৫১ প্রার্থীর ভোট বর্জন
৩০ ডিসেম্বর ২০১৮ ১৬:১৩
।। সারাবাংলা ডেস্ক ।।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটগ্রহণ শেষ হওয়ার আগেই ভোট বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন বিভিন্ন আসনের বিএনপি, জাতীয় পার্টি ও স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। রোববার (৩০ ডিসেম্বর) বিকেল ৩টা পর্যন্ত ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় ১৫ প্রার্থীর ভোট বর্জনের খবর পাওয়া গেছে। ভোট বর্জন করা বেশিরভাগ প্রার্থীই নির্বাচনে ধানের শীষে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছিলেন, কয়েকজন রয়েছেন জাতীয় পার্টির প্রার্থী। রয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থীও।
সারাবাংলার প্রতিবেদক ও ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্টদের পাঠানো খবর:
ঢাকা
ঢাকা-১ আসনে স্বতন্ত্র ও ঐক্যফ্রন্ট সমর্থিত প্রার্থী সালমা ইসলাম নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন। নিজ বাসভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি পুনঃতফসিলেরও দাবি জানান। এই আসনে ধানের শীষ প্রতীকের কোনো প্রার্থী নেই। আসনটিতে নৌকা প্রতীকে মহাজোটের প্রার্থী সালমান এফ রহমান। এদিকে, ঢাকা-১৭ আসনে ধানের শীষের প্রার্থী ও বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের নেতা আন্দালিভ রহমান পার্থ কারচুপির অভিযোগে ভোট বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন।
খুলনা
খুলনা জেলায় ধানের শীষ প্রতীকের পাঁচ ও জাতীয় পার্টির একজন প্রার্থী নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন। খুলনা-১ আসনে ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন জাতীয় পার্টির প্রার্থী সুনীল শুভ রায়। একই আসন থেকে ঐক্যফ্রন্টের ধানের শীষের প্রার্থী আমীর এজাজ খানও ভোট বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন। এছাড়া, খুলনা-৩ আসনে বিএনপির রফিকুল ইসলাম বকুল, খুলনা-৪ আসনে বিএনপির আজিজুল বারী হেলাল, খুলনা-৫ আসনে ঐক্যফ্রন্ট মনোনীত প্রার্থী জামায়াত নেতা অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার ও খুলনা-৬ আসনে বিএনপি প্রার্থী আবুল কালাম আজাদও নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন। নির্বাচনে ব্যাপক কারচুপির অভিযোগে তারা ভোট বর্জন করেন।
বরিশাল
বরিশাল-৪ আসনে ধানের শীষের প্রার্থী জে এম নুরুর রহমান জাহাঙ্গীর ভোট বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন। বরিশাল প্রেস ক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ভোটের দিনও আমার সব এজেন্টদের ভোটকেন্দ্র থেকে বের করে দিয়ে নৌকা মার্কায় সিল মারছে। এমন পরিস্থিতিতে আমি এই ভোট বর্জন করলাম।
বাগেরহাট
ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে যেতে পথে বাধা, ভোটের ফলের শিটে সই রেখে এজেন্টদের কেন্দ্র থেকে বের করে দেওয়ার মতো অভিযোগে ভোট বর্জন করেছেন বাগেরহাট-৪ আসনে জাতীয় পার্টির (জাপা) প্রার্থী সেমনাথ দে। রোববার (৩০ ডিসেম্বর) দুপুর ১টার দিকে তিনি নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন বলে জানানো হয়েছে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের ডেপুটি প্রেস সেক্রেটারি খন্দকার দেলোয়ার জালালীর সই করা এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে।
লক্ষ্মীপুর
লক্ষ্মীপুর-৩ আসনে ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী ভোট কারচুপির অভিযোগ অভিযোগে ভোট বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন। লক্ষ্মীপুরের গোডাউন রোডে নিজ বাসভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি অভিযোগ করেন, কেন্দ্র থেকে তার এজেন্টদের বের করে দেওয়া হয়েছে। এর মাধ্যমে ভোট ডাকাতি করা হচ্ছে। সে কারণে তিনি ভোট বর্জন করেছেন।
রাজশাহী
রাজশাহী-৪ (বাগমারা) আসনে ধানের শীষ প্রতীকে বিএনপি প্রার্থী আবু হেনা ভোট বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন। রোববার দুপুরে রাজশাহী মেট্রোপলিটন প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে তিনি বলেন, তার এলাকায় কেন্দ্র দখল করে জালভোটের উৎসব চলছে। নৌকার সমর্থকরা ধানের শীষের সমর্থকদের কেন্দ্রে ঢুকতে দিচ্ছে না। সাধারণ ভোটারদেরও জান-মালের নিরাপত্তা হুমকির মুখে। ভোটে থাকলে ব্যাপক হানাহানির ঘটনা ঘটবে বলে তিনি নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানান।
সিরাজগঞ্জ
সিরাজগঞ্জ জেলার ছয় আসনের মধ্যে পাঁচ আসনে ধানের শীষের প্রার্থী ভোট বর্জন করেছেন। রোববার দুপুরে জেলা বিএনপির নির্বাচন সমন্বয়ক হারুন অর রশিদ খান সাংবাদিকদের এ তথ্য জানিয়েছেন। প্রার্থীরা হলেন— সিরাজগঞ্জ-১ আসনের রুমানা রশিদ কনকচাঁপা, সিরাজগঞ্জ-২ আসনের রুমানা মাহমুদ, সিরাজগঞ্জ-৪ আসনের প্রার্থী মাওলানা রফিকুল ইসলাম, সিরাজগঞ্জ-৩ আব্দুল মান্নাত তালুকদার ও সিরাজগঞ্জ ৫- আসনে আমীরুল ইসলাম খান আলীম।
জয়পুরহাট
জয়পুরহাটের একটি আসনে বিএনপি ও অন্য একটি আসনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন। রোববার দুপুরে জাতীয় পার্টির জেলা কার্যালয়ে প্রেস ব্রিংফিংয়ে জয়পুরহাট-১ (সদর ও পাঁচবিবি) আসনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী আ স ম মোক্তাদির তিতাস এবং নিজ বাসায় জয়পুরহাট-২ (কালাই, ক্ষেতলাল ও আক্কেলপুর) আসনে বিএনপি প্রার্থী আবু ইউছুফ মো. খলিলুর রহমান এ ঘোষণা দেন। ভোটকেন্দ্র থেকে এজেন্টদের বের করে দেওয়াসহ বিভিন্ন অনিয়ম ও কারচুপির অভিযোগে তারা এই ঘোষণা দেন।
এ ছাড়াও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী কুমিল্লা-১১ আসনে সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের, পাবনা-৫ আসনে ইকবাল হোসেন, নীলফামারী-২ আসনে মনিরুজ্জামান মন্টু, নীলফামারী-৩ আসনে মোহাম্মদ আজিজুল ইসলাম, রাজবাড়ী-১ আসনে আলী নেওয়াজ মাহমুদ খৈয়াম, ঢাকা-১৭ আসনে আন্দালিভ রহমান পার্থ, ঠাকুরগাঁও-২ আসনে আব্দুল হাকিম, বাগেরহাট-৩ আসনে মোহাম্মদ আব্দুল ওয়াদুদ শেখ, দিনাজপুর-১ আসনে মোহাম্মদ আবু হানিফ, দিনাজপুর-৬ আসনে আনোয়ারুল ইসলাম, রংপুর-৫ আসনে অধ্যাপক গোলাম রব্বানী, গাইবান্ধা-১ আসনে মাজেদুর রহমান সরকার, সিরাজগঞ্জ-৪ আসনে রফিকুল ইসলাম খান, পাবনা-৫ আসনে ইকবাল হোসেন, ঝিনাইদহ-৩ আসনে অধ্যাপক মতিউর রহমান, যশোর-২ আসনে আবু সাঈদ মো. শাহাদৎ হোসেন, সাতক্ষীরা-২ আসনে আব্দুল খালেক, সাতক্ষীরা-৪ আসনে গাজী নজরুল ইসলাম, পিরোজপুর-১ আসনে শামীম সাঈদী, চট্টগ্রাম-১৫ আসনে এএনএম শামসুল ইসলাম, ঢাকা-১৫ আসনে শফিকুর রহমান, কক্সবাজার-২ আসনে হামিদুর রহমান আজাদ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ আসনে নূরুল ইসলাম বুলবুল, নাটোর-২ আসনে সাবিনা ইয়াসমিন, নাটোর-৩ আসনে মোহাম্মদ দাউদার মাহমুদ, পাবনা-৪ আসনে মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান, সিরাজগঞ্জ-১ আসনে রোমানা মোর্শেদ কনকচাঁপা, নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনে মো. আজহারুল ইসলাম মান্নান, যশোর-১ আসনে মো. মফিকুল হাসান তৃপ্তি, ময়মনসিংহ-৩ আসনে মো. ইকবাল হোসেন, ময়মনসিংহ-৫ আসনে মো. জাকির হোসেন, ময়মনসিংহ-৬ আসনে শামসউদ্দিন আহমেদ, ময়মনসিংহ-৯ আসনে খুররম খান চৌধুরী, ময়মনসিংহ-১১ আসনে ফখর উদ্দিন আহমেদ, ময়মনসিংহ-১ আসনে আফজাল এইচ খান, ময়মনসিংহ-১০ আসনে এএইচএম খালেকুজ্জামান, ময়মনসিংহ-১০ আসনে ২০ দলীয় জোট প্রার্থী সৈয়দ মাহমুদ মোর্শেদ, বাগেরহাট-৪ আসনে জাতীয় পার্টির সোমনাথ দে এবং বগুড়া-৪ আসনে মো. আশরাফুল হোসেন আলম স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন বর্জন করেছেন।
সারাবাংলা/এমআই/টিআর