Thursday 21 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

সেনা-বিমানবাহিনীর তৎপরতায় বাঁচলো পাহাড়ের এক প্রসূতির প্রাণ


৩১ ডিসেম্বর ২০১৮ ২১:২৪

।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ।।

চট্টগ্রাম ব্যুরো: বাংলাদেশ, ভারত ও মিয়ানমার- এই তিন দেশের সীমান্তবর্তী গ্রাম রাঙামাটি জেলার জুরাছড়ি উপজেলার বগাখালী। রাঙামাটি সদর থেকে সেই দুর্গম পাহাড়ি গ্রামে যেতে সময় লাগে সাতদিন। হাসপাতালের অভাবে সেই গ্রামে মরতে বসেছিলেন ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর এক প্রসূতি। সেইসময় তার পরিবারের সদস্যরা শরণাপন্ন হন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি)।

এই সীমান্তরক্ষী বাহিনীর আহ্বানে সাড়া দিয়ে সেনাবাহিনী ও বিমানবাহিনীর সদস্যরা হেলিকপ্টারে করে ওই প্রসূতি নারীকে চট্টগ্রামে এনে তার প্রাণ রক্ষা করেন। তবে বাঁচানো সম্ভব হয়নি তার গর্ভের সন্তানটিকে।

রোববার (৩০ ডিসেম্বর) দেশজুড়ে যখন ভোটের ডামাডোল চলছিল, তখন বগাখালী গ্রামের দয়াময় চাকমার স্ত্রী সোনাপতি চাকমা প্রসব বেদনায় কাতরাচ্ছিলেন।

জুরাছড়ি উপজেলার দুমদুম্যা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শান্তিরাজ চাকমা জানান, দয়াময়ের পরিবারের পক্ষ থেকে স্থানীয়ভাবে ডাকা হয়েছিল ধাত্রীকে। কিন্তু ধাত্রী প্রসব করাতে ব্যর্থ হন। মারা যায় গর্ভের সন্তানটি। সোনপতির জীবন নিয়েও শঙ্কা দেখা দেয়। যে কোন মুহূর্তে সোনাপতির মৃত্যু হবে, এই আশঙ্কাতেই কেটে যায় রাতটি।

সোমবার সকালে দয়াময়ের পরিবারের সদস্যরা বিজিবি’র স্থানীয় সীমান্ত চৌকিতে গিয়ে বিষয়টি খুলে বলেন। তখন বিজিবি’র পক্ষ থেকে সেনাবাহিনীর সহায়তা চাওয়া হয়। সেনাবাহিনী বিমানবাহিনীর সহায়তা চায়।

সোমবার (৩১ ডিসেম্বর) ভোরে চট্টগ্রামে বিমানবাহিনীর জহুরুল হক ঘাঁটি থেকে বিমানবাহিনীর একটি হেলিকপ্টার পৌঁছে জুরাছড়ির বগাখালী গ্রামে। হেলিকপ্টারে করে সোনাপতিকে এতে দুপুরে ভর্তি করা হয় চট্টগ্রাম সেনানিবাসের ভেতরে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে। সেখানে দীর্ঘসময় ধরে অস্ত্রোপচারের পর বিপদমুক্ত হয়েছেন সোনাপতি চাকমা।

বিজ্ঞাপন

সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালের সামনে কথা হয় ইউপির চেয়ারম্যান শান্তিরাজ চাকমার সঙ্গে। তিনি সারাবাংলাকে বলেন, ‘সোনাপতি আমার এলাকার মেয়ে। আমাদের এলাকায় ভাল কোনো হাসপাতাল না থাকায় তার গর্ভের সন্তানটিকে বাঁচাতে পারিনি। তবে সেনাবাহিনীর কারণে সোনাপতির জীবন রক্ষা পেয়েছে। আমরা যদি সেনাবাহিনীকে আগে জানাতাম, তাহলে দুজনকেই বাঁচানো যেত।’

খোঁজ নিয়ে জানা গেল, পার্বত্য চট্টগ্রামের বিভিন্ন দুর্গম এলাকা, যেখানে সাধারণ পৌঁছাতে দিনের পর দিন লেগে যায়, সেসব এলাকায় বসবাসকারীদের এই ধরনের সেবা নিয়মিত দেয় সেনাবাহিনী।

বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা ফুটবল দলের সদস্য চাথুইমা মারমা, লক্ষ্মীছড়ি থানার পুলিশ কনস্টেবল মংজয় চাকমাকে উন্নত চিকিৎসা দিয়েছে সেনাবাহিনী। সম্প্রতি খাগড়াছড়ির দুরছড়ি এলাকায় ডায়রিয়া দেখা দেয়। সেনাবাহিনীর সদস্যরা এলাকায় গিয়ে মানবিক সেবা দিয়ে অন্ততঃ ৩০ টি পরিবারের শতাধিক নারী-পুরুষ ও শিশুকে সুস্থ করেছেন।

এসব কারণেই বিপদে পড়লে ওইসব দুর্গম এলাকার মানুষ বিজিবি বা সেনাবাহিনীর কাছেই ছুটে যান।

সারাবাংলা/আরডি/এসএমএন

দুর্গম পাহাড় বাংলাদেশ সেনাবাহিনী বিমানবাহিনী হেলিকপ্টার

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর