শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়নের উদ্যোগ
৬ জানুয়ারি ২০১৯ ০৮:০০
।। জোসনা জামান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট ।।
ঢাকা: সিলেট শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়নের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। ফলে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিগত শিক্ষা সম্প্রসারণের মাধ্যমে দক্ষ মানবসম্পদ গড়ে তোলা সম্ভব হবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্ট। এজন্য ‘শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকতর উন্নয়ন (দ্বিতীয় পর্যায়)’ নামের একটি প্রকল্প প্রস্তাব করা হয়েছে পরিকল্পনা কমিশনে।
প্রকল্পটি বাস্তবায়নে খরচ ধরা হয়েছে ৯৯১ কোটি ১৩ লাখ টাকা। সম্পূর্ণ সরকারি তহবিলের অর্থে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের কথা। গত ৩ ডিসেম্বর প্রকল্পটি নিয়ে পরিকল্পনা কমিশনে প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভা অনুষ্ঠিত হয়। ২০ ডিসেম্বর জারি করা হয়েছে সভার কার্যবিবরণী। সেই কার্যবিবরণী সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
পরিকল্পনা কমিশনের একাধিক কর্মকর্তা সারাবাংলাকে জানান, পিইসি সভায় প্রকল্প প্রস্তাব বিষয়ে ব্যাপক আলোচনা হয়েছে। পরবর্তীকালে পরিকল্পনা কমিশনের পক্ষ থেকে যেসব সুপারিশ করা হয়েছে সেগুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে, প্রকল্পের সম্ভাব্যতা যাচাই বাছাইয়ের কাজ প্রথাগত কাঠামো অনুসরণ করে করা হয়নি। ফলে সম্ভাব্যতা যাচাই প্রতিবেদনটিতে প্রয়োজনীয় তথ্যাদি সন্নিবেশ করতে বলা হয়েছে। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পূর্ণাঙ্গ মাস্টারপ্লানে চলমান প্রকল্পের আওতায় ইতোমধ্যেই যেসব কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে এবং প্রস্তাবিত প্রকল্পের আওতায় যেসব কাজ সম্পন্ন করা হবে তা স্পষ্টভাবে উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবে (ডিপিপি) উল্লেখ করতে বলা হয়েছে। সেই সঙ্গে প্রকল্প এলাকায় ভূমিকম্পের ঝুঁকি থাকায় সুউচ্চ ভবন নির্মাণ করা সঠিক হবে কি-না অর্থবা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় যেসব টিলা বা পাহাড় রয়েছে তা ক্ষতিগ্রস্ত হবে কি-না তার বিস্তারিত ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে। পাশাপাশি প্রকল্পের আওতায় প্রস্তাবিত বিভিন্ন খরচের বিষয়েও জানতে চাওয়া হয়।
সূত্র জানায়, শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে প্রস্তাবিত প্রকল্পটির প্রক্রিয়াকরণ শেষে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় অনুমোদন পেলে চলতি মাস থেকে শুরু হয়ে ২০২২ সালের জুনের মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে। এটি বাস্তবায়ন করবে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন ও শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ যৌথভাবে।
প্রকল্পের প্রস্তাবনায় বলা হয়েছে, ১৯৮৬ সালের ২৫ আগস্ট দেশের প্রথম বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ভিত্তিক বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, সিলেট স্থাপনের আদেশ জারি করা হয়। এটি ১৯৮৭ সালের ১৮ মার্চ জাতীয় সংসদে অনুমোদন লাভ করে। পরবর্তীতে ১৯৯১ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি পদার্থ বিজ্ঞান, রসায়ন বিজ্ঞান ও অর্থনীতি বিষয়ে মোট ১০৫ জন শিক্ষার্থী ও ১৩ জন শিক্ষক নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম শুরু হয়।
বর্তমানে এ বিশ্ববিদ্যালয় ৬টি অনুষদের অধীন ২৭টি বিভাগ ও দুটি ইনস্টিটিউটে প্রায় ৯ হাজার ৯০৫ জন শিক্ষার্থী অধ্যয়ন করছে। এছাড়া ৪৮৭ জন শিক্ষক কর্মরত আছেন। শিক্ষার্থীর সংখ্যা ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ অবস্থায় প্রয়োজনীয় অবকাঠামো উন্নয়নের মাধ্যমে উচ্চ শিক্ষার সকল প্রকার সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধির জন্য শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকতর উন্নয়ন (২য় পর্যায়) নামের প্রকল্পটি প্রস্তাব করা হয়েছে।
সূত্র জানায়, ইতোমধ্যেই শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকতর উন্নয়ন নামের একটি প্রকল্প চলমান রয়েছে। যার মেয়াদ ২০১৭ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২০ সালের জুন পর্যন্ত রয়েছে। এ প্রকল্পটি বাস্তবায়নে খরচ হচ্ছে ২০০ কোটি ৩৮ লাখ টাকা। এমতবস্তায় নতুন করে আর একটি প্রকল্প গ্রহণের যৌক্তিকতা নিয়ে পিইসি সভায় আলোচনা করা হয়। পরবর্তীতে নতুন প্রকল্প গ্রহণের যৌক্তিকতা এবং চলমান প্রকল্পের বিস্তারিত তথ্য আর্থিক ও বাস্তব অগ্রগতিসহ উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবে (ডিপিপি) উল্লেখ করার বিষয়ে ঐক্যমত পোষণ করা হয়।
এছাড়া চলমান প্রকল্পের আওতায় আবাসন সুবিধা, একাডেমিক সুবিধাসহ অন্যান্য সুবিধা কতটুকু প্রদান করা হয়েছে এবং নতুন প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে এসব সুবিধাদি কতটুকু বৃদ্ধি পাবে তা বিস্তারিতভাবে উল্লেখ করতে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগকে বলা হয়েছে।
সারাবাংলা/এমআই/এসআই