।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ।।
চট্টগ্রাম ব্যুরো: বন্দরনগরী চট্টগ্রাম থেকে নির্বাচিত হয়ে সংসদে যেতে ভোটের লড়াইয়ে আছেন ১১৭ প্রার্থী। সারাদেশের মতো চট্টগ্রামেও প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগ এবং বিএনপির নেতৃত্বাধীন দুই জোট। নৌকা এবং ধানের শীষে জোর লড়াই হবে বলে মনে করছেন ভোটাররা।
এর পাশাপাশি দুই জোট থেকে দু’টি আসনে ছাতা এবং লাঙ্গল নিয়েও লড়ছেন দুজন। এছাড়া প্রচারে সাড়া জাগিয়েছে কাস্তে ও কোদাল প্রতীকে বামজোট ও হাতপাখা প্রতীকে ইসলামী আন্দোলন।
চট্টগ্রাম-১ (মিরসরাই)
এ আসনে এবার ৬ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর মধ্যে নৌকা প্রতীকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন। তিনি গত দুইবারের টানা সংসদ সদস্য। এই আসনে নৌকার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির প্রার্থী নূরুল আমিন। ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে তিনি এবারই প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচন করছেন। আসনের অন্যান্য প্রার্থীরা হলেন ইসলামী আন্দোলনের মোহাম্মদ শামসুদ্দিন (হাতপাখা), মুসলিম লীগের শেখ জুলফিকার বুলবুল (পাঞ্জা), গণফোরামের নূর উদ্দিন আহমদ (উদীয়মান সূর্য) ও ইসলামিক ফ্রন্টের মোহাম্মদ আব্দুল মন্নান (চেয়ার)।
চট্টগ্রাম-২ (ফটিকছড়ি)
এ আসনে মহাজোট প্রার্থী হিসেবে নৌকা প্রতীক পেয়েছেন জোটভুক্ত তরিকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান নজিবুল বশর মাইজভাণ্ডারী। ধানের শীষ প্রতীকে প্রথমবারের মতো নির্বাচন করছেন আজিম উল্লাহ বাহার। অন্যান্য প্রার্থীরা হলেন জাতীয় পার্টির জহুরুল ইসলাম রেজা (লাঙল), ইসলামী আন্দোলনের মোহাম্মদ আতীক (হাতপাখা), ইসলামিক ফ্রন্টের মীর মো. ফেরদৌস আলম (চেয়ার) ও ইসলামী ফ্রন্টের শাহজাদা সৈয়দ সাইফুদ্দিন মাইজভাণ্ডারী (মোমবাতি)। আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী এটিএম পেয়ারুল ইসলাম সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিলেও তার প্রতীক আপেল ব্যালটে থাকবে।
চট্টগ্রাম-৩ (সন্দ্বীপ)
চট্টগ্রামের বিচ্ছিন্ন দ্বীপাঞ্চল সন্দ্বীপে মোট প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ৫ জন। বর্তমান সংসদ সদস্য মাহফুজুর রহমান মিতা এবারও আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করবেন। তার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য মোস্তফা কামাল পাশা। এ ছাড়া ইসলামী আন্দোলনের মনসুরুল আলম (হাতপাখা), এনপিপির মুক্তাদের আজাদ খান (আম) এবং কৃষক জনতা লীগের প্রার্থী সেলিম উদ্দিন হায়দার (গামছা)।
চট্টগ্রাম-৪ (সীতাকুণ্ড)
এই আসনে নৌকা প্রতীক নিয়ে আওয়ামী লীগের প্রার্থী বর্তমান সংসদ সদস্য দিদারুল আলম। আর ধানের শীষ প্রতীকে বিএনপি প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করছেন আসলাম চৌধুরী। এ ছাড়া এই আসনের লাঙল প্রতীকে নির্বাচন করছে জাতীয় পার্টির দিদারুল কবির, ইসলামী ফ্রন্টের মো. আশরাফ হোসেন (মোমবাতি), ইসলামিক ফ্রন্টের মোজাম্মেল হোসেন (চেয়ার) ও ইসলামী আন্দোলনের সামছুল আলম হাসেম (হাতপাখা)।
চট্টগ্রাম-৫ (হাটহাজারী)
চট্টগ্রাম জেলায় সবচেয়ে বেশি ১০ জন প্রার্থী এই আসনে। এখানে মহাজোটের প্রার্থী হিসেবে লাঙল প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করছেন বর্তমান সংসদ সদস্য ও পানিসম্পদ মন্ত্রী ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ। ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচন করছেন ঐক্যফ্রন্টের কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল সৈয়দ মোহাম্মদ ইবরাহিম। এছাড়া ইসলামী আন্দোলনের মোহাম্মদ রফিক (হাতপাখা), ইসলামী ঐক্যজোটের মঈন উদ্দিন রুহী (মিনার), স্বতন্ত্র প্রার্থী নাছির হায়দার করিম (সিংহ), ইসলামিক ফ্রন্টের সৈয়দ হাফেজ আহমদ (চেয়ার), জমিয়তুল ওলামার মোহাম্মদ নাছির উদ্দিন (খেজুরগাছ), খেলাফত মজলিশের
শিহাবুদ্দিন (দেওয়াল ঘড়ি), খেলাফত আন্দোলনের মীর ইদ্রিস (বটগাছ) ও ইসলামী ফ্রন্টের নঈমুল ইসলাম (মোমবাতি)।
চট্টগ্রাম-৬ (রাউজান)
এই আসনে মাত্র ৩ জন প্রার্থী নির্বাচনী লড়াইয়ে অবতীর্ণ হয়েছেন। গত তিনবারের সংসদ সদস্য আওয়ামী লীগের এ বি এম ফজলে করিম চৌধুরীর সাথে বিএনপি প্রার্থী ধানের শীষ প্রতীকে জসীম উদ্দিন সিকদার প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। এই আসনে অপর প্রার্থী ইসলামী আন্দোলনের মাওলানা আব্দুল আলী (হাতপাখা)
চট্টগ্রাম-৭ (রাঙ্গুনিয়া)
এই আসনে মোট ৬ জন প্রার্থী। এর মধ্যে নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করছেন গত দুবারের টানা সংসদ সদস্য ড. হাসান মাহমুদ। ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে আছেন ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী এলডিপি নেতা মো. নুরুল আলম। এই আসনে অন্য প্রার্থীরা হলেন; ইসলামী ফ্রন্টের আবু নওশাদ (মোমবাতি), জেএসডির মাহাবুবুর রহমান (তারা), এনপিপির মোহাম্মদ জিয়াউর রহমান (আম) ও ইসলামী আন্দোলনের নেয়ামত উল্লাহ (হাতপাখা)।
চট্টগ্রাম-৮ (বোয়ালখালী-চান্দগাঁও)
আসনটিতে মোট ৯ জন প্রার্থী নির্বাচনী ভোটযুদ্ধে আছেন। নৌকা প্রতীকে আছেন মহাজোটের অন্তর্ভুক্ত বাংলাদেশ জাসদের গত দুইবারের টানা সংসদ সদস্য মঈন উদ্দিন খান বাদল। ধানের শীষ নিয়ে নির্বাচন করছেন নগর বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি আবু সুফিয়ান।
এছাড়া স্বতন্ত্র প্রার্থী মোহাম্মদ এমদাদুল হক (সিংহ) ও হাসান মাহমুদ চৌধুরী (আপেল), ন্যাপের বাপন দাশগুপ্ত (কুঁড়েঘর), ইসলামী আন্দোলনের মো. ফরিদ খান (হাতপাখা), ইসলামী ফ্রন্টের সেতাব উদ্দিন মো. আব্দুস সামাদ (মোমবাতি), বিএনএফের এস এম ইকবাল হোসেন (টেলিভিশন) ও কমিউনিস্ট পার্টির মো. সেহাব উদ্দিন (কাস্তে) আছেন।
চট্টগ্রাম-৯ (কোতোয়ালী-বাকলিয়া)
এই আসনে নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করছেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল। বিএনপির কারাবন্দী নেতা ডা. শাহাদাত হোসেন ধানের শীষ প্রতীকে লড়ছেন। এছাড়া আছেন ইসলামিক ফ্রন্টের মোহাম্মদ ওয়াহিদ মুরাদ (চেয়ার), ইসলামী আন্দোলনের শেখ আমজাদ হোসেন (হাতপাখা), বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির মৃণাল চৌধুরী (কাস্তে), খেলাফত আন্দোলনের মৌলভি রসিদুল হক বিএসসি (বটগাছ), ইসলামী ফ্রন্টের আবু আজম (মোমবাতি) ও জাতীয় পার্টি-জেপির মো. মোরশেদ সিদ্দিকী (বাইসাইকেল)।
চট্টগ্রাম-১০ (হালিশহর-পাহাড়তলী)
এই আসনে বিএনপি প্রার্থী আব্দুল্লাহ আল নোমান ও দুইবারের সংসদ সদস্য আওয়ামী লীগের প্রার্থী ডা. আফসারুল আমীন, স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবিনা খাতুন (সিংহ প্রতীক), ইসলামী আন্দোলনের মো. জান্নাতুল ইসলাম (হাতপাখা), এনপিপির কাজী ইউসুফ আলী (আম), বিএনএফের আতিউল্লাহ ওয়াসীম (টেলিভিশন), বামজোটের প্রার্থী গণসংহতি আন্দোলনের নেতা সৈয়দ মো. হাসান মারুফ (কোদাল) ও বাসদের মহিন উদ্দিন (মই) ভোটযুদ্ধে আছেন।
চট্টগ্রাম-১১ (বন্দর-পতেঙ্গা)
এই আসনে মোট ৭জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর মধ্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী লড়ছেন ধানের শীষ নিয়ে। আর গত দুইবারের সংসদ সদস্য ব্যবসায়ী নেতা এম এ লতিফ নৌকা প্রতীকে ভোটযুদ্ধে আছেন। এছাড়া ইসলামী আন্দোলনের মো. লোকমান সওদাগর (হাতপাখা), খেলাফত আন্দোলনের মৌলভী রসিদুল হক বিএসসি (বটগাছ), ওয়ার্কার্স পার্টির অপু দাশগুপ্ত (কোদাল), ইসলামী ফ্রন্টের এম এ মতিন (মোমবাতি) এবং ইসলামিক ফ্রন্টের আবুল বাশার মো. জয়নাল আবেদীন (চেয়ার) আছেন।
চট্টগ্রাম-১২ (পটিয়া)
এই আসনে মোট ৯ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর মধ্যে নৌকা প্রতীকের বর্তমান সংসদ সদস্য সামশুল হক চৌধুরী এবং বিএনপি প্রার্থী এনামুল হক এনাম (ধানের শীষ), ইসলামী আন্দোলনের দেলোয়ার হোসেন সাকী (হাতপাখা), ইসলামিক ফ্রন্টের মঈন উদ্দিন চৌধুরী (চেয়ার), ইসলামী ফ্রন্টের এম এ মতিন (মোমবাতি), এএনএফের দীপক কুমার পালিত (টেলিভিশন), জাতীয় পার্টির মোহাম্মদ নুরুচ্ছাফা সরকার (লাঙল), বাসদের সাইফুদ্দীন মো. ইউনুচ (মই) ও স্বতন্ত্র প্রার্থী আবু তালেব হেলালী (সিংহ) আছেন।
চট্টগ্রাম-১৩ (আনোয়ারা-কর্ণফুলী)
এই আসনে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকে লড়ছেন ভূমি প্রতিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ। বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য সরোয়ার জামাল নিজামও ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে আছেন ভোটযুদ্ধে।
এছাড়া ইসলামী ফ্রন্টের এম এ মতিন (মোমবাতি), ইসলামী আন্দোলনের ইরফানুল আলম খান (হাতপাখা), গণফোরামের উজ্জ্বল ভৌমিক (উদীয়মান সূর্য), বিএনএফের নারায়ণ রক্ষিত (টেলিভিশন), খেলাফত আন্দোলনের মৌলভি রসিদুল হক (বটগাছ) ও ইসলামিক ফ্রন্টের জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (চেয়ার) ভোটের লড়াইয়ে আছেন।
চট্টগ্রাম-১৪ (চন্দনাইশ-সাতকানিয়ার একাংশ)
এই আসনে মোট প্রার্থী ৯ জন। ঐক্যফ্রন্টের নেতা এলডিপির সভাপতি কর্নেল (অব.) অলি আহমেদ ছাতা প্রতীক নিয়ে লড়ছেন এই আসনে। তার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী নৌকা প্রতীক নিয়ে আওয়ামী লীগের প্রার্থী নজরুল ইসলাম চৌধুরী।
এছাড়া এই আসনে অন্য প্রার্থীরা হলেন; ইসলামী আন্দোলনের দেলোয়ার হোসেন সাকী (হাতপাখা), ইসলামী ফ্রন্টের সিহাব উদ্দিন মো. আব্দুস সামাদ (মোমবাতি), ইসলামিক ফ্রন্টের মাওলানা জানে আলম নিজামী (চেয়ার), ন্যাপের আলী নেওয়াজ খান (কুঁড়েঘর), কমিউনিস্ট পার্টির আবদুল নবী (কাস্তে), তরিকত ফেডারেশনের মোহাম্মদ আলী ফারুকী (ফুলের মালা), জাতীয় পার্টির অলিউল্লাহ চৌধুরী মাসুদ (লাঙল)।
চট্টগ্রাম-১৫ (লোহাগাড়া-সাতকানিয়ার একাংশ)
এই আসনে নৌকা প্রতীকে লড়ছেন আওয়ামী লীগের আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামুদ্দিন নদভী। ধানের শীষ প্রতীকে আছেন জামায়াত নেতা আ ন ম শামসুল ইসলাম। ইসলামী আন্দোলনের নূরুল আলম (হাতপাখা), গণফোরামের আব্দুল মোমেন চৌধুরী (উদীয়মান সূর্য) ও এনপিপির ফজলুল হক (আম) আছেন ভোটযুদ্ধে।
চট্টগ্রাম-১৬ (বাঁশখালী)
এই আসনে নৌকা প্রতীকের মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী, জাতীয় পার্টির মাহমুদুল ইসলাম চৌধুরী লাঙল প্রতীকে এবং ধানের শীষ প্রতীকে জাফরুল ইসলাম চৌধুরী এবং জামায়াত নেতা জহিরুল ইসলাম স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে লড়ছেন আপেল প্রতীক নিয়ে।
এছাড়া ভোটের লড়াইয়ে আছেন ইসলামী আন্দোলনের মাওলানা ফরিদ আহমেদ (হাতপাখা), ইসলামিক ফ্রন্টের আহমদ মহিউল আলম চৌধুরী (চেয়ার), ন্যাপের আশীষ কুমার শীল (কুঁড়েঘর) ও ইসলামী ফ্রন্টের মনিরুল ইসলাম (মোমবাতি)।
সারাবাংলা/আরডি/এমও