‘যা পেয়েছেন তাই নিয়ে আসুন, সংসদে ইতিবাচক ভূমিকা রাখি’

।। সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট ।।

ঢাকা: একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর বিএনপি ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নেতাদের সংসদে ইতিবাচক ভূমিকা রাখার আহ্বান জানিয়েছেন ১৪ দলের মুখপাত্র ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোহাম্মদ নাসিম।

তিনি বলেন, যা পেয়েছেন তাই নিয়ে আসুন, আমরা রাজনীতি করে সংসদে ইতিবাচক ভূমিকা রাখি। মাথা গরম করে আপনাদের ক্ষতি হয়েছে। তাই আর মাথা গরম না করে ইতিবাচক রাজনীতিতে আসুন।

বুধবার (২ জানুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ১৪ দলের মতবিনিময় সভা শেষে তিনি এ কথা বলেন। এসময় একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মহাজোটের নিরঙ্কুশ জয়ে ভোটারসহ দেশের সব জনগণকে ১৪ দলের পক্ষ থেকে ধন্যবাদ জানান তিনি।

মোহাম্মদ নাসিম বলেন, ‘এই বিজয় গণতন্ত্রের বিজয়। এই বিজয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অবিস্মরণীয় নেতৃত্বের বিজয়। গত ১০ বছরে তিনি জঙ্গি দমন করেছেন, বিদ্যুৎ সমস্যার সমাধান করেছেন, অভূতপূর্ব উন্নয়ন করেছেন।

বিশ্ব নেতারাও একবাক্যে স্বাীকার করেছেন, এবারের নির্বাচন ইতিবাচক হয়েছে।’ এজন্য বিশ্ব নেতাদেরও ধন্যবাদ জানান তিনি।

১৪ দলের মুখপাত্র বলেন, ‘আমরা প্রতিশ্রুতি দিয়েছি, আমরা চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করেছি, বাংলার জনগণ প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আস্থা রেখেছে। আমরা অব্যশই তার নেতৃত্বে জনগণের এই আস্থার মর্যাদা দেবো। এই চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করে আমরা আগামী পাঁচ বছর পরে বিজয়ের লক্ষ্যে এগিয়ে যাব।’

নির্বাচনে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নির্বাচিত প্রার্থীদের শপথ না নেওয়ার ঘোষণা প্রসঙ্গে নাসিম বলেন, ‘তারা অনেক কথা বলেছেন, কিন্তু নিজেরাই কোনো কথা রাখেননি। তারা বলেছিলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে নির্বাচন করবেন না। এখন শপথ গ্রহণ করবেন না বলেছেন। আমি বিশ্বাস করি, তারা শপথ গ্রহণও করবেন।’

‘তাদের মাথা গরম না করে ইতিবাচক রাজনীতিতে তাদের আসা উচিত। মাথা গরম করে তাদের ক্ষতি হয়েছে। যা পেয়েছেন, তাই নিয়ে এখন আসুন রাজনীতি করি, কাজ করি,’— বলেন তিনি।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি মাত্র পাঁচটি আসনে জয় পেয়েছে— এ বিষয়ে ১৪ দলের প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে মোহাম্মদ নাসিম বলেন, ‘তারা মাঠে এসে খেলেছেন। জয়-পরাজয় যাই হোক না কেন, তাদের প্রতি আমাদের সবসময় শ্রদ্ধাবোধ আছে, সম্মান আছে। আমি বিশ্বাস করি, তারা পার্লামেন্টে থাকবেন এবং ইতিবাচক ভূমিকা রাখবেন।’ জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের পক্ষ থেকে পুনঃভোটের দাবিতে ইসিতে স্মারকলিপির কর্মসূচির বিষয়ে তিনি বলেন, এই নির্বাচন জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত হয়েছে। জনগণ প্রকাশ্যে ভোট দিয়েছে, সবাই দেখেছে। তাই তাদের এই দাবিটা হাস্যকর।

জামায়াতে ইসলামীর রাজনীতি নিষিদ্ধ করতে নতুন সরকার উদ্যোগ নেবে কি না— সে প্রশ্নের জবাবে নাসিম বলেন, এই নির্বাচনে স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি জামায়াতকে চূড়ান্তভাবে প্রত্যাখ্যান করেছে বাংলার জনগণ। জনগণই ওদের নিষিদ্ধ করে দিয়েছে। নিষিদ্ধ ঘোষণার কী আছে?

নতুন মন্ত্রিসভায় ১৪ দলের কতজন নেতার স্থান হবে— জানতে চাইলে এই জোটের ‍মুখপাত্র বলেন, এটা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এখতিয়ার। প্রধানমন্ত্রীকে আমরা পূর্ণ সমর্থন করি এবং তার নেতৃত্বে আছি ও থাকব। তার সিদ্ধান্ত নিয়ে আমাদের কোনো মন্তব্য নেই।

১৪ দলের মুখপাত্র মোহাম্মদ নাসিমের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি ও সমাজকল্যাণমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সভাপতি ও তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়া, গণতন্ত্রী পার্টির সাধারণ সম্পাদক শাহাদাত হোসেন।

আরও উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সদস্য এবং ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিষয়ক মন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, উপ-দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ, জাসদ (ইনু) সাধারণ সম্পাদক শিরীন আকতার, ওয়ার্কার্স পার্টির পলিটব্যুরো সদস্য আনিসুর রহমান মল্লিক, কমিউনিস্ট কেন্দ্রের আহ্বায়ক ডা. ওয়াজেদুল ইসলাম, যুগ্ম আহ্বায়ক অসিত বরণ রায়, বাসদের রেজাউর রশিদ খান, ন্যাপের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল হোসেনসহ অন্যরা।

সারাবাংলা/এনআর/টিআর

১৪ দল