হ্যাকিংয়ের শিকার জার্মানির রাজনীতিবিদেরা
৫ জানুয়ারি ২০১৯ ১৬:৩১
।। আন্তর্জাতিক ডেস্ক ।।
তথ্য চুরি ও ফাঁসের শিকার হয়েছেন জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মার্কেল সহ জার্মানির শতাধিক রাজনীতিবিদ, সাংবাদিক ও স্থানীয় অনেক তারকা। উগ্র ডানপন্থী দল এএফডি ব্যতীত সকল জার্মান রাজনৈতিক দল এই তথ্য ফাঁসের শিকার হয়েছে। খবর বিবিসির।
বার্লিন-ভিত্তিক রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম আরবিবি ইনফোরেডিও ও বিল্ড পত্রিকা অনুসারে, চুরি করা তথ্য প্রায় একমাস ধরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম টুইটারে প্রকাশ করেছে হ্যাকাররা। প্রকাশিত তথ্যের মধ্যে রাজনৈতিক নেতাদের মোবাইল ফোন নাম্বার, একান্ত ব্যক্তিগত তথ্য, ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ডের গোপনীয় তথ্য থেকে শুরু করে আর্থিক লেনদেনের তথ্যও ছড়িয়ে পড়েছে ইন্টারনেটে।
এই হ্যাকিংয়ের সঙ্গে কে বা কারা জড়িত সে বিষয়ে এখনো কিছু জানা যায়নি। তবে জার্মান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হর্স্ট সিহফার বলেন, এ ঘটনার পেছনে জড়িতদের খুঁজে বের করার চেষ্টা করা হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, হ্যাকিংয়ে জার্মান সংসদীয় বা সরকারী ব্যবস্থার গুরুতর ক্ষতি হওয়ার কোন প্রমাণ এখনো পাওয়া যায়নি।
আপাতদৃষ্টিতে দেখা যায়, হ্যামবার্গের একটি টুইটার একাউন্ট থেকে এই তথ্য প্রকাশিত হয়েছে।
শহরটির এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, তারা জার্মান রাজনীতিবিদদের তথ্য পাচার রোধ করতে এখন আইরিশ ডাটা প্রটেকশন কমিশনারের সঙ্গে কাজ করছে।
ক্ষতির পরিমাণ
হ্যাকিংয়ে ঠিক কী পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে সে বিষয়ে এখনো কোন সুনির্দিষ্ট তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে জার্মান বিচারমন্ত্রী কাতারিনা হামলাটিকে ‘গুরুতর’ বলে বর্ণনা করেছেন।
তিনি বলেন, যে বা যারাই এই কাজ করেছে তারা আমাদের গণতন্ত্র ও গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলির প্রতি আস্থা নষ্ট করতে চায়।
সরকারি মুখপাত্র মার্টিনা ফিয়েটজ বলেন, সাইবার হামলায় চ্যান্সেলরের কার্যালয়ের কোন গুরুত্বপূর্ণ তথ্য প্রকাশ পায় নি। তবে হামলায় জার্মান মন্ত্রী, ইউরো মন্ত্রী ও অঙ্গরাজ্যের মন্ত্রীদের তথ্য চুরি হয়েছে।
ফিয়েটজ বলেন, এই হামলার পেছনে সাইবার হ্যাকাররা জড়িত কিনা সে বিষয়ে এখনো নিশ্চিত নয় সরকার। স্থানীয় গণমাধ্যমের কিছু খবর অনুসারে, এটা কোন একক হামলাকারীর কাজও হতে পারে।
টুইটারের @অরবিট নামের এক একাউন্ট থেকে ১ ডিসেম্বর-২৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত চুরি হওয়া তথ্যগুলো ধীরে ধীরে প্রকাশ করা হয়। কিন্তু বৃহস্পতিবারের এই তথ্যফাঁসের ঘটনা কর্তৃপক্ষের নজরে আসেনি। ওই একাউন্টের অনুসারীর সংখ্যা ১৭ হাজার। একাউন্টটি বর্তমানে বাতিল করে দেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, তথ্য চুরির ঘটনা জার্মানিতে এবারই প্রথম নয়। ২০১৫ সালে জার্মান পার্লামেন্টের বুন্ডেস্ট্যাগ কম্পিউটার থেকে তথ্যচুরির ঘটনা ঘটে। গত বছরও সরকারি আইটি নেটওয়ার্ক সাইবার হামলার শিকার হয়।
যুক্তরাজ্য-ভিত্তিক বিশেষজ্ঞ গ্রাহাম ক্লুলে বলেন, সাম্প্রতিক এই হামলা দেখে মনে হচ্ছে একটি সংঘবদ্ধ চক্রের অনেক সময় ধরে করা পরিকল্পনা যেখানে এই হ্যাকিং কোনভাবেই আর্থিক কোন লাভের জন্যে না।এটা করা হয়েছে শুধুমাত্র জার্মান সমাজকে অস্থিতিশীল করে তোলার জন্যে।
সারাবাংলা/এসবি/ আরএ