ইভিএমে দ্রুত ভোট, ভোটারদের মাঝে সাড়া
৩০ ডিসেম্বর ২০১৮ ১৩:৩৮
।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ।।
চট্টগ্রাম ব্যুরো: লাইন পেরিয়ে বুথে ঢুকলে সর্বোচ্চ পাঁচ মিনিট লাগছে ভোট দিতে। ব্যালটে সিল মারা, ভাঁজ করা, ঠিকভাবে ভাঁজ হলো কি-না, ভোট নষ্ট হবে কি-না, এমন বিড়ম্বনা নেই। মেশিনে সুইচ টিপলেই ভোট হয়ে যাচ্ছে।
এই চিত্র চট্টগ্রাম-৯ (কোতোয়ালী-বাকলিয়া) আসনের। এই আসনে ভোট হচ্ছে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম)। সিল-ব্যালটের বিড়ম্বনা ছাড়া ভোট দিতে পেরে খুশি ভোটারদের অধিকাংশই। দেশে সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ সরঞ্জামের বহরে প্রথমবারের মতো যুক্ত হওয়া ইভিএম সাড়া ফেলেছে ভোটারদের মধ্যে।
নগরীর হিলভিউ আবাসিক এলাকার শিশু একাডেমি কেন্দ্রে কথা হয় ভোটার গোফরানুল হকের সঙ্গে। তিনি সারাবাংলাকে বলেন, ‘ইভিএম নিয়ে অনেক কথা শুনেছিলাম। কিন্তু বাস্তবে দেখছি, ইভিএম-এর ভোটই সবচেয়ে নিরাপদ। এত স্বচ্ছ পদ্ধতি, সত্যিকারের নির্বাচন করতে চাইলে ৩০০ আসনে এটা ফলো করা উচিৎ।’
নগরীর আসকার দিঘীর পাড়ে ছালেহ জহুর সিটি করপোরেশন উচ্চ বিদ্যালয়ে ভোট দিয়েছেন সাংবাদিক লতিফা আনসারী রুনা।
রুনা সারাবাংলাকে বলেন, ‘২ মিনিটের মধ্যে ভোট হয়ে গেছে। স্মার্টকার্ডটা দিয়েছি। জন্মতারিখ বললেও হচ্ছে। সবকিছু মিলে যাবার পর পছন্দের প্রতীকের পাশে বিসমিল্লাহ বলে সুইচ টিপে দিলাম। আবার কনফার্ম করলাম। ভোট দেওয়া হয়ে গেল। এত সহজে জীবনে আর কখনো ভোট দিইনি।’
নগরীর আসকার দিঘীর পাড়ে আঞ্চলিক লোকপ্রশাসন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে ভোট দেওয়া বিএসআরএম-এর কর্মকর্তা মোরশেদুল আলম সারাবাংলাকে বলেন, ‘ইভিএম-এ ভোট দেওয়া সহজ এবং দ্রুত ভোট দেওয়া যায়। অনেক অভিযোগ শুনেছিলাম। বাস্তবে এর কোন ভিত্তি নেই।’
একই কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার দেলোয়ার হোসেন সারাবাংলাকে বলেন, ‘প্রথমবার তো, মানুষের মধ্যে একটু বিভ্রান্তি আছে। মানুষ এখনো সেভাবে বুঝতে পারছে না বলে কিছুটা ধীরগতি আছে। তবে ৫ মিনিটের বেশি সময় লাগছে না। ব্যালটে ভোট নিতেও তো একজনের ৪-৫ মিনিট লাগে।’
তবে নগরীর জামালখানে ডা. খাস্তগীর সরকারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, দেওয়ানবাজারে ফকির মোহাম্মদ মাদ্রাসাসহ বিভিন্ন কেন্দ্রে ভোট শুরুর পর ইভিএম মেশিনে যান্ত্রিক ত্রুটির অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ জন্য ভোটগ্রহণে ধীরগতি তৈরি হলে লাইনে দাঁড়িয়ে অনেক ভোটার বিরক্তি প্রকাশ করেন।
ফকির মোহাম্মদ মাদ্রাসা কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার মনিরুল হক সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমাদের ব্যাকআপ মেশিন আছে। যেটা সমস্যা করছে সেটা বাদ দিয়ে আরেকটা চালু করা হচ্ছে। চালু করতে গিয়ে ২-৪ মিনিট সময় লাগছে। আবার আগেরটা চালু হলে সেটা বসাতে একটু সময় লাগছে। প্রথমবার তো, সেজন্য কিছুটা সমস্যা আছে।’
খাস্তগীর স্কুল কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার মো. নূরুন্নবী সারাবাংলাকে বলেন, ‘ইভিএম-এ মাঝে মাঝে কিছু সমস্যা দেখা দিলেও দ্রুত সচল করা হচ্ছে। তবে মাত্র দেড় মিনিটে ভোট দিতে পেরেছেন, আমার কেন্দ্রে এমন ভোটারও আছে। ভোট দ্রুত দিতে পারায় মেশিনে সমস্যা করলেও ভোটারদের লাইনে বেশিক্ষণ দাঁড়াতে হচ্ছে না।’
চট্টগ্রাম-৯ আসনে ওয়ার্ড আছে ১৪টি। ভোটকেন্দ্র আছে ১৪৪টি। ভোটকক্ষ আছে ৭৪৩টি। মোট ভোটার তিন লাখ ৯১ হাজার ৬১২ জন। এর মধ্যে দুই লাখ চার হাজার ৪০৩ জন পুরুষ এবং এক লাখ ৮৭ হাজার ২০৯ জন নারী ভোটার।
চট্টগ্রামে শুধু এই আসনেই ইভিএম পদ্ধতিতে ভোটগ্রহণের সিদ্ধান্ত নেয় নির্বাচন কমিশন।
সারাবাংলা/আরডি/এমআই