Friday 27 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

রোহিঙ্গাদের দুঃখ শুনলেন পোপ


১ ডিসেম্বর ২০১৭ ১০:৪৯

বিশেষ প্রতিনিধি

রোমান ক্যাথলিক খ্রিস্টানদের ধর্মগুরু পোপ ফ্রান্সিস নারী ও শিশু মিলিয়ে ১৮ সদস্যের একটি রোহিঙ্গা প্রতিনিধি দলের সঙ্গে দেখা করে তাদের দুঃখের কথা জেনেছেন। ঢাকার আর্যবিশপ হলে শুক্রবার দুপুরে পোপ রোহিঙ্গা প্রতিনিধি দলটির সঙ্গে আলাপ করেন। এ সময় কারিতাসের দুইজন দোভাষী পোপ ও রোহিঙ্গা দলের মধ্যে আলাপের সেতুবন্ধন গড়ে দেন।

ঢাকার আর্যবিশপ হলে শুক্রবারের ওই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন এমন একজন সারাবাংলাকে জানান, ১৮ সদস্যের রোহিঙ্গা প্রতিনিধি দলের সঙ্গে শুক্রবার দুপুরে আলাপ করেন পোপ ফ্রান্সিস। মিয়ানমারে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর চলমান জাতিগত নিধনের বিস্তারিত ঘটনা পোপকে খুলে বলেন প্রতিনিধি দলটি। তারা কীভাবে, কোন পরিস্থিতিতে নিজেদের ঘর-বাড়ি ছেড়ে এসেছেন তা জানান।

পোপ নির্যাতনের কথা শুনে প্রতিনিধি দলটিকে আশ্বস্ত করেন যে, গোটা বিশ্ব তাদের পাশে রয়েছে। খুব শিগগিরই পরিস্থিতি রোহিঙ্গাদের অনূকুলে আসবে।

এ সময় একটি ঐতিহ্যবাহী নৃত্য পরিবেশন করা হয়। সবশেষে শান্তির উদ্দেশে বিশেষ প্রার্থনা করা হয়।

আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) এর ব্যবস্থাপনায় রোহিঙ্গা দলটি খ্রিস্টানদের ধর্মগুরুর সঙ্গে দেখা করেছেন বলে একাধিক সূত্র সারাবাংলাকে নিশ্চিত করেছে। ধর্মগুরুর সফরের সময়সূচিতে অবশ্য এ বিষয়টি উল্লেখ নেই।

বালুখালি রোহিঙ্গা ক্যাম্পের (এক) হেডম্যান ফয়েজ আহমেদ জানান, ঢাকায় পোপের সঙ্গে দেখা করার জন্য ক্যাম্প থেকে ১৮ জন রোহিঙ্গা সদস্যকে নির্বাচন করে ঢাকায় নিয়ে যান আইএম এর কর্মকর্তারা।

কক্সবাজার থানার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আফরুজুল হক টুটুল জানান, ১৮ সদস্যদের রোহিঙ্গা দলকে ঢাকায় পোপের সঙ্গে দেখার করার যাবতীয় ব্যবস্থাপনা আইওম এর কর্মকর্তারা করছেন।

বিজ্ঞাপন

পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী গণমাধ্যমকর্মীদের বলেন, ‘পোপ মিয়ানমারে যাওয়ার আগে রোহিঙ্গা বিষয়ে আমাদের সমর্থন জানিয়েছেন। ঢাকা সফরে তার মনোভাব আমরা আরো ভালোভাবে বুঝতে পারব। আশা করি, তিনি রোহিঙ্গা ইস্যুতে আমাদের পক্ষেই থাকবেন।’

বিদেশি সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, ক্যাথলিক ধর্মগুরু পোপ ফ্রান্সিস রোহিঙ্গা বিষয়ে স্পষ্ট মনোভাব ব্যক্ত করলেও মিয়ানমার সফরে তিনি রোহিঙ্গা শব্দটি উচ্চারণ করেননি। মিয়ানমারের সর্বোচ্চ নেতার সঙ্গে বৈঠকের পর পোপকে রোহিঙ্গা শব্দ এড়িয়ে যেতে লক্ষ করা গেছে। মূলত প্রতিবেশি দেশটিতে ক্যাথলিক সম্প্রদায়ের খ্রিস্টানদের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করেই পোপ ফ্রান্সিস রোহিঙ্গা শব্দ এড়িয়ে যান বলে বিশ্লেষকরা বলছেন।

এদিকে গেল আগস্টে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের রোহিঙ্গা জাতিগোষ্ঠীর ওপর জাতিগত নিধন শুরু করে দেশটির সেনাবাহিনী। তারপর থেকে প্রাণ বাঁচাতে ৭ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী পালিয়ে এসে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে।

পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম লন্ডন থেকে এক বার্তায় জানান, গতকাল পর্যন্ত বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া ৭ লাখ ২ হাজার ৩৯৭ জন রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে পরিচয় পত্র দেয়া হয়েছে। তারা যে মিয়ানমারের নাগরিক ওই পরিচয় পত্রে তার তথ্য প্রমাণ উল্লেখ রয়েছে।

সারাবাংলা/জেআইএল/একে/০১ ডিসেম্বর, ২০১৭

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর