওয়ামী লীগ নেতা ডা. মাহবুবুর রহমাকে দেখতে গিয়ে শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন। বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাসী হামলায় গুরুতর আহত হয়ে ডা. মাহাবুব সিএমএইচে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
শেখ হাসিনা সবার উদ্দেশে বলেন, ‘আমি বলতে চাই, বিএনপি নির্বাচনের মাঝামাঝি সময়েই হয়তো বলে বসবে— আমরা নির্বাচন থেকে নিজেদের প্রত্যাহার করে নিচ্ছি এবং আমরা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করব না। তাদের এ কথা বিশ্বাস করবেন না। এটা তাদের আরেকটি গেম।’
আওয়ামী লীগ সভাপতি এ সময় দলের প্রতিনিধি ও নির্বাচনি এজেন্টদের প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে নির্বাচনের ফল ঘোষণার আগ পর্যন্ত অবস্থান করারও আহ্বান জানান।
নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ও মহাজোটের প্রার্থী ও তাদের এজেন্টদের উদ্দেশে শেখ হাসিনা বলেন, নির্বাচনের শেষ অবধি আপনারা ভোটকেন্দ্রে থাকবেন এবং রিটার্নিং অফিসার ও প্রিজাইডিং অফিসারদের সই করা ভোটের ফল নিয়ে তবেই বাড়িতে ফিরবেন।
এবারের নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে আশাবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হবে— এটাই আমাদের প্রত্যাশা। যদি আমরা শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচন করতে পারি, আমি আপনাদের একুটু নিশ্চয়তা দিতে পারি— স্থানীয় ও বিদেশি বিনিয়োগ বাড়বে এবং দেশের অর্থনীতি আরও শক্তিশালী হবে।
এ সময় জাতির পিতার স্বপ্নের উন্নত-সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ গড়তে দৃঢ় আস্থার কথা পুনর্ব্যক্ত করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়বই গড়ব। কাজেই আমরা চাইব নির্বাচনটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হোক। আমার বিশ্বাস, জনগণ আমাদেরই ভোট দেবে। তারা ভোট দিলে আমরা ক্ষমতায় থাকব, নইলে থাকব না। আমি এটা জনগণের ওপরই ছেড়ে দিলাম।’
শেখ হাসিনা এ সময় ৬ আওয়ামী লীগ নেতাকে হত্যা ও সাড়ে চারশরও বেশি নেতাকর্মীকে সহিংস ঘটনা ঘটিয়ে আহত করার কঠোর সমালোচনা করেন।
নির্বাচনের আগে সারাদেশে বিএনপি-জামায়াত পরিকল্পিতভাবে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ওপর গোপন হামলা চালাচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘তারা একদিকে বিদেশে আমাদের নামে নালিশ করছে, অন্যদিকে আমাদের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা করছে।’
দলের নেতাকর্মীদের ধৈর্য ধারণের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা ক্ষমতায় থাকলেও বিএনপি-জামায়াত আমাদের দলের অনেক নেতাকর্মীকে হত্যা করেছে, কিন্তু আমাদের দলের সবাইকে ধৈর্য ধরতে হবে। কেননা আমরা জানি, জনগণ আমাদেরই ভোট দেবে।
দেশের জনগণ ৩০ ডিসেম্বর একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন প্রত্যাশা করে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, কাজেই আমাদের খেয়াল রাখতে হবে, কেউ যেন নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে না পারে এবং আওয়ামী লীগ ও মহাজোটের প্রার্থী এবং নেতাকর্মীদের এ বিষয়ে ধৈর্য ধরতে হবে। বাসস।
সারাবাংলা/একে