।। সুমন মুহাম্মদ, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট ।।
রাজশাহী: নিরাপত্তার চাদরে ঢাকা পড়েছে পুরো রাজশাহী। এ জেলার ৬টি আসনের ৩৮৯টি ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রে নেওয়া হয়েছে বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা। ১৯ লক্ষাধিক ভোটার মুখিয়ে আছেন তাদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট প্রদানের জন্য। ইতোমধ্যে ভোট কেন্দ্রে প্রার্থীদের সমর্থকরা পোস্টার ঝুলাতে শুরু করেছেন। এবার কেবল অপেক্ষা শান্তিপূর্ণ ভোট অনুষ্ঠানের।
জেলায় শান্তিপূর্ণ ভোট গ্রহণের জন্য প্রায় এক সপ্তাহ থেকে বিজিবি, সেনাবাহিনী ও র্যাবের টহল শুরু হয়। মহানগরীর প্রবেশ পথ নওদাপাড়া, কাশিয়াডাঙ্গা বাইপাস সড়ক ও অক্টয় মোড়ে বসানো হয়েছে অস্থায়ী চেকপোস্ট। চলানো হচ্ছে তল্লাশি। শুধু তাই নয় রাজশাহী-চাঁপাইনবাবগঞ্জ, রাজশাহী-ঢাকা ও রাজশাহী-নওগাঁ মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে পুলিশ যানবাহনেও তল্লাশি চালাচ্ছে।
নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গেছে, রাজশাহীতে মোট ৬৯৫টি ভোটকেন্দ্র রয়েছে। এর মধ্যে মহানগর পুলিশের (আরএমপি) অধীনে ১৯৬টি কেন্দ্র। যার মধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে ১৮৬টি কেন্দ্র। জেলার ৪৯৯টি কেন্দ্রের মধ্যে ২০৩টি ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্র হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। মোট ৪ হাজার ১৩৪টি কক্ষে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। নারী ও পুরুষ ভোটারদের জন্য ভোটকক্ষ থাকবে আলাদা আলাদা। ঝুঁকিপূর্ণ ভোটকেন্দ্রগুলোতে নিরাপত্তার জন্য অতিরিক্ত জনবল নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
জেলা নির্বাচন অফিসের তথ্যনুযায়ী জেলার ছয়টি আসনে মোট ভোটার ১৯ লাখ ৪২ হাজার ৫৬২ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৯ লাখ ৬৭ হাজার ৭১০ জন এবং নারী ৯ লাখ ৭৪ হাজার ৮৫২ জন। এবার নতুন ভোটার হয়েছে ১ লাখ ৯৯ হাজার ৯০৫ জন। চূড়ান্ত তালিকানুযায়ী মোট ভোটারের অর্ধেকেই নারী। তাই নির্বাচনে তাদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে ভোটকেন্দ্রগুলোকে নারীবান্ধব করে গড়ে তুলতে নির্দেশ দিয়েছে কমিশন। সেই অনুযায়ী তারা প্রস্তুত বলেও জানান নির্বাচন কর্মকর্তা।
যাচাই-বাছাই শেষে রাজশাহীর ৬টি আসনে প্রার্থী থাকে ২৫ জন। কিন্ত আদালতে রাজশাহীর ৬ আসনের বিএনপির প্রার্থী আবু সাঈদ চাঁদের প্রার্থীতা বাতিল করলে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় থাকে ২৪ জন। এর মধ্যে রাজশাহীর ৫ আসনে বিএনপির প্রার্থী নদিম মোস্তফার প্রার্থীতা স্থগিত হলে তার পরিবর্তে দলের পক্ষ থেকে নজরুল ইসলাম মন্ডলকে ধানের শীষ প্রতীক দেওয়া হয়।
মহানগর পুলিশের মুখপাত্র ইফতেখায়ের আলম জানান, মহানগরীর ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রগুলোর বাড়তি নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। বিভিন্ন আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সাথে সাদা পোশাকে পুলিশ থাকবে প্রতিটি কেন্দ্রে।
রাজশাহী-১ বিজিবির অধিনায়ক মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম বলেন, জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাজশাহীতে ২৫ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন রয়েছে। বিজিবির সাঁজোয়া যান (এপিসি) ছাড়াও ডগস্কোয়াড টহলে যুক্ত হয়েছে। এতে তিনটি প্রশিক্ষিত ডগ রয়েছে। এরই মধ্যে নির্বাচনী এলাকাজুড়ে এই টহল দিচ্ছে বিজিবি।
জেলা পুলিশের মুখপাত্র পুলিশের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ঝুঁকিপূর্ণ ভোটকেন্দ্রগুলোতে একজন উপসহকারী পুলিশ (এসআই) ও একজন কনস্টেবল নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তা এস.এম. আব্দুল কাদের বলেন, ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে রোববার। এ জন্য সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। শান্তিপূর্ণ পরিবেশে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। জেলার চরাঞ্চল ও দুর্গম এলাকাগুলোতেও ভোটের সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখতে সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
সারাবাংলা/এমএইচ