ফল প্রত্যাখ্যান করে নতুন নির্বাচনের দাবি বিএনপির
৩১ ডিসেম্বর ২০১৮ ১৮:১৭
।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ।।
ঢাকা : একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ফল ‘সম্পূর্ণ’ প্রত্যাখ্যান করে অনতিবিলম্বে নির্দলীয় সরকারের অধীনে নতুন নির্বাচনের দাবি জানিয়েছে বিএনপি।
সোমবার (৩১ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠক শেষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
নির্বাচন পরবর্তী দলের করণীয়, দেশের সার্বিক পরিস্থিতি মূল্যায়ন ও কর্মসূচি নির্ধারণের বিষয়ে আলোচনা করতে স্থায়ী কমিটির এই বৈঠক ডাকা হয়।
তিনি বলেন, ‘আমাদের প্রধান দাবি হলো, এই নির্বাচন বাতিল করে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নতুন করে নির্বাচন দিতে হবে। কারণ, এই নির্বাচনের ফল আমরা সম্পূর্ণভাবে প্রত্যাখ্যান করছি। যত দ্রুত সম্ভব নিরপেক্ষ সরকারে অধীনে নতুন নির্বাচনের দাবি জানাচ্ছি।’
জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের যে ৭ জন সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন, তারা শপথ নেবেন কী না?— এমন প্রশ্নের জবাবে ফ্রন্টের মুখপাত্র মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘আমরা পুরো ফলই প্রত্যাখ্যান করেছি। এরপর প্রশ্ন আসছে কেন?’
তিনি বলেন, ‘এটা প্রমাণ হয়ে গেছে, দলীয় সরকারের অধীনে এ দেশে আর কোনো দিন নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে না। এবার এই সরকার নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে যোগসাজোস করে যে নির্বাচন অনুষ্ঠান করলেন, এটা বাংলাদেশের নির্বাচনের ইতিহাসে সবচেয়ে কলঙ্কজনক বলে আমি মনে করি। এই নির্বাচনে তরুণ ভোটারা পুরোপুরি হতাশ হয়েছেন। তারা তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেননি।’
‘এই নির্বাচন প্রমাণ করে যে, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ২০১৪ সালে যে নির্বাচন বর্জন করেছিল, সেটা সঠিক ছিল। অর্থাৎ আমরা যে কথা বরাবরই বলে আসছি, বাংলাদেশ দলীয় সরকারের অধীনে কোনোভাবেই নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব নয়’— বলেন মির্জা ফখরুল।
‘এজেন্ট না এলে আমি কী করব?’— প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নুরুল হুদার এমন বক্তব্যের জবাবে তিনি বলেন, ‘এজেন্ট না আসতে দিলে আমরা কী করব। এজেন্ট তো আপনারা আসতে দেননি। এই সরকার, তার রাষ্ট্রীয় যন্ত্র এবং নির্বাচন কমিশনের যোগসাজোসে আমাদের এজেন্টদের যেতে দেননি। যেখানে যেখানে গেছে, তাদের বের করে দেওয়া হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘এ নির্বাচন পুরোপুরিভাবে ইঞ্জিনিয়ারিং করা হয়েছে। এটা পূর্বপরিকল্পিত এবং সুপরিকল্পিত। এ কারণেই জনগণ তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেনি। তাদেরকে ভোটাধিকার থেকে পুরোপুরি বঞ্চিত করা হলো।’
এক প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘এখন দুইটা পথ আছে। এক হচ্ছে তাদেরকে (নির্বাচন কমিশন) লিগ্যালি ধরা, আরেক হচ্ছে আন্দোলনের মাধ্যমে ধরা। আমরা দুইটাই চেষ্টা করব।’
সারাদেশে বিএনপির ২১ হাজারের বেশি নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে অভিযোগ করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে তিল ধারনের ঠাঁই নেই। ঢাকার বাইরের কারাগারগুলোতেও একই অবস্থা। অবিলম্বে এসব বন্দীর মুক্তি এবং মামলা প্রত্যাহার করতে হবে।’
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ, লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মাহবুবুর রহমান, ড. মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ও আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
এদিকে সংবাদ সম্মেলন শেষে গুলশান কার্যালয়ে ২০ দলীয় জোটের শীর্ষ নেতারা বৈঠকে বসেন। এতে বিজেপির আন্দালিব রহমান পার্থ, বাংলাদেশ লেবার পার্টির ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, কল্যাণপার্টির মহাসচিব এম এম আমিনুর রহমানসহ অন্যরা যোগ দেন।
সারাবাংলা/এজেড/এসএনএন